‘ফিনিশার’ বেভানের অপরাজিত ফিফটি

১ জানুয়ারি, ১৯৯৬। সিডনিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৭৩ রান তাড়ায় থরহরি কম্পমান অস্ট্রেলিয়া। কার্টলি অ্যামব্রোস ও ওটিস গিবসনের ছোবলে ৩৮ রানেই নেই ৬ উইকেট। ক্যারিবিয়ানরা পাচ্ছিলেন জয়ের সুবাস। কিন্তু প্রতিপক্ষের একজনের মনে ছিল যে অদম্য প্রয়াস! ইস্পাত-কঠিন দৃঢ়তা আর বরফ শীতল মানসিকতায় অস্ট্রেলিয়াকে রোমাঞ্চকর জয় এনে দিয়েছিলেন মাইকেল বেভান। ওয়ানডে ক্রিকেটের অভিধানে ‘ফিনিশার’ নামক শব্দটির জায়গা করে নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু সেদিন থেকে।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2020, 04:32 AM
Updated : 8 May 2020, 10:59 AM

সময়ের সঙ্গে বেভান ও ফিনিশার হয়ে উঠেছে যেন প্রতিশব্দ। ওয়ানডে ক্যারিয়ার যেদিন থামল তার, ব্যাটিং গড় ৫৩.৫৮। সেই সময়ে তা অবিশ্বাস্য ও চোখধাঁধানো এক সংখ্যা। পঞ্চাশ ছাড়ানো গড়ে রান করে চমকে দেওয়া বেভান এবার জীবনের পথচলায় পূর্ণ করলেন পঞ্চাশ।

১৯৭০ সালের ৮ মে বেভানের জন্ম অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায়। ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ১৯৯৪ সালের এপ্রিলে। এই সংস্করণেই পরে হয়ে উঠেছেন অমর। একটি ধারার তিনি অগ্রপথিক।

চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় ম্যাচ শেষ করে আসা, নিজ দলের মিইয়ে আসা প্রত্যাশাকে জাগিয়ে তোলা, হাল না ছেড়ে প্রতিপক্ষের মুঠো থেকে জয় ছিনিয়ে আনা, এই কঠিন কাজগুলিই বেভান করতেন অসাধারণ ধারাবাহিকতা আর অনায়াস দক্ষতায়।

তার মস্তিষ্ক ছিল যেন ক্যালকুলেটর, ব্যাট একান্ত বিশ্বস্ত সঙ্গী। ২২ গজের খাতায় নিখুঁত সমীকরণে কষতেন ম্যাচ জয়ের অঙ্ক। অসাধারণ ছিল রানিং বিটুউইন দা উইকেট, ফিল্ডারদের ফাঁক গলে এক-দুই রান নিতে ছিল না জুড়ি। আর যখন প্রয়োজন, বাউন্ডারিও আদায় করে নিতেন ঠিক!

ওয়ানডে ব্যাটিং তার ছোঁয়ায় পেয়েছিল নতুন এক সৌন্দর্য। ওয়ানডের রোমাঞ্চে যোগ হয়েছিল উত্তেজনার নতুন ঢেউ।

আলো ঝলমলে ওয়ানডে ক্যারিয়ার

পরিসংখ্যানই তার গ্রেটনেস ফুটিয়ে তুলতে যথেষ্ট। ২৩২ ওয়ানডেতে ৫৩.৫৮ গড়ে ৬ হাজার ৯১২ রান। অস্ট্রেলিয়াকে ১৯৯৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে তোলা,  ১৯৯৯ ও ২০০৩ বিশ্বকাপে শিরোপা জেতানোয় বড় অবদান। দলের জয়ের ম্যাচে গড় ৬৫.২৪। ২৩টি টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছেন, গড় ৭৩!

আগে ব্যাট করে হোক বা পরে, গড় পঞ্চাশের ওপরে। ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০০৪ সালে। ক্যারিয়ারে অন্তত ৫০০ রান করেছেন, এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তখন ৪৭ গড়ের বেশি ছিল ওয়ানডে ইতিহাসে একমাত্র তারই।

তবে পরিসংখ্যানে লেখা নেই, ভরসার কতটা প্রতীক ছিলেন বেভান। পরিসংখ্যানে লেখা নেই, তিনি উইকেট থাকা মানে ছিল, দলের চরম বাজে অবস্থায়ও ড্রেসিং রুমের আশা জিইয়ে থাকা আর প্রতিপক্ষের শঙ্কা টিকে থাকা।

