মাহমুদউল্লাহ ও তামিম রোববার রাতে ইনস্টাগ্রাম লাইভে আড্ডা দিয়েছেন আধ ঘণ্টার বেশি। নানা আলাপচারিতার মাঝেই উঠে আসে ২০১৮ সালের সেই ঘটনা।
সে বছরের জানুয়ারিতে দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে দাপটে খেলে ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ফাইনালে বাজেভাবে হারতে হয় শ্রীলঙ্কার কাছে। ওই টুর্নামেন্টের মাত্র কিছুদিন আগে বাংলাদেশের দায়িত্ব ছেড়ে শ্রীলঙ্কার কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন হাথুরুসিংহে।
তামিম বললেন, ঘটনার সূত্রপাত পরদিন সকালে। হাথুরুসিংহের হাসিতে তামিম খুঁজে পেয়েছিলেন প্রচ্ছন্ন খোঁচা।
“ফাইনালে আমাদেরকে হারিয়ে দিল শ্রীলঙ্কা। পরদিন সকালে হোটেলে নাশতায় হাথুরুর সঙ্গে দেখা হলো। আমাকে দেখে সে মুচকি হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। মারিও (ভিল্লাভারায়ন, বাংলাদেশ দলের তখনকার ট্রেনার) ছিল সেখানে। আমি গিয়ে বললাম, “এত হেসো না, আমরা তোমাদের দেশে গিয়ে তোমাদের হারিয়ে আসব।”
সে বছরের মার্চেই বাংলাদেশ নিদাহাস ট্রফি খেলেতে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। লঙ্কানদের দুই বার হারিয়ে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল তামিমরা। শ্রীলঙ্কা ছিটকে পড়েছিল ফাইনালের আগেই।
দুটি জয়েই অবদান ছিল তামিম ও মাহমুদউল্লাহর। প্রথম ম্যাচে ২১৫ রান তাড়ায় তামিম ওপেনিংয়ে করেছিলেন ২৯ বলে ৪৭। মাহমুদউল্লাহ করেছিলেন ১১ বলে ২০। মুশফিকুর রহিমের ৩৫ বলে ৭২ রানের ইনিংস জিতিয়েছিল দলকে।
পরের ম্যাচে ১৬০ রান তাড়ায় তামিম করেছিলেন ফিফটি। মাহমুদউল্লাহ ১৮ বলে ৪৩ রানের অসাধারণ অপরাজিত ইনিংস খেলে জিতিয়েছিলেন দলকে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচটি কার্যত রূপ নিয়েছিল সেমি-ফাইনালে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় ম্যাচ সেটি। শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১২। বাঁহাতি পেসার ইসুরু উদানার করা প্রথম দুই বলে কোনো রানই আসেনি।
এরপর একটি ‘নো’ বলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় তুমুল। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান চলে আসতে বলেন উইকেটে থাকা মাহমুদউল্লাহকে। খেলা বন্ধ থাকে অনেকক্ষণ।
খেলা শুরুর পর প্রথম বলেই ওয়াইড ইয়র্কারে দুর্দান্ত শটে চার মারেন মাহমুদউল্লাহ। পরের বলে আসে দুই রান। ২ বলে যখন প্রয়োজন ৬ রান, চোখধাঁধানো এক ফ্লিক শটে বল গ্যালারিতে পাঠান মাহমুদউল্লাহ। উন্মত্ত উদযাপনে মেতে ওঠে বাংলাদেশ দল।
তামিম ওই প্রসঙ্গ তোলার পর সেই টুর্নামেন্ট, অবিস্মরণীয় সেই ম্যাচ আর নিজের ছক্কা নিয়ে স্মৃতিচারণা করলেন মাহমুদউল্লাহ।
“একটা কথা বলি, অনেকে জানে না। টুর্নামেন্ট চলার সময়, আমার রুমে একটা আলোচনা করেছিলাম আমরা। সবার ভেতরে তাড়না ছিল। মিটিংয়ে সবাই ভেতরের কথা বলতে পেরেছিল, একটা টিমওয়ার্ক গড়ে উঠেছিল।”
“আর ওই ম্যাচে ইসুরু উদানার বলে ওয়াইড ইয়র্কারে যে চারটি মেরেছি, ওটা শট না খেললে ওয়াইড হতো। অনেক বাইরে ছিল। টেস্টেও ওয়াইড হতো। তো ওটায় চার মেরে দেওয়ার পর মনে হচ্ছিল, উদানা আর ওয়াইড ইয়র্কার করবে না। এজন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম, যে মিডলে ইয়র্ক করতে পারে। জয়ের পর তো, বুঝতে পারছিলাম না কী করব। দারুণ এক রাত ছিল সেটি, অনেক মজা করেছিলাম আমরা।”