ফেইসবুক লাইভে সোমবার রাতে প্রায় এক ঘণ্টা প্রাণবন্ত আড্ডা দেন তামিম ও মাশরাফি। উঠে আসে মাঠের ভেতরে-বাইরের অনেক দিক। নেতৃত্ব নিয়েও অনেক কথা বলেন দুজন। সেখানেই মজা করে তামিম বলেন, মাশরাফির জ্বিনটা খুঁজছেন তিনি।
“আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি মাশরাফি ভাই, আপনার সঙ্গে স্পেশাল কোনো পাওয়ার, জ্বিন-টিন কিছু একটা আছে। আপনাকে মানা করি যে অফ স্পিনার দিয়েন না, আপনি অফ স্পিনারই দেন এবং উইকেট পেয়ে যায়। আমি আপনার মত অধিনায়ক হতে পারব হয়তো, কিন্তু আপনার জ্বিনটাকে কোত্থেকে আনব?”
“অনেক সময়ই এমন হয়েছে, বলেছি যে মিরাজকে বোলিং দিয়েন না। আপনি এনেছেন, দেখি দ্বিতীয় বলে উইকেট পেয়ে গেছে। রিয়াদ ভাইয়ের (মাহমুদউল্লাহ) ক্ষেত্রে অনেকবার হয়েছে, আনার পরই উইকেট পেয়েছে। স্পেশাল পাওয়ার ছাড়া তো হয় না!”
মাশরাফি অবশ্য ক্রিকেটীয় উত্তরেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই জ্বিনকে চাইলেই পাওয়া সম্ভব।
“স্পেশাল পাওয়ার আমি তোকে বললাম…তুই অধিনায়ক থাকলে হয়তো তখন অফ স্পিনার বোলিং দিতি না, তাই তো? এটাই তোর স্পেশালিটি। আমার মন বলেছে, তাই অফ স্পিনার দিয়েছি, এটাই আমার স্পেশালিটি। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আমি নিশ্চিত যে তুই তোর স্পেশালিটি নিয়েই সফল হবি।”
আড্ডায় উঠে এলো ২০১৫ বিপিএলের একটি ম্যাচও। তামিমের চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ম্যাচে ১৭৭ রান তাড়ায় আচমকাই পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন মাশরাফি। দারুণ এক অপরাজিত ফিফটি করেছিলেন, জিতিয়েছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে।
তামিম জানালেন, মাশরাফিকে নামতে দেখেই চমকে গিয়েছিলেন তিনি।
“আপনাকে যখন দেখেছি যে নেমেছেন, আমার মাথায় সব কাজ করা বন্ধ হয়ে গেছে। আপনার ওপর সেদিন জ্বিন ভর করেছিল নাকি, আপনি যা মারছিলেন, সেটাই লাগছিল। আপনার পরিকল্পনা কি ছিল সেদিন? কেন নেমেছিলেন?”
মাশরাফি এরপর শোনালেন সেদিন পাঁচ নম্বরে নামার প্রেক্ষাপট।
“ওরা বলছিল, খেলাটা একটু দূরে (গভীরে) নিতে। আমি বললাম, ‘ধুর, ওদের মোহাম্মদ আমিরের ওভার বাকি আছে, তাসকিন-শফিউলের বাকি আছে। দূরে নিলে জিততে পারব না। আমি সালাউদ্দিন ভাইকে (কোচ সালাউদ্দিন) বললাম, ‘তুমি একটা ম্যাচ আমার জন্য হেরে যাও, কিন্তু কথাটা শোনো। আমি ব্যাটিংয়ে নামতে চাই।’
“আমি নেমে গেলাম। তুই তাসকিনকে আনলি। আমি ভাবলাম, ওভারটা কাটিয়ে দেই। তুই জেদ করে আমিরকে আনলি। আমি ভাবলাম, এই ওভারও চলে যাক। টানা ২-৩ ওভার পেস করিয়ে দিলি, শফিউলকেও আনলি। আমাকে মারার জন্য। আমি শুধু চিন্তা করছি যে টিকে থাকব, পরে তো স্পিনার আসবেই। তারপর তো তোর হাতে অপশন নেই, যাবি কোথায়!”
সেদিন ৩২ বলে অপরাজিত ৫৬ রান করেছিলেন মাশরাফি। মারলন স্যামুয়েলসের (৬৯*) সঙ্গে তার ১২৩ রানের জুটিতে জিতেছিল কুমিল্লা।