'দিকহারা' বিগ ব্যাশকে পথ দেখালেন ওয়াটসন

দিন দিন যেন আবেদন কমছে বিগ ব্যাশ লিগের। এক সময় বেশ সাড়া জাগানো টুর্নামেন্টটিকে শেন ওয়াটসন এখন দেখছেন আইপিএল, পিএসএলের পেছনে। ঘাটতির জায়গাগুলো তুলে ধরে অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার দেখালেন এগিয়ে যাওয়ার পথ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2020, 04:23 PM
Updated : 14 May 2020, 04:29 PM

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন কবেই। অস্ট্রেলিয়ার ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট বিগ ব্যাশ থেকেও অবসর নিয়েছেন। তবে বিশ্বের অন্য অনেক দেশের টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে খেলে যাচ্ছেন।

সেই অভিজ্ঞতা থেকে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ওয়াটসনের উপলব্ধি, বিগ ব্যাশে ক্রিকেটের মানের সঙ্গে আপোস করা হচ্ছে। নিজের ব্লগ টি-টোয়েন্টি স্টার্সে লিখেছেন, চাকচিক্য ও রমরমা আয়োজন থাকলেও আইপিএল, পিএসএল ক্রিকেটের মান ধরে রেখে উন্নতি করছে। এখানে সঠিক পথে নেই বিগ ব্যাশ।

“অনেকগুলো সর্তক সংকেত…খুব দুঃখজনকভাবে সেগুলো ফলতে শুরু করেছে। আমি খুব ভালো করেই জানি, বিগ ব্যাশে যে মানের ক্রিকেট খেলা হয় বিশ্বের বেশ কিছু টুর্নামেন্টের চেয়ে তা পিছিয়ে।”

“আইপিএল ও পিএসএলে সবার আগে ক্রিকেটের মান। তারা জানে, যদি সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করা যায়, তাহলে টুর্নামেন্টের স্থায়ীত্ব ও বাণিজ্যিক উন্নতি, সাফল্য আপনাআপনিই হবে। ভুল বুঝবেন না আমাকে, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেটের পাশাপাশি অন্য বিষয়গুলোও সেখানে আছে। চাকচিক্য, গ্লামারের আয়োজন থাকে ম্যাচের আগে-পরে। এই সব আয়োজন ক্রিকেটারদের সেরাটা দেওয়ার সামর্থ্যকে প্রভাবিত করে খুব কমই। এই জায়গায় বিগ ব্যাশ সত্যিই পথ হারিয়েছে।”

আট দল নিয়ে আয়োজিত বিগ ব্যাশে ২০১৭-১৮ মৌসুম থেকে গ্রুপ পর্বে ম্যাচের সংখ্যা বাড়ানো হয় প্রায় দ্বিগুন। ৩২ ম্যাচের বদলে করা হয়েছে ৫৬ ম্যাচ। ফল হয়েছে নেতিবাচক। ২০১৬-১৭ মৌসুম পর্যন্ত গড়ে ৩০ হাজার দর্শক মাঠে এলেও ২০১৯-২০ মৌসুমে তা কমে দাঁড়ায় ১৮ হাজারে।

মাঝরাত পর্যন্ত খেলা থাকায় স্কুলগামী বাচ্চা আছে এমন অনেক পরিবারই ততক্ষণ পর্যন্ত খেলা দেখায় আগ্রহী হয় না। ওয়াটসন এই ব্যাপারগুলো নিয়ে গভীরভাবে ভাবার প্রয়োজনীয়তা দেখেন।

“মাঠে সমর্থকদের সংখ্যা কমছে, এটা প্রথমে বুঝতে হবে। মানুষের নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ও সময় থাকে খেলা দেখার জন্য। যখন ৫টি হোম ম্যাচ ছিল, আমি নিশ্চিত যে তারা আসার জন্য প্রস্তুত ছিল। এখন ৭টি হোম ম্যাচ, দেখার জন্য মানুষকে খুব হিসাব করে ম্যাচ নির্বাচন করতে হচ্ছে।”

টুর্নামেন্টের জনপ্রিয়তা বাড়াতে খেলার মাঝেই ক্রিকেটারদের সঙ্গে ধারাভাষ্যকারদের কথা বলার ব্যবস্থা রেখেছে বিগ ব্যাশ। এতে হিতে বিপরীত হচ্ছে বলে মনে করেন ওয়াটসন। এর ফলে ক্রিকেট হারাচ্ছে মান, অধিনায়ক দিতে পারছেন না মনোযোগ, তরুণ ক্রিকেটাররা হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত।

প্রতি দলে একজন বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর নিয়ম বিগ ব্যাশে। এ ক্ষেত্রে অন্য টুর্নামেন্টগুলোকে অনুসরণের পরামর্শ ওয়াটসনের।

“অন্যান্য টুর্নামেন্টে তাদের দেশের আন্তর্জাতিক তারকা ক্রিকেটার ছাড়াও বিদেশি চার জন ক্রিকেটার খেলে প্রতি দলে। যা অসাধারণ ক্রিকেট খেলা ও দেখার সুযোগ তৈরি করে।”

টুর্নামেন্টের সময় সূচি নিয়েও আপত্তি আছে ওয়াটসনের। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৫৯ টেস্ট, ১৯০ ওয়ানডে ও ৫৮ টি-টোয়েন্টি খেলা ওয়াটসন সমালোচনা করেছেন বিগ ব্যাশের পিচের মান নিয়েও।