কোহলির জীবনের ‘সেরা সিদ্ধান্ত’

অধিনায়ক হিসেবে কত সিদ্ধান্তই তো নিতে হয়। ব্যাটসম্যান হিসেবেও ২২ গজে প্রতিটি বল খেলা একেকটি কঠিন সিদ্ধান্ত। তবে ওসব কিছু নয়, মাঠের বাইরে একটি সিদ্ধান্তই পাল্টে দিয়েছে বিরাট কোহলির জীবন। সেটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে তার ক্রিকেটেও। মাংস খাওয়া ছেড়ে দেওয়া!

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 April 2020, 09:54 AM
Updated : 3 April 2020, 09:54 AM

ইংলিশ গ্রেট কেভিন পিটারসেনের সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে প্রাণবন্ত আলাপচারিতায় কোহলি খোলামেলা কথা বলেছেন মাঠের ভেতরে-বাইরে অনেক কিছু নিয়ে। সেখানেই উঠে এসেছে খাদ্যাভ্যাস বদলের সিদ্ধান্ত।

আইপিএলে পিটারসেন ও কোহলি একইসঙ্গে খেলেছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে। তখন পিটারসেন দেখেছেন, কোহলি পছন্দ করতেন মাংস খেতে। কিন্তু ২০১৮ সালের ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট সিরিজের ঠিক আগে ছেড়ে দেন মাংস খাওয়া। সেই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপট শোনালেন কোহলি।

“২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সেঞ্চুরিয়ন টেস্টের সময় মেরুদন্ডের সমস্যা অনুভব করি। মেরুদন্ডের ঘাড়ের সঙ্গে সংযুক্ত অংশের একটি ডিস্ক ফুলে ওঠে এবং এটি একটি নার্ভকে সঙ্কুচিত করে ফেলে, যেটি সরাসরি বিস্তৃত ছিল আমার ডান হাতের কনিষ্ঠা পর্যন্ত। ব্যথায় পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম। রাতে ঘুমাতেই পারছিলাম না। এরপর পরীক্ষা করালাম।”

“আমার শরীর এত বেশি ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করছিল যে শরীর ছিল প্রচণ্ড অ্যাসিডময়। তাতে যেটা হচ্ছিল, যদিও আমি ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এসব নিচ্ছিলাম, আমার শরীরকে যথেষ্ট কার্যকর রাখার জন্য একটি ট্যাবলেট পর্যাপ্ত হচ্ছিল না। আমার পাকস্থলি তাই হাড় থেকে ক্যালসিয়াম টেনে নিচ্ছিল এবং হাড় দুর্বল হয়ে পড়ছিল। এজন্যই সমস্যাটি হচ্ছিল। ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হওয়া ও শরীরে অ্যাসিড কমাতেই আমি ইংল্যান্ড সফরের (২০১৮) মাঝপথে মাংস খাওয়া পুরোপুরি ছেড়ে দিলাম।”

সেই পদক্ষেপ কাজ করেছে জাদুমন্ত্রের মতো। মাংস ছাড়ার সুফল পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি, জানালেন কোহলি।

“জীবনে এত ভালো আগে কখনও অনুভব করিনি। অসাধারণ লেগেছে। দুই বছর হয়ে গেল, সেটিই আমার জীবনের সেরা সিদ্ধান্ত। সকালে ঘুম থেকে উঠতে এত ভালো কখনও লাগেনি। খেলার পর রিকভারি করার সময় এত ভালো আগে লাগেনি।”

“এক সপ্তাহে তিনটি তীব্র একাগ্রতার ম্যাচ খেলতে বলুন আমাকে, প্রতিটিতেই আমাকে পাবেন ১২০ শতাংশ। টেস্ট ম্যাচের পর এক দিনের মধ্যেই আমার রিকভারি হয়ে যায়। তখনই আরেকটি টেস্ট খেলতে পারি।”

এই একটি সিদ্ধান্ত তাকে পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে, জানালেন কোহলি।

“মাংস না খেয়ে থাকায় এত ভালো লাগছে! সত্যি বলছি, শাকাহারী হওয়ার পর মনে হয়েছে, আরও আগে কেন এটা করিনি! আরও ২-৩ বছর আগেই করা উচিত ছিল। সবকিছুই পুরোপুরি বদলে দিয়েছে এটা, আগের চেয়ে ভালো লাগছে, ভালোভাবে ভাবছি, শরীরের ওজন কম মনে হচ্ছে, ইতিবাচক মনোভাব থাকছে, আরও বেশি কিছু করার প্রাণশক্তি পাচ্ছি। সব মিলিয়েই এটি অসাধারণ, অসাধারণ এক পরিবর্তন।”