লেখার শুরুতে যে ম্যাচের কথা বলা হয়েছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেদিন বেভান কাজ সেরেছিলেন পল রাইফেল, শেন ওয়ার্ন ও গ্লেন ম্যাকগ্রার মতো বোলারদের সঙ্গে নিয়ে। জয়ের জন্য শেষ বলে প্রয়োজন ছিল চার। রজার হার্পারের মাথার ওপর দিয়ে বল সীমানায় পাঠিয়ে বেভান অপরাজিত ছিলেন ৮৮ বলে ৭৮ রানে।  

খেলা শেষ করে আসার প্রতি তার ঝোঁক অবশ্য ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই দেখিয়ে আসছিলেন বেভান। ওই ম্যাচের আগে ১৬ ইনিংস খেলে ৮টিতেই ছিলেন অপরাজিত। কয়েকটি ছিল ছোট বা মাঝারি কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। তবে সিডনিতে ক্যারিবিয়ানদের হারিয়ে দেওয়া সেই ইনিংস দিয়েই সত্যিকার অর্থে তাকে নিয়ে চর্চার শুরু।

অনেকে গোটা ক্যারিয়ারে অমন ইনিংস খেলতে পারেন দুই-একটা। বেভান এমন ইনিংস খেলাকেই পরিণত করেছিলেন অভ্যাসে। দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন বারবার।

২৯ জানুয়ারি, ২০০২। নিউ জিল্যান্ডের ২৪৫ রান তাড়ায় ৮২ রানে নেই অস্ট্রেলিয়ার ৬ উইকেট। বেভান যথারীতি হয়ে উঠলেন ত্রাতা। দলের টালমাটাল তরী জয়ের বন্দরে ভেড়ালেন অপরাজিত সেঞ্চুরিতে। ৯৫ বলে ১০২ রানের ইনিংসে চার ছিল কেবল ৭টি। ওয়ানডে ব্যাটিংকে এভাবেই নতুন মাত্রা দিয়েছিলেন তিনি। তাসমান সাগরের ওপারের দেশের বিপক্ষে এই ইনিংস তার খুব প্রিয়।

২০০৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংসটাই বা কে ভুলতে পারে! ২০৫ রান তাড়ায় ১৩৫ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে হারের প্রহর গুণছিল অস্ট্রেলিয়া। বেভান জিতিয়ে দেন অপরাজিত ৭৪ রানের ইনিংসে। কিংবা ওই টুর্নামেন্টেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংসটি? ৮৪ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে কাঁপছিল অস্ট্রেলিয়া। বেভান ও অ্যান্ডি বিকেলের ফিফটি দলকে পারা করায় দুইশ। সেই স্কোরে পরে ধরা দেয় বড় জয়।

এসব ইনিংসই তার ক্যারিয়ারের ‘ট্রেডমার্ক’, কত খেলেছেন, ইয়ত্তা নেই। কীভাবে জয় করতেন চাপের সময়গুলো, বলেছিলেন নিজেই।

“আমি কখনও স্নায়ু চাপে ভুগতাম না। কারণ, এই সময়গুলোয় হারানোর কিছু ছিল না। যখন জয়ের কাছে যেতাম আর আমাদের হারানোর মত কিছু থাকত, তখনই কেবল কিছুটা চাপ অনুভব করতাম। শেষ পাঁচ-সাত ওভারের আগে আমি কখনও চাপ অনুভব করতাম না।”

দলকে জেতাতে না পারলেও তার আরেকটি ইনিংস কখনোই ভুলবার নয়। ২০০০ সালের এপ্রিলে ঢাকায় এশিয়া একাদশের বিপক্ষে রেস্ট অব দা ওয়ার্ল্ডের হয়ে সেই অতিমানবীয় ইনিংস! ৩২১ রান তাড়ায় দলকে বলতে গেলে একাই প্রায় জিতিয়ে দিচ্ছিলেন বেভান। অন্য কেউ যেখানে ৩০ রানও ছুঁতে পারেননি, বেভান করেছিলেন ১৩২ বলে অপরাজিত ১৮৫!

১৯৫ রানে ৭ উইকেট হারানো দলকে জয়ের দুয়ারে নিয়ে গিয়েছিলেন বেভান লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রান। আব্দুল রাজ্জাককে পরপর তিনটি বাউন্ডারি মেরেছিলেন বেভান। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ৬ রান। বেভান তুলে মেরেছিলেন, অল্পের জন্য ছক্কা হয়নি। লং অফ দিয়ে পান চার রান। দল হেরে যায় ১ রানে। তবে বেভান হারেননি!

