বিবিসি রেডিওর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ক্যারিয়ার ও জীবনের অনেক কিছু নিয়ে কথা বলেছেন যুবরাজ। ৩৮ বছর বয়সী সাবেক অলরাউন্ডার সেখানেই স্মৃতিচারণ করলেন ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ছয় ছক্কার কীর্তি নিয়ে।
ডারবানে বিশ্বকাপের সুপার এইটের সেই ম্যাচে যুবরাজ করেছিলেন দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড (১২ বলে)।
প্রথমে ব্যাট করা ভারতের রান তখন ১৮ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ১৭১। অষ্টাদশ ওভার বোলিং করেছিলেন ফ্লিন্টফ। তার পরপর দুই বলে বাউন্ডারি মেরেছিলেন যুবরাজ। কথার লড়াই শুরু সেই ওভার থেকেই।
ওভার শেষেও রয়ে যায় রেশ। পরে আম্পায়ারের হস্তক্ষেপে শান্ত হয় পরিস্থিতি। কিন্তু যুবরাজ ছিলেন তেতে। ১৯তম ওভারটি করতে আসেন ব্রড। তার ওপর দিয়ে বয়ে যায় তাণ্ডব।
“ফ্রেডি (ফ্লিনটফের ডাকনাম) তো ছিল যথারীতি তার মতোই… সে কিছু কথা শুনিয়েছিল, আমিও জবাব দিয়েছিলাম।”
করোনাভাইরাসের কারণে খেলা বন্ধের এই সময়ে দুজনের সেই কথার লড়াই ও টানা ছয় ছক্কা ভারতে প্রায়ই দেখানো হয় টিভিতে, দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। যুবরাজ মজা করে বলেছেন, ভারতে বিখ্যাত হয়ে উঠছেন ফ্লিন্টফ!
ছয় ছক্কা হাঁকানোর মাত্র ১২ দিন আগেই প্রায় উল্টো স্বাদ পেয়েছিলেন যুবরাজ। ওভালে ইংল্যান্ড-ভারতের ওয়ানডে ম্যাচে যুবরাজের ওভারে টানা পাঁচ বলে ছক্কা মেরেছিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার দিমিত্রি মাসকারেনহাস। ইংল্যান্ডকে সুদে-আসলে সেটি ফেরত দিতে পারায় যুবরাজ ছিলেন দারুণ খুশি।
“ছয় ছক্কা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আসায় বেশি খুশি হয়েছিলাম। কারণ এর কিছুদিন আগেই একটি ওয়ানডেতে দিমিত্রি মাসকারেনহাস আমাকে পাঁচটি ছক্কা মেরেছিল।”
“ষষ্ঠ ছক্কা হাঁকানোর পর স্বাভাবিকভাবেই আমি প্রথমে তাকিয়েছিলাম ফ্লিনটফের দিকে। এরপরই তাকাই দিমিত্রির দিকে, সে জবাব দিয়েছিল হাসিতে।”
১৬ বলে অপরাজিত ৫৮ রানের ইনিংস খেলে সেদিন ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন যুবরাজ। ২১৮ রান তুলে ভারত ম্যাচ জিতেছিল ১৮ রানে।
যুবরাজ জানালেন, সেই ছয় ছক্কা নিয়ে ব্রডের সঙ্গে তার খোঁচাখুঁচি, মজা চলে সবসময়ই। ওই ম্যাচের পর যুবরাজের কাছ থেকে উপহারও পেয়েছিলেন ব্রড।
“ওর বাবা, ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড পরের দিন তিনি আমার কাছে এসে বললেন, ‘আমার ছেলের ক্যারিয়ারটা তুমি প্রায় শেষ করে দিয়েছ, এখন তোমাকে তার জন্যে একটা সাক্ষর করা জার্সি দিতে হবে।”
“আমি আমার ভারতীয় দলের জার্সি দিলাম এবং স্টুয়ার্টের জন্য লিখলাম, ‘আমি পাঁচ ছক্কার শিকার হয়েছিলাম, তাই জানি এর অনুভূতি কেমন। ইংল্যান্ড ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য শুভ কামনা।”
ছয় ছক্কা হজমের পর ব্রড যেভাবে নিজের ক্যারিয়ার গুছিয়েছেন, সেটির জন্য ইংলিশ পেসারকে কৃতিত্ব দিতেও ভুল করেননি যুবরাজ।
“স্টুয়ার্ট এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার। আমি মনে করি না, ভারতের কোনো বোলার ওভারে ছয় ছক্কা খাওয়ার পর এমন ক্যারিয়ার গড়তে পারত।”
৪৮৫ উইকেট নিয়ে ব্রড এখন টেস্ট ইতিহাসের চতুর্থ সফলতম পেসার। তিন সংস্করণ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়েছেন ৭২৮ উইকেট।