বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগগুলোর অন্যতম শীর্ষ ক্রিকেটার ব্রাভো। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অবসর ভেঙে গত ডিসেম্বরে আবার ফিরে এসেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি দলে। লক্ষ্য মূলত সামনের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন বাংলাদেশেরও পেছনে, ৯ নম্বরে। তবে র্যাঙ্কিংকে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছেন না ব্রাভো। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই অলরাউন্ডার তুলে ধরলেন দলের শক্তিমত্তা।
“ শ্রীলঙ্কায় আমাদের সবশেষ সিরিজের সময় কোচ (ফিল সিমন্স) আমাদের দলটা লিখলেন ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী। আমার নাম রাখলেন ৯ নম্বরে। আমি তখন ছেলেদের বললাম, ‘আমার মনে হয় না, কোনো টি-টোয়েন্টি দলে আমি খেলেছি, যেখানে আমার নাম ছিল নয়ে।”
“ এই দলের ব্যাটিং লাইন আপ দেখে আমি চমকে গেছি। তখনই ছেলেদের বলেছি, ‘শোনো সবাই, আমার মনে হয়, আমাদের এই দল আসলে গত বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটির চেয়েও ভালো। ব্যাটিং অর্ডারের ১০ নম্বর পর্যন্ত ব্যাটসম্যান আছে আমাদের, এটা ফাজলামো নয়।”
ব্রাভো জানালেন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্যতম শীর্ষ ও কার্যকর এক ক্রিকেটারকে আপাতত বিবেচনায় না রেখেই এই হিসাব।
“ এবং ভেবে দেখুন, সুনিল নারাইনকে পাওয়া এখনও নিশ্চিত নয়। যদি নারাইনকে পাওয়া যায়, সে হয়তে ব্যাট করবে ১০ বা ১১ নম্বরে। ভাবা যায়! টি-টোয়েন্টি লিগগুলোয় এখন সে নিয়মিতই ওপেন করে।”
ব্রাভোর বিশ্বাস, এই দল সব প্রতিপক্ষের জন্যই ভীতি জাগানিয়া।
“একবার ভেবে দেখুন, পূর্ণ শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল যদি পাওয়া যায়, এভিন লুইসকে আউট করলে শিমরন হেটমায়ার ক্রিজে আসবে। হেটমায়ারকে আউট করলে নিকোলাস পুরান, লেন্ডল সিমন্সকে আউট করলে আন্দ্রে রাসেল। রাসেলের পর কাইন পোলার্ড, এরপর রভম্যান পাওয়েল। এই তালিকা লম্বা হতেই থাকবে, এক পর্যায়ে গিয়ে পাওয়া যাবে চ্যাম্পিয়ন ডিজে ব্রাভোকে।”
“ এটি ভয়ঙ্কর দল, প্রতিপক্ষের জন্য ভীতি জাগানিয়া, এটিই আমাকে রোমাঞ্চিত করছে।”
শুধু ব্যাটিং নয়, দলের বোলিং লাইন আপও যথেষ্ট ভালো মনে করেন ব্রাভো।
“ বোলিংয়ে আমি নিজের কাজ করব, ইনিংস শেষ দিকে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার চেষ্টা করব। আগে এটি আমাদের একটু দুর্ভাবনার জায়গা ছিল। ওশেন টমাস আছে আমাদের, দেখেছেন যে শ্রীলঙ্কায় কেমন গতির ঝড় তুলেছে। শেলডন কটরেল এখন বোলিং আক্রমণের নেতা, কেসরিক উইলিয়ামস আছে বেঞ্চে। সব মিলিয়ে তাই চিত্রটা আরও উজ্জ্বল ও ভালো হতে শুরু করেছে।”
শিরোপা জয়ের চেষ্টায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ নেতৃত্ব। ২০১২ ও ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিরোপা জয়ে বড় অবদান ছিল ড্যারেন স্যামির। দলকে দারুণভাবে উজ্জীবিত করতে পেয়েছিলেন তিনি। ব্রাভোর বিশ্বাস, এখনকার অধিনায়ক কাইরন পোলার্ডও কাজটি করতে পারেন খুব ভালোভাবে।
“ সে (পোলার্ড) জিততে ভালোবাসে, এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। সঠিক পথ ও চেতনায় থেকেই সে জয়ের জন্য সম্ভব সবকিছু করবে। জেতার জন্য এই দৃঢ়প্রতিজ্ঞাই বড় পার্থক্য গড়ে দেয়। আমার মনে আছে, তাকে যখন দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলো, আমি তাকে বলেছিলাম, ‘কাজটি অনেক চ্যালেঞ্জিং, খুব কঠিন, তবে সেই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সময় এখনই। দল র্যাঙ্কিংয়ের তলানির দিকে আছে, এখান থেকে কেবল ওপরের দিকেই যাওয়া যায়।”
“ দলটাকে গড়ে তোলা ও ড্রেসিং রুমের একটি আবহ গড়ে তোলার সময় এখনই। আর ক্রিকেটাররা পোলার্ডকে শ্রদ্ধা করে, কারণ সাদা বলের সংস্করণে তার যা অর্জন, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে। পোলার্ড যখন ড্রেসিং রুমে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে কথা বলে, আমাদের সবাই শুনতে বাধ্য, কারণ সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা তার, সাফল্য অনেক এবং বিশ্বজুড়েই তাকে অনেক শ্রদ্ধা করা হয়।”