‘বিশাল হৃদয়’ গ্যাব্রিয়েল ও হোল্ডারের ‘স্পেশাল’ জয়

ইংল্যান্ড সফরের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল দলে ছিলেন না শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। চোটের কারণে পুনর্বাসনে ছিলেন এই ফাস্ট বোলার। পরে ফিটনেসে নাটকীয়ভাবে উন্নতি হওয়ায় জায়গা পেয়ে যান দলে। সেই তিনিই প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্দান্ত জয়ের নায়ক! ম্যাচ সেরা গ্যাব্রিয়েলকে তাই স্তুতির জোয়ারে ভাসিয়েছেন জেসন হোল্ডার। এই জয়টিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক বলছেন বিশেষ কিছু।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 July 2020, 05:25 AM
Updated : 13 July 2020, 05:25 AM

তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে সাউথ্যাম্পটনে রোববার ইংল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে ৪টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছেন গ্যাব্রিয়েল।

ম্যাচ শেষে হোল্ডার বললেন, চোটের সঙ্গে লড়াই জয়ের পর মাঠের সাফল্যের জন্য মুখিয়ে ছিলেন গ্যাব্রিয়েল।

“ শ্যানন এই ম্যাচে যা করেছে, মোটেও বিস্ময়কর নয়। সে এমন একজন, যে কখনোই হাল ছাড়ে না। বিশাল হৃদয় এক ক্রিকেটার সে। অনেক কিছুর ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। এই সাফল্য পেতে সে মরিয়া ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে শরীর তার কথা শোনেনি। কিন্তু সে ফিট হয়ে উঠেছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে গতিময় ও ভালো বোলিং করছে, এটা দেখা দারুণ ব্যাপার।”

“ এই সাফল্যের সবটুকু তার প্রাপ্য। শ্যাননের জন্য সত্যিই আমি খুবই খুশি। আমি জানি, কতকিছুর ভেতর দিয়ে তাকে যেতে হয়েছে। তার পুনবার্সনের সময় আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। মাঝেমধ্যে সে একটু হতাশ হয়ে উঠছিল যে প্রত্যাশিত উন্নতি হচ্ছে না। কিন্তু লড়াই চালিয়ে গেছে। আমরা সবাই জানি, শ্যানন ফিট থাকলে কতটা কার্যকর। এই ম্যাচেও সেই প্রমাণ সে দিয়েছে।”

হোল্ডারের চোখে, ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে চতুর্থ দিনের শেষ ঘণ্টা। বেন স্টোকস ও জ্যাক ক্রলির জুটিতে একসময় ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ৩ উইকটে ২৪৯। ইংলিশরা সেসময় ৭ উইকেট অক্ষত রেখে ১৩৫ রানে এগিয়ে। ম্যাচ এগোচ্ছিল ড্রয়ের পথে। কিন্তু শেষ বেলায় পাল্টে যায় চিত্র। ইংলিশ অধিনায়ক স্টোকসকে ফিরিয়ে ৯৮ রানের জুটি ভাঙেন হোল্ডার। এরপর গ্যাব্রিয়েল ও আলজারি জোসেফ মিলে তুলে নেন আরও দুটি করে উইকেট। ৩০ রানের মধ্যে ইংল্যান্ড হারায় ৫ উইকেট।

হোল্ডারের মতে, ওখানেই ম্যাচ হেলে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিকে।

“ দীর্ঘ একটি দিন ছিল, অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তুমুল লড়াইয়ের দিন ছিল আমাদের জন্য, একদম শেষ ভাগে দিনটি আমাদের পক্ষে চলে আসে। এটিকে আমি সেরা দিন বলছি কারণ, যতবারই বোলারদের বলেছি ঝাঁপিয়ে পড়তে, কেউ না করেনি বা বলেনি যে সে ক্লান্ত। সবাই নিজেকে উজার করে দিয়েছে।”

স্টোকস ও ক্রলি আউট হওয়ার পরই দারুণ কিছুর গন্ধ পেতে শুরু করেছিলেন, বললেন হোল্ডার।

“ স্টোকস ও জ্যাক (ক্রলি) যখন ব্যাট করছিল, মনে হচ্ছিল আমাদের জয়ের সম্ভাবনা কম। আমরা জানতাম, ওখান থেকে আর ম্যাচ হারছি না। কিন্ত আমরা শুধু হার এড়ানো নয়, জিততে চেয়েছি। জানতাম, এই জয় আমাদের জন্য কতটা জরুরি। এই দিনটায় আমাদের প্রচেষ্টা দেখিয়েছি, তা আমার দেখা এই দলের সেরা। শুধু বোলাররাই নয়, ফিল্ডাররাও নিজেদের সর্বস্ব দিয়েছে। দিনজুড়েই সবাই প্রাণবন্ত ছিল।”

“ওই দুই উইকেট পড়ার পরই আমি জানতাম, স্পেশাল কিছু আমাদের অপেক্ষায়। এরপর ব্যাপারটি ছিল স্রেফ নিজেদের কাজটুকু করা।”

ইংল্যান্ডে গত সফরেও একটি টেস্টে অসাধারণ জয় পেয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ইনিংসে তিনশর বেশি রান তাড়া করে জিতেছিল তারা। দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন শেই হোপ। তবে হোল্ডার বললেন, এবারের জয় আলাদা কিছু।

“ এটা বিরাট, বিশাল এক জয়। ইংল্যান্ডে এসে ইংল্যান্ডকে হারানো সহজ কিছু নয়। ২০১৭ সালেও আমরা ওদেরকে এক ম্যাচে হারিয়েছিলাম, তাই স্বাদটা জানি। তবে এরপর অনেক কিছুই বদলে গেছে। নিজেদের মাঠে ইংল্যান্ড অনেক শক্তিশালী। সিরিজটি এভাবে শুরু করতে পারা তাই আমাদের জন্য আশা জাগানিয়া। নিজের পারফরম্যান্সে আমরা গর্বিত।”