‘এখনকার ক্রিকেটারদের মাথা ঘুরিয়ে দিচ্ছে অর্থ’

অর্থের ঝনঝনানি জীবনে কম দেখেননি যুবরাজ সিং। কিন্তু সেই অর্থের স্রোতে ভেসে না গিয়ে মাঠে পারফর্ম করেছেন। জাতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ভাবমূর্তিও ধরে রেখেছেন। এখনকার ক্রিকেটারদের এই জায়গাতেই বড় ঘাটতি দেখছেন সাবেক অলরাউন্ডার। ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক বলছেন, এই প্রজন্মের ক্রিকেটাররা অর্থ সামলাতে জানে না।  

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 April 2020, 06:05 PM
Updated : 7 April 2020, 06:05 PM

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই রঙিন পোশাকে যুবরাজ ছিলেন ‘ম্যাচ উইনার।’ সাধারণ্যে তার জনপ্রিয়তা ছিল প্রবল, বিজ্ঞাপনের বাজারে চাহিদা তুমুল। আইপিএলে বরাবরই ছিলেন ‘হট কেক।’ তাই অর্থও আয় করেছেন দেদার। আইপিএলে চোখধাঁধানো পারিশ্রমিক পেয়েছেন কয়েকবারই।

২০১৪ আইপিএলে তাকে ১৪ কোটি রুপিতে দলে নিয়েছিল র‍য়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। পরের আসরেই তাকে রেকর্ড ১৬ কোটি রুপিতে দলে টানে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। সেই রেকর্ড ভেঙ্গে ২০১৮ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বিরাট কোহলিকে দলে রেখে দেয় ১৭ কোটি রুপিতে। এমনকি নিজের পড়তি ফর্মের সময়েও ২০১৬ ও ২০১৭ আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদে পেয়েছেন ৭ কোটি রুপি করে।

কোহলি ভারতকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তিন সংস্করণে। ক্রীড়াবিদদের মধ্যে বছরে সর্বোচ্চ অর্থ উপার্জন করাদের তালিকায় যেমন ওপরের দিকে থাকেন, তেমনি মাঠের ভেতরে ও বাইরে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন ‘রোল মডেল’ হিসেবে।

সৌরভ গাঙ্গুলি, শচিন টেন্ডুলকাররা অর্থ যেমন উপার্জন করেছেন তেমনি তা সামলেছেনও ভালোভাবে। কিন্তু এখনকার ক্রিকেটারদের সেই বোধ দেখছেন না যুবরাজ। নিজের সেই পর্যবেক্ষণের কথা তুলে ধরলেন তিনি আরেক তারকা ক্রিকেটার রোহিত শর্মার সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম আলাপচারিতায়। 

“আমার উপলব্ধি, তুমি যখন দলে এসেছিলে, তোমার সিনিয়ররা ছিল খুবই সুশৃঙ্খল, কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছিল না, তাই মনোযোগ নাড়িয়ে দেওয়ার কিছু ছিল না। একটি ধারা ছিল যে সিনিয়রদের দেখে তরুণরা নিজেদের সেভাবেই গড়ে তুলত। ”

“এখন তো আমার মনে হয়, ছেলেরা মনে করে, তারা যা ইচ্ছা করতে পারে। এটা তাদের দোষ নয়, মাঝে মধ্যে তারা আইপিএলের বড় চুক্তি পেয়ে যায়, জানে না কীভাবে অর্থ সামাল দিতে হয়।”

এই সময়ের ক্রিকেটাররা মাঠের বাইরে নিজেদের ঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারেন না বলেও মনে করেন যুবরাজ। গত বছর একটি টেলিভিশন টক শোতে নারী বিদ্বেষী মন্তব্য করে বেশ সমালোচিত হয়েছিলেন লোকেশ রাহুল ও হার্দিক পান্ডিয়া। সেই প্রসঙ্গ ধরেই উদাহরণ টানলেন ২০১১ বিশ্বকাপে ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট হওয়া এই অলরাউন্ডার।

“ভারতের হয়ে খেললে নিজের ভাবমূর্তি নিয়ে খুবই সতর্ক থাকতে হবে। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আসার পর, অনুসরণ করার মতো খুব কম জনকেই পাওয়া যাবে। এখন ছেলেরা যে কাউকে যা ইচ্ছা বলে দিচ্ছে। (লোকেশ) রাহুল ও হার্দিক (পান্ডিয়া) যে ঘটনা ঘটিয়েছে, আমাদের সময় হলে এমন হতো না।”