তার চায়নাম্যান বোলিংও ছিল বেশ কার্যকর। দলকে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন বেশ, বোলিং আক্রমণে বৈচিত্রে দাবি মিটিয়েছেন অনেক সময়ই। 

অপূর্ণ টেস্ট ক্যারিয়ার

বেভানের ওয়ানডে রেকর্ড যতটা উজ্জ্বল, ততটাই বিবর্ণ টেস্ট রেকর্ড। ১৮ টেস্ট খেলে কেবল ৭৮৫ রান করেছেন। সেঞ্চুরি নেই, ফিফটি ৬টি। গড় ২৯.০৭।

তার ক্যারিয়ারকে অনুসরণ না করে থাকলে যে কেউ এখন তার টেস্ট রেকর্ড দেখলে চমকে উঠবে। ওয়ানডে অসাধারণ পারফরম্যান্স তো আছেই, প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারও তার ছিল দুর্দান্ত।

২৩৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৬৮ সেঞ্চুরিতে ১৯ হাজারের বেশি রান করেছেন ৫৭.৩২ গড়ে। শেফিল্ড শিল্ডে নিউ সাউথ ওয়েলস ও তাসমানিয়া, দুই দলের হয়েই তার ব্যাটিং গড় ৬৩ ছাড়ানো। দারুণ সফল ইংল্যান্ডের চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনেও। কাউন্টিতে সাসেক্সের হয়ে গড় ৬৪, লেস্টারশায়ারের হয়ে ৬৩, ইয়র্কশায়ারের হয়ে ৫৮। তার পরও কেন পারেননি টেস্টে, কেন আর সুযোগই পাননি ১৯৯৮ সালের পর?

মূল কারণ, শর্ট বলে দুর্বলতা। অনেকটা ভারতের বিনোদ কাম্বলির মতোই। শর্ট বলে তার দুর্বলতা ফুটে উঠেছিল স্পষ্ট হয়ে। সব প্রতিপক্ষ তার বিরুদ্ধে কাজে লাগাতে শুরু করেছিল সেই টোটকা। তাতেই ছিটকে পড়েন দল থেকে।

অথচ টেস্টে তার শুরুটা ছিল দারুণ। ১৯৯৪ সালের সেপ্টেম্বরে করাচিতে টেস্ট অভিষেক, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, মুশতাক আহমেদকে নিয়ে গড়া বোলিং আক্রমণ সামলে খেলেছিলেন দলের বিপর্যয়ের মধ্যে খেলেছিলেন ৮২ রানেরর ইনিংস।  

পরের দুই টেস্টেও তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭০ ও ৯১ রানের ইনিংস। এরপরই শুরু হয় খরা। দলে ছিল আসা-যাওয়া। ১৯৯৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে আবার আশা জাগিয়েছিলেন। টানা তিন টেস্টে ফিফটির দেখা পেয়ছিলেন, যার দুটিতে ৮০ পেরিয়ে ছিলেন অপরাজিত। অ্যাডিলেইডে ৮৫ রানের ইনিংস খেলার পাশাপাশি দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন ম্যাচ সেরা।

কিন্তু এরপর আবার ব্যর্থতা। টানা ১২ ইনিংসে বড় রান নেই। শর্ট বলে দুর্বলতা ততদিনে আরও প্রকাশ্য। সব মিলিয়ে জায়গা হারান দলে। শেফিল্ড শিল্ড ও কাউন্টিতে রানের বন্যা বইয়ে দিলেও আর সুযোগ হয়নি টেস্ট দলে।

আউট করা সহজ নয়

সবাই তো আর সব পায় না। টেস্টের বেভানের সাফল্যের চেয়ে ওয়ানডের বেভানের সাফল্যের চর্চা তাই এখনও অনেক বেশি। এই সংস্করণে তিনি ছিলেন যেন কোনো লেখকের কাল্পনিক চরিত্র; রোমাঞ্চ ছড়ানো গল্পে যিনি দিনের পর দিন দেখিয়ে গেছেন জাদু। তার এক সিদ্ধান্তেই যেখানে ফয়সালা জীবন-মৃত্যুর!

যখন ওয়ানডে ক্যারিয়ার শেষ করলেন, ৬৭ বার অপরাজিত ছিলেন। সবচেয়ে বেশি ইনিংসে অপরাজিত থাকার রেকর্ড তখন সেটিই। সেই রেকর্ড এখন অবশ্য মহেন্দ্র সিং ধোনির (৮৪ বার)।

১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজের প্রথম ফিফটিতে পৌঁছানোর পর থেকে গড় আর পঞ্চাশের নিচে নামেনি কখনই। ২৫ ম্যাচ পর গড় ছিল ৮২.১০; সে সময় তার সর্বোচ্চ ছিল ৭৮। ক্যারিয়ারের অনেকটা সময় ধরে গড় ছিল ষাটের বেশি, এখনও যা প্রায় অবিশ্বাস্য।

