বাংলাদেশ সফরের আগেই থামলেন ও’কিফ

সবশেষ টেস্ট খেলেছেন তিনি ২০১৭ সালে চট্টগ্রামে। এবার অস্ট্রেলিয়া আরেক দফায় বাংলাদেশ সফরে এলে তাকে ফেরানো হতে পারে, এমন আলোচনা চলছিল। কিন্তু সব আলোচনা থামিয়ে দিলেন স্টিভ ও’ কিফ। অস্ট্রেলিয়ান বাঁহাতি স্পিনার বিদায় বলে দিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2020, 09:20 AM
Updated : 5 April 2020, 09:20 AM

হতাশার প্রেক্ষাপট থেকেই তার এই আচমকা ঘোষণা। গত কয়েক মৌসুম ধরেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ছিলেন ধারাবাহিক পারফরমার। সবশেষ শেফিল্ড শিল্ডে স্পিনারদের মধ্যে ছিলেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। তবু তাকে আগামী মৌসুমের জন্য চুক্তিতে রাখেনি নিউ সাউথ ওয়েলস। সেই হতাশা থেকেই অবসর নিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে।

শেফিল্ড শিল্ডে এবার পাঁচ ম্যাচে ২২ গড়ে ১৬ উইকেট নিয়েছিলেন ও’কিফ। করোনাভাইরাসের কারণে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির এই  প্রতিযোগিতার শেষ রাউন্ড ও ফাইনাল বাতিল করে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয় নিউ সাউথ ওয়েলসকে।  

তবে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে স্পিন আক্রমণ নতুন করে সাজাতে চায় নিউ সাউথ ওয়েলস। তাই নতুন চুক্তিতে রাখা হয়নি ৩৫ বছর বয়সী ও’ কিফকে। তিনিও তাই ভবিষ্যতের ছবি এঁকে ফেলেছেন দ্রুতই।

“আমি হতাশ হয়েছিলাম, যখন শুনলাম আমাকে চুক্তিতে রাখা হচ্ছে না। তবে আমি এই সিদ্ধান্তকে সম্মান করছি এবং মেনেও নিয়েছি। আমি তাই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

আগামী জুনে বাংলাদেশ সফরে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে ও’কিফ ডাক পেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। করোনাভাইরাসের প্রভাবে অস্ট্রেলিয়ার সফর নিয়ে যদিও রয়েছে অনিশ্চয়তা। কিন্তু তিনি নিজের ভবিষ্যত নিশ্চিত বুঝে নিয়েছেন।

“দেশের হয়ে খেলতে পারা, নিজের রাজ্য দলকে নেতৃত্ব দিতে পারা ছিল দারুণ সম্মানের।  তবে সবকিছুর ওপরে আমি সবচেয়ে বেশি গর্ব করি, আমার দেখা সেরা কয়েকজনের মানুষের পাশে খেলতে পেরে। ক্রিকেট খেলার সময়টুকুর কথা ভাবলে, এটিই সবচেয়ে বেশি মিস করব।”

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে বিদায় জানালেও সিডনি সিক্সার্সের হয়ে বিগ ব্যাশ খেলবেন তিনি। চালিয়ে যাবেন সিডনির গ্রেড ক্রিকেটে খেলাও।

তার টেস্ট ক্যারিয়ার মাত্র ৯ টেস্টের। উইকেট নিয়েছেন ৩৫টি। টেস্ট অভিষেক ২০১৪ সালে, দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে। টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা এসেছিল ২০১৭ সালেই, ভারত সফরে। পুনেতে প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দারুণ জয়ের ম্যাচে দুই ইনিংসেই সমান ৩৫ রানে উইকেট নিয়েছিলেন ৬টি করে। ভারতে কোনো সফরকারী স্পিনারের যা সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড।

তবে শৃঙ্খলাজনিত কারণে ওই সফরের পরই তাকে নিষিদ্ধ করে নিউ সাউথ ওয়েলস, করা হয় জরিমানাও। বাদ পড়েন সেবার বাংলাদেশ সফরের অস্ট্রেলিয়া দল থেকে।

পরে জশ হেইজেলউড চোটে পড়লে তার বদলি হিসেবে বাংলাদেশে উড়িয়ে আনা হয় ও’কিফকে। রাজ্য দলে তিনি তখনও নিষিদ্ধ। সেই সফরেই চট্টগ্রামে টেস্ট খেলে প্রথম ইনিংসে খরুচে বোলিংয়ে নিতে পারেননি উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছিলেন দুটি। সেটিই হয়ে থাকল তার শেষ টেস্ট।

শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে তাকে শাস্তি ও জরিমানার মুখোমুখি হতে হয়েছে আগেও। জাতীয় দলে আরও বেশি সুযোগ না পাওয়ার পেছনে ভূমিকা আছে সেসবের।

১৫ বছরের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে সব মিলিয়ে ৮৮ ম্যাচে তার শিকার ৩০১ উইকেট। এর মধ্যে ২২৪টি নিয়েছেন শেফিল্ড শিল্ডে। ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ছিলেন নিউ সাউথ ওয়েলসের অধিনায়ক।