ওয়ানডেতে সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন হলেও রোহিতের টেস্ট ক্যারিয়ার এগোয়নি একই সাফল্যের পথ ধরে। যদিও ২০১৩ সালে তার টেস্ট অভিষেক হয়েছিল দারুণ আশার গান গেয়ে। প্রথম দুই টেস্টেই করেছিলেন সেঞ্চুরি। পরে আর ধরে রাখতে পারেননি সেই ধারা। ওয়ানডেতে যিনি রান মেশিন, টেস্ট দলে তিনি ছিলেন আসা-যাওয়ার মধ্যে।
তবে ওয়ানডের মতোই টেস্টে ওপেনিংয়ে উঠিয়ে আনার পর নতুন গতি পেয়েছে রোহিতের ক্যারিয়ার। গত অক্টোবরে দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে তাকে স্কোয়াডে ফিরিয়ে ওপেন করানো হয় প্রথমবারের মতো। সিরিজের চার ইনিংসে তার স্কোর ছিল ১৭৬, ১২৭, ১৪ ও ২১২!
রোহিতের মূল চ্যালেঞ্জ অবশ্য দেশের বাইরে। বাদও পড়েছিলেন সে কারণেই। এখনও পর্যন্ত দেশের মাটিতে ১৪ টেস্টে তার ব্যাটিং গড় ৮৮.৩৩, দেশের বাইরে ১৮ টেস্টে গড় মাত্র ২৬.৩২!
ভারতের সবশেষ নিউ জিল্যান্ড সফরে যেতে পারেননি চোটের কারণে। এই বছরের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়া সফরে যেতে তাই তিনি মরিয়া।
“ নিউ জিল্যান্ডের চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনে খেলতে আমি আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভুল সময়ে চোট পেয়ে গেলাম। এখন অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে নিজেকে পরখ করে দেখতে আমার তর সইছে না।”
অস্ট্রেলিয়ায় দুই বারের সফরে ৫ টেস্ট খেলে রোহিত ফিফটি করতে পেরেছেন মোটে দুটি, গড় ৩১। সবশেষ সফরে (২০১৮-১৯) তিনি নিজে খুব ভালো করতে না পারলেও প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জিতেছিল ভারত।
সেই সিরিজে অবশ্য দলের সেরা দুই ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথকে ছাড়া খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। টিম পেইনের দল তখন ছিল অগোছালো। রোহিতের ধারণা, এবারের অস্ট্রেলিয়া সফর হবে আরও কঠিন।
“অস্ট্রেলিয়া খেলবে নিজেদের মাটিতে, ওই দুজনও দলে ফিরেছে, এবার লড়াই অনেক কঠিন হবে, আমি জানি। তবে আমরাও দল হিসেবে নিজেদের সেরাটা খেলছি এখন। সিরিজটি যদি হয়, এই সিরিজের অংশ হতে পারাটা হবে দারুণ।”
‘সিরিজটি যদি হয়’- রোহিতের এই সংশয়ের কারণ, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে সব খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যাওয়া। ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফর নিয়েও শঙ্কা আছে প্রবলভাবে। যদিও বাণিজ্যিকভাবে তুমুল আকর্ষণীয় এই সিরিজ থেকে পিছু হঠতে চায় না অস্ট্রেলিয়া। তারা নানা বিকল্প উপায় খুঁজছে। আলাদা একটি হোটেলে শুধু ভারতীয় দলকে রেখে এক মাঠেই পাঁচ টেস্ট দর্শক ছাড়া আয়োজন করার ভাবনাও তাদের আছে।
ক্রিকেট যখন আবার শুরু হবে, ক্রিকেটারদের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ হবে ফিটনেস ভালো করা। ঘরবন্দি লম্বা সময়ে ফিটনেসের ঘাটতি দেখা দিতেই পারে। রোহিত নিজের চ্যালেঞ্জটা দেখছেন আরও বেশি।
“ আমার কাজটা আরও কঠিন হবে, কারণ সবকিছু বন্ধ হওয়ার আগে ইনজুরির কারণে বাইরে ছিলাম। খেলা শুরুর আগে আমাকে অনেক কাজ করতে হবে। লকডাউন শুরুর ঠিক আগে আমার ফিটনেস পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। আমার প্রথম কাজ হবে তাই ফিটনেস পরীক্ষায় উতরানো, তার পর অবশ্যই কিছু ব্যাটিং অনুশীলন। কারণ লম্বা সময় ধরে খেলি না।”