ওয়ানডেতে তার মূল শক্তির জায়গা ছিল সাঁটসাঁট টেকনিক। ‘ফ্ল্যাশি’ শট খেলতেন কমই। হাওয়ায় ভাসিয়ে খেলতেন কদাচিৎ। ফিল্ডারদের ফাঁক গলে মাঠের সব প্রান্ত থেকে বের করতে পারতেন রান। মাঠের বাইরে থেকেই যেন সেট হয়ে যেতেন, উইকেটে গিয়েই শুরু করতেন নিজের কাজ।  আত্মবিশ্বাস ছিল দারুণ। দুর্দান্ত রানিং বিটুউইন দা উইকেটে একটি রান চুরি করে নেওয়া বা এককে দুই, দুইকে তিন করায় ছিলেন ওস্তাদ। তাই ঝুঁকি না নিয়েই পারতেন রানের গতিতে দম দিতে।

২৩২ ওয়ানডেতে ছক্কা কেবল ২১টি। বড় শট খেলার প্রয়োজন কমই পড়ত। প্রতিপক্ষকে বুঝতে না দিয়েই যেন তাদের হাত থেকে একটু একটু করে বরে করে আনতেন ম্যাচ।

দিয়েছেন অনেক, পেয়েছেন কতটুকু?

কার্যকারিতায় বেভান ছিলেন ওপরের সারিতে। কিন্তু তার প্রজন্মের সেরা ব্যাটসম্যানদের কাতারে তাকে রাখা হয়েছে কমই। শচিন টেন্ডুলকার, ব্রায়ান লারা, মার্ক ওয়াহ তো বহুদূর, অন্য আরও অনেকের মতো তারকা খ্যাতিও বেভান পাননি সেভাবে।

১৯৯০ দশকের ক্রিকেট রোমান্টিসিজম বুঁদ ছিল বড় তারকায়। সেই সময়ে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে বেভান তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন জয়ের সৌধ। স্রেফ ‘ফিনিশার’ তকমা দিয়েই অনেক সময় তুলে ধরা হয় তাকে। সময়ের সেরাদের চেয়ে ব্যাটসম্যানশিপে কি আসলেই পিছিয়ে ছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান?

ওয়ানডে ক্রিকেটে বেভান যেন ছিলেন জাদুকর। সেই সময়ে অস্ট্রেলিয়ার দাপটের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল তার। হারতে বসা ম্যাচ জিতিয়ে দলকে করে তুলেছিলেন অপ্রতিরোধ্য।

ক্রিজে এসে সব চাপ যেন নিজের কাঁধে নিয়ে নিতেন। এরপর ধীরে ধীরে ফিরিয়ে দিতেন প্রতিপক্ষকে। পরিস্থিতি বোঝার ক্ষমতা ছিল অসাধারণ। মাঝের ওভারগুলোয় রান বের করার দক্ষতা ছিল দারুণ তার। সীমানার ফিল্ডারের কাছে এতো ধীরে বল পাঠাতেন যেন এক রানের জায়গায় দুই নেওয়া যায়। কীভাবে করতেন?

“ আমি অনুভব করতাম, ছয় নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে আমার কাজ শেষ পর্যন্ত থাকা, সেটা রান তাড়ার সময় হোক কিংবা লক্ষ্য দেওয়ার সময়।”

“ দল যখন বিপদে, এমন সময়ে ক্রিজে গেলে জয়ের ভাবনা কমই থাকার কথা মাথায়। তখন টিকে থাকার চেষ্টা করতে হয়। রান রেটে একটা চোখ রাখতে হয় যেন সেটা নাগালেই থাকে। ওয়ানডে ক্রিকেটে চাপটা আসে রান রেট থেকে। এর বাইরেও কিছু ব্যাপার থাকে, সেগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। একটা সঠিক ম্যাচ পরিকল্পনা ঠিক করতে হয়। ঝুঁকি কমিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়।”

শুনতে খুব সহজ মনে হয়। তবে বাস্তবতা হচ্ছে ক্রিকেটে সবচেয়ে কঠিন কাজের একটি এটি। বেভান সেই কঠিনকেই ভালোবেসে করে তুলেছেন সহজ।

পরিসংখ্যানে একটি পরিচয় তো ফুটে ওঠেই। তবে বেভানের কৃতিত্ব বেশি ছিল এই ধারাটা সৃষ্টি করার। অস্ট্রেলিয়া পরে পেয়েছে মাইকেল হাসিকে। ধোনি তো ফিনিশিংকে নতুন উচ্চতায় তুলে নিয়েছেন। গত ১৫ বছরে আরও অনেক ফিনিশার দেখেছে ক্রিকেট। সব দলেই এখন একজন ফিনিশার চাই-ই চাই! সবকিছুই ওই বেভানের সৌজন্যে!