হিউজের মৃত্যু এখনও কাঁদায় লায়নকে

সময় নাকি সবকিছুকেই হালকা করে দেয়। কিছু কিছু ক্ষত তবু দগদগে হয়ে থাকে সবসময়ই। ফিল হিউজের মৃত্যু যেমন এখনও যন্ত্রণা দেয় ন্যাথান লায়নকে। চোখের সামনে হিউজের ঢলে পড়ার দৃশ্য ভুলতে পারেন না অস্ট্রেলিয়ান অফ স্পিনার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 April 2020, 05:42 AM
Updated : 14 April 2020, 05:42 AM

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ক্রিকেট মাঠে অনেক কঠিন সময় গেছে লায়নের। কিন্তু তার কাছে সবচেয়ে দুঃসহ স্মৃতি, প্রিয় বন্ধুর ওভাবে চলে যাওয়া।

২০১৪ সালের নভেম্বরে, সিডনিতে শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচে শন অ্যাবটের বাউন্সারে যখন আঘাত পান হিউজ, তখন লায়ন ফিল্ডিং করছিলেন খুব কাছেই। এখনও সব দৃশ্য তার চোখে ভেসে ওঠে স্পষ্ট।

একটি রেডিও সাক্ষাৎকারে যখন ক্রিকেট মাঠে সবচেয়ে কষ্টকর অভিজ্ঞতার প্রশ্ন করা হলো, উত্তর দিতে একটুও সময় নেননি লায়ন।

“হিউজ… ফিল হিউজের চলে যাওয়া। ফিল সেদিন যখন আঘাত পেল, ওর থেকে মাত্র ১০ মিটারের মতো দূরে ছিলাম আমি। স্মৃতিগুলো অবশ্যই এখনও তরতাজা। আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল, সতীর্থ হিসেবেও ছিল অসাধারণ।”

সেই ঘটনায় জীবনের কঠিন বাস্তবতার উপলিব্ধও হয়েছিল লায়নের।

“আমার জীবনের অদ্ভূত একটি অধ্যায় সেটি। মাত্র সপ্তাহ তিনেক আগেই মিলা এসেছিল পৃথিবীতে (তার প্রথম সন্তান)। সেই আনন্দে ডুবে ছিলাম। তার পর, হুট করেই সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুকে হারাতে হলো।”

“আচমকাই বুঝতে পেরেছিলাম, ক্রিকেটকে আমরা জীবন বলি, এটি স্রেফ আসলে একটি খেলাই। দুনিয়াজুড়ে অনেক মানুষ হয়তো আমাদের মতো হতে চায়, এমন জীবন কাটাতে চায়। কিন্তু ফিল যখন আঘাত পেল, তখন মনে হলো সবকিছুর ঠুনকো। ক্রিকেট মাঠে আমার সবচেয়ে দুঃসহ মুহূর্ত সেটিই।”

হিউজের মৃত্যু শুধু অস্ট্রেলিয়া নয়, গোটা ক্রিকেট বিশ্বকেই ভাসিয়েছিল শোকের সাগরে। ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট শুরু হওয়ার কথা ছিল কদিন পরই। সেটি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আবেগময় সেই টেস্টে দুই ইনিংসে ১২ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে স্মরণীয় জয় এনে দিয়েছিলেন লায়ন।

অদ্ভূতভাবে, ভারতের শেষ উইকেট নিয়ে যখন দলের জয় নিশ্চিত করলেন লায়ন, মাঠের ঘড়িতে তখন বাজে বিকেল ৪:০৮ মিনিট। হিউজের টেস্ট ক্যাপ নম্বর ৪০৮!

এই কাকতালীয় মিল ছুঁয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদেরও, জানালেন লায়ন।

“পেছন ফিরে তাকালে বিস্ময়কর মনে হয়, ৪:০৮ মিনিটেই আমি শেষ উইকেট নিলাম। খুবই অদ্ভূতুড়ে ব্যাপার, ওর টেস্ট নম্বর সেটি।”

“একটা অসাধারণ ছবি আছে, মাঠে আঁকা ছিল ওর টেস্ট নম্বর। সেটির পাশে দাঁড়িয়ে আমরা ম্যাচ শেষে বিজয়সঙ্গীত গেয়ে চলেছি। আমার প্রিয় ছবি সেটি। ফিলকে শ্রদ্ধা জানানোর এর চেয়ে ভালো কোনো উপায় আর হতে পারত না।”