দুপুর থেকে সন্ধ্যা বোলিং করেই ইশান্তের উন্নতি

টেস্ট ক্রিকেটে লাইন-লেংথ ধরে রেখে টানা বোলিং করে যাওয়ার সামর্থ্য উপমহাদেশের পেসারদের মধ্যে বিরল। এখানেই নিজেকে দারুণ এক উদাহরণ হিসেবে গড়ে তুলেছেন ইশান্ত শর্মা। সাদা পোশাকের সংস্করণে লাগাতার খুনে বোলিং করে যাওয়ার নজির সৃষ্টি করা ভারতের এই পেসার জানিয়েছেন, অনেক সাধনায় রপ্ত করেছেন লম্বা স্পেলে বোলিং।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2020, 12:13 PM
Updated : 22 March 2020, 12:27 PM

ইশান্তের মধ্যে দীর্ঘ স্পেল করার বীজ বুনে দিয়েছিলেন কোচ শ্রাবণ কুমার। তার একাডেমিতে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বোলিং অনুশীলন করেই লম্বা সময় ধরে বোলিং করার ফিটনেস তৈরি করেছেন ইশান্ত।

এখন ভারতীয় টেস্ট দলের পেস বোলিংয়ের নেতা তিনি। ৯৭ টেস্টে ২৯৭ উইকেট নিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার। আর তিনটি উইকেট নিলেই তৃতীয় ভারতীয় পেসার হিসেবে পূর্ণ করবেন তিনশ টেস্ট উইকেট।

যে একাডেমির মাঠে নিজেকে তৈরি করেছেন ভবিষ্যতের জন্য, সেখানে দাঁড়িয়েই ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের এই পেসার তুলে ধরলেন তার পরিণত হওয়ার পেছনের গল্প।

“লম্বা স্পেলের বোলিংয়ের উন্নতি এই মাঠেই করেছিলাম। স্যার (শ্রাবণ) আমাদেরকে সাধারণত বেলা ১টায় বল হাতে দিয়ে বলতেন অন্ধকার নামার আগ পর্যন্ত বোলিং করে যেতে। এখানেই আমি আমার বোলিং ফিটনেসের উন্নতি করেছি। বোলিংয়ের পেশি সম্পূর্ণ আলাদা। কোনো ধরনের জিম কিংবা দৌড়ানো কখনোই বোলিং করার বিকল্প হতে পারে না।”

নিজেকে তৈরি করার পথে ইশান্তও কখনও পিছপা হননি কঠোর পরিশ্রম করা থেকে। ছাত্রের অধ্যাবসায়ের কথা উঠে এলো গুরু শ্রাবণের কণ্ঠেও।

“আমি যখন তাকে পাঁচ ঘণ্টা বোলিং করতে বলতাম, সে কখনও ভড়কে যেত না। কখনও বলত না যে সে পারবে না, ভারতের হয়ে খেলার আগ পর্যন্ত।”

২০০৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট অভিষিক্ত ইশান্ত লম্বা সময় ধরে বোলিং করার সামর্থ্যের জানান দেন পরের বছরই। বর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের পার্থ টেস্টে রিকি পন্টিংয়ের বিপক্ষে তার বোলিং স্পেলটি দিয়েই তিনি নজর কাড়েন ক্রিকেট বিশ্বে।

স্পেলটি ছিল সাত ওভারের, গতি-বাউন্স ও দুর্দান্ত লাইন-লেংথে ইশান্ত ছিলেন নিখুঁত। পন্টিং-মাইকেল ক্লার্ককে কাঁপিয়ে দেওয়ার পর আউট করেছিলেন তিনি।

তবে শুরুর সেই ধার একসময় হারিয়ে ফেলেন। কমে যায় কার্যকারিতা। ক্যারিয়ারের প্রথম প্রায় ৫০ টেস্টে তিনি ছিলেন অনেকটাই অধারাবাহিক। সেই তিনিই পরে নিজেকে পাল্টে ফেলেন নাটকীয়ভাবে। আগে তার মূল শক্তি ছিল টানা বোলিং ও বাড়তি বাউন্স। সঙ্গে দুই দিকেই সুইং যোগ করে হয়ে ওঠেন আরও আগ্রাসী ও কার্যকর।

ক্যারিয়ার পাল্টে দেওয়া সময় নিয়েও কথা বলেন ইশান্ত। সাসেক্সের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে গিয়ে কোচ হিসেবে পেয়েছিলেন জেসন গিলেস্পিকে। ইশান্ত জানালেন, সাবেক অস্ট্রেলিয়ান পেসারের কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষা তাকে বদলে দিয়েছে।

“আইপিএলে দল না পেয়ে বাসায় বসে দেখতে হয়েছে, সতীর্থরা  দুই মাস ধরে খেলছে। ভীষণ মানসিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। আমি তখন সিদ্ধান্ত নেই কাউন্টি খেলার। লোকে আমাকে ক্রমাগত বলে যেত, ফুলার লেংথে বল করতে, কিন্তু কেউই বলেনি কীভাবে করতে হয়। কাউন্টি ক্রিকেট খেলেই কেবল এখানে উন্নতি করা যায়।”