মুশফিকরাও অনেক সময় উজ্জীবিত করেন কোহলিকে

রান তাড়ার তাড়না থাকে। দলকে জেতানোর তাগিদ কাজ করে। অনেক সময় তাতিয়ে দেয় প্রতিপক্ষও! বিরাট কোহলি বলছেন, উইকেটকিপারদের স্লেজিং অনেক সময় বাড়তি প্রেরণা হিসেবে কাজ করে তার মধ্যে। উদাহরণ দিয়েছেন মুশফিকুর রহিমকে দিয়ে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2020, 05:46 PM
Updated : 18 May 2020, 06:28 PM

তামিম ইকবালের নিয়মিত ফেইসবুক শোতে সোমবার রাতের অতিথি ছিলেন বিরাট কোহলি। ভারতীয় অধিনায়ক সেখানেই শুনিয়েছেন রান তাড়ায় এতটা দক্ষ হয়ে ওঠার গল্প।

রান তাড়ার ক্ষেত্রে কোহলিকে ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বকালের সেরা বলে মনে করেন অনেকেই। রান তাড়ায় রেকর্ড ২৬টি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি, দুইয়ে থাকা শচিন টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরি এখানে ১৭টি। ওয়ানডেতে কোহলির ক্যারিয়ার ব্যাটিং গড় ৫৯, কিন্তু রান তাড়ায় গড় ৬৮।

পরে ব্যাট করে ওই ২৬ সেঞ্চুরির ২২টিতেই জিতিয়েছেন দলকে। রান তাড়ায় দলের জয়ের ম্যাচে কোহলির গড় ৯৬!

রান তাড়ার মতো কঠিন কাজে কোহলি এতটা পারদর্শী হয়ে উঠলেন কিভাবে, তামিম জানতে চেয়েছিলেন সেটি। কোহলি শুরুটা করলেন একটু মজা করেই।

“মেন্টাল প্রসেস যথেষ্ট সিম্পল থাকে। কখনও কখনও তো মুশফিকরাও এক্ষেত্রে সহায়তা করে, স্টাম্পের পেছন থেকে কিছু শোনায়, তাতে আমি আরও অনুপ্রাণিত হয়ে উঠি।”

এরপর কোহলি শুনিয়েছেন নিজের জীবনের কথা। ছেলেবেলা থেকেই নাকি তার ভালো লাগত রান তাড়ার কথা ভাবতে।

“এই কথাটি আমি অনেককে বলি। তরুণদের সঙ্গে কথা বলার সময় বলি। আত্মবিশ্বাসটা থাকতে হবে যে এটা আমি করতে পারব। ছেলেবেলায় যখন টিভিতে ম্যাচ দেখতাম, অনেক সময় ভারত হারত রান তাড়ায়, রাতে বিছানায় যাওয়ার সময় আমার এই অনুভূতি হতো যে আমি হলে এই ম্যাচ জিতিয়ে দিতাম। সত্যিই, অমন স্বপ্নই দেখতাম!”

“এখন যখন ওই পরিস্থিতিটা আসে, আমার ভেতরের সেই তাড়নাটা জেগে ওঠে। আমি জেতাতে পারি, সেই অনুভূতিটা কাজ করতে শুরু করে।”

কোহলি জানালেন, রান তাড়ার ব্যাপারটিকে বোঝা হিসেবে না দেখে উল্টো তিনি উপভোগ করেন।

“রান তাড়া এমন একটি ব্যাপার, যেখানে জানা থাকে লক্ষ্য কত এবং সেটি অর্জন করতে কী কী করতে হবে। আমার মতে, এটির চেয়ে স্পষ্ট চিত্র আর কিছু নেই। অন্যরা সেই পরিস্থিতি কিভাবে দেখবে, সেটা তাদের ব্যাপার। আমি এই পরিস্থিতিকে কখনও চাপ হিসেবে দেখি না, সুযোগ হিসেবে নেই যে জেতাতে হবে। আমরা জেতার জন্যই যাই, দলের জয়ই সবচেয়ে জরুরি। আর এখানেই সুযোগ যে আমি অপরাজিত থাকতে পারি।”

লক্ষ্য যদি অনেক বড়ও হয়, তবু ভড়কে যান না বলে জানালেন কোহলি।

“৩৭০-৩৮০ রান লক্ষ্য হলেও আমার কখনও মনে হয় না যে করা সম্ভব নয়। ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোবার্টের একটি ম্যাচের কথা মনে পড়ে। ৩২১ ছিল লক্ষ্য, ফাইনালে কোয়ালিফাই করার জন্য আমাদের ৪০ ওভারে করতে হতো সেটা। মাঝবিরতিতে সুরেশ রায়না ও অন্য কারও সঙ্গে আমি আলোচনা করছিলাম যে, এই খেলাকে আমরা ২০ ওভারের দুটি ইনিংস হিসেবে নিতে পারি। ৪০ ওভারের কথা ভাবলে অনেক কঠিন মনে হয়, সেটা দেখারই দরকার নেই। দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হিসেবে নেব।”

“তো এরকম পথ আছে অনেক। পরিস্থিতি বিচার করে খেলতে হবে। পরিস্থিতিকে বিচার করার সামর্থ্য যতটা, সেটিই ঠিক করে দেবে ব্যাটিং কেমন হবে। আমার জন্য এটা সহজাতভাবেই আসে। কখনও কখনও প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। তবে বেশির ভাগ সময় সহজাতভাবেই আসে।”