ধ্বংসস্তুপেই সাফল্যের রসদ পেয়েছিলেন ল্যাঙ্গার

প্রবাদে আছে, ব্যর্থতাই সাফল্যের চাবিকাঠি। জাস্টিন ল্যাঙ্গারের জীবনে এটিই সত্য হয়ে ধরা দিয়েছে বারবার। খেলোয়াড়ী জীবনে এই অভিজ্ঞতা হয়েছিল সাবেক অস্ট্রেলিয়া ব্যাটসম্যানের। কোচ হিসেবেও ব্যর্থতার অধ্যায় থেকে পেয়েছেন ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 April 2020, 08:13 AM
Updated : 11 April 2020, 08:41 AM

অস্ট্রেলিয়ার কোচ হিসেবে ল্যাঙ্গারের শুরুটা ছিল ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ। বিশেষ করে ২০১৮-১৯ মৌসুমে দেশের মাটিতে ভারতের কাছে হারার পর দলের ভেতরে-বাইরে তাকে নিয়ে ছিল সমালোচনার ঝড়। ক্রিকেটাররা তার অতি কঠিন আচরণ ও নেতিবাচক মানসিকতায় বিরক্ত বলে খবর বেরিয়েছিল সংবাদমাধ্যমে। এমনকি তার স্ত্রী পর্যন্ত বলেছিলেন, “হাসতে ভুলে গেছে জাস্টিন।”

নিজেদের ইতিহাসে সেই প্রথম অস্ট্রেলিয়া থেকে টেস্ট সিরিজ জিতে ফিরেছিল ভারত। সেই ধাক্কা পরে সামলে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। কোচ হিসেবে সাফল্যের পথে হেঁটেছেন ল্যাঙ্গার। ওই সিরিজের পর টানা চার টেস্ট সিরিজ অপরাজিত আছে অস্ট্রেলিয়া। এই সময়ে হোয়াইটওয়াশ করেছে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নিউ জিল্যান্ডকে। ইংলিশদের সিরিজে হারাতে না পারলেও ড্র করে অ্যাশেজ ধরে রেখে ফিরেছে ইংল্যান্ড থেকে।

অস্ট্রেলিয়ার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে ল্যাঙ্গার জানালেন, সেই কঠিন সময়ই তাকে সহায়তা করেছে সুসময়ের পথ বের করে নিতে।

“সেটি ছিল সত্যিকার অর্থেই বড় একটি সতর্কবার্তা এবং আমার জীবনের কঠিন এক সময়। আমার কোনো সন্দেহই নেই, বছর দশেক পরে যখন পেছন ফিরে তাকাব, দেখব যে ওই সময়টাই আমার কোচিং ক্যারিয়ার গড়ে দিয়েছে।”

কোচিংয়ের এই অভিজ্ঞতায় তার মনে পড়েছে ক্রিকেটার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় অধ্যায়ের কথাও। তিন নম্বরে ব্যাট করতেন তখন। টানা ব্যর্থতায় জায়গা হারালেন একাদশে। ২০০১ অ্যাশেজের প্রথম চার টেস্টে সুযোগই পেলেন না।

তবে ওপেনার মাইকেল স্ল্যাটারের ব্যর্থতা ল্যাঙ্গারের জন্য খুলে দিয়েছিল সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। তিন নম্বর থেকে ওপেনিংয়ে তুলে এনে তাকে সুযোগ দেওয়া হলো সিরিজের শেষ টেস্টে। প্রথম সুযোগেই করলেন সেঞ্চুরি। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাননি। টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৩ সেঞ্চুরির ১৬টিই করেন ওই সময়ে। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন বিশ্বের সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যানদের একজন হিসেবে। ম্যাথু হেইডেনের সঙ্গে মিলে গড়েছিলেন টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সফল উদ্বোধনী জুটি।

ল্যাঙ্গারের মতে, কঠিন সময় থেকেই সবচেয়ে বেশি শিক্ষা পাওয়া যায় জীবনে।

“২০০১ সালে যখন অস্ট্রেলিয়া দল থেকে বাদ পড়লাম ৩১ বছর বয়সে, আমি ভেবেছিলাম ক্যারিয়ার সেখানেই শেষ। ওই সময়টাই ক্রিকেটার হিসেবে, মানুষ হিসেবে আমাকে আরও পরিণত করেছে। পরে সুযোগ এসেছিল, লুফে নিয়েছিলাম।”

“দুঃসময় যা কিছু শেখায় জীবনে, সবই অমূল্য। কঠিন সময় থেকেই বড় শিক্ষা পাওয়া যায়। সেটি কাজে লাগালেই জীবনে সফল হওয়া যায়।”