ব্যর্থ আশরাফুল, অলরাউন্ড নৈপুণ্যে উজ্জ্বল নাসির

গত মৌসুমে ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের নতুন মৌসুমের শুরুটাও ভালো হলো না মোহাম্মদ আশরাফুলের। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান যেতে পারলেন না দুই অঙ্কে। সৈকত আলির দারুণ ইনিংসের পর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে নিজেকে মেলে ধরলেন নাসির হোসেন। খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতিকে উড়িয়ে দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2020, 12:18 PM
Updated : 16 March 2020, 12:28 PM

নতুন মৌসুমে নিজেদের প্রথম ম্যাচ শেখ জামাল জিতেছে ৫৫ রানে। তাদের ২৭৬ রানের জবাবে খেলাঘর থামে ২২১ রানে।

বিকেএসপিতে সোমবার শেখ জামাল ব্যাটিংয়ে নেমেছিল টস হেরে। ম্যাচের সেরা সৈকত আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে খেলেন ৭৯ বলে ৮৩ রানের ইনিংস। মিডল অর্ডারে নাসির ৫৬ ও অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান করেন ৫৮ রান। নাসির পরে হাত ঘুরিয়ে নেন একটি উইকেট।

ব্যাটিংয়ে শেখ জামালের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। ষষ্ঠ ওভারে ইফরান হোসেনের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফেরেন আশরাফুল। ১৪ বলে তার সংগ্রহ ছিল কেবল ৩।

আরেক ওপেনার সৈকতের ব্যাটে এরপর বাড়তে থাকে রানের গতি। সোহরাওয়ার্দী শুভকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে তিনি গড়েন ৮৬ রানের জুটি।

দুজনই বিদায় নেন পরপর দুই ওভারে। ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৮৩ রানের ইনিংসটি সাজান সৈকত। ৩৫ বলে ৩ চারে ২৫ রান করেন সোহরাওয়ার্দী।

এরপরই শেখ জামাল তাদের সেরা জুটি পায় নাসির ও সোহানের কল্যাণে। দুজন শুরুতে কিছুটা সময় নেন। পরে বাড়ান রানের গতি।

মেহেদী হাসান মিরাজকে পরপর দুই ছক্কায় ওড়ান নাসির। এই অফ স্পিনারের পরের ওভারে আরেকটি ছক্কায় ডানহাতি ব্যাটসম্যান ফিফটি পূরণ করেন ৫২ বলে।

নাসিরের সামনে সুযোগ ছিল সেঞ্চুরির। কিন্তু আউট হন বাজে এক শটে। মাসুম খানের আগের বলে কিছুটা আঘাত পেয়েছিলেন। পরের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে বল তুলে দেন আকাশে। তার বিদায়ে ভাঙে ৯৬ রানের জুটি। ৫৭ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় তিনি করেন ৫৬ রান।

শেখ জামাল এরপর উইকেট হারায় নিয়মিত। ইফরানকে ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন তানবীর হায়দার। পঞ্চাশ পেরিয়ে থামেন সোহান। আক্রমণে ফিরে দারুণ এক ডেলিভারিতে তাকে বোল্ড করেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ।

৬ বলে রানের খাতা খোলা মাশরাফি বিন মুর্তজা মেটাতে পারেননি শেষের দাবি। জিয়াউর রহমানের ২১ বলে ২৪ রানের ইনিংসে ২৭৬ পর্যন্ত যেতে পারে শেখ জামাল।

৪৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে খেলাঘরের সেরা বোলার ইফরান। চোটের কারণে প্রায় ১১ মাস পর মাঠে নামা খালেদ নেন দুটি উইকেট। মিরাজ ৬৭ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য।

লক্ষ্য তাড়ায় খেলাঘর জয়ের আশা জাগাতে পারেনি কখনোই। অধিনায়ক জহুরুল ছাড়া আর কারও ব্যাটে দেখা যায়নি লড়াইয়ের ছাপ। তার ৫১ রান ছাড়া প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের আর কেউ যেতে পারেনি ত্রিশেও।

নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২টি করে উইকেট নেন দুই বাঁহাতি স্পিনার সোহরাওয়ার্দী ও ইলিয়াস সানি। নাসির ৬ ওভারে ১ উইকেট নেন ১৪ রান দিয়ে। ৭ ওভারের টানা স্পেলে ৩৪ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন মাশরাফি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শেখ জামাল: ৫০ ওভারে ২৭৬/৯ (সৈকত ৮৩, আশরাফুল ৩, সোহরাওয়ার্দী ২৫, নাসির ৫৬, সোহান ৫৮, তানবীর ৪, মাশরাফি ১, জিয়াউর ২৪, ইলিয়াস সানি ৪, সালাউদ্দিন ৬*, ইবাদত ৩*; খালেদ ১০-০-৪৮-২, টিপু ১০-০-৫০-১, ইফরান ১০-১-৪৩-৪, মিরাজ ১০-০-৬৭-০, মাসুম ১০-০-৬৪-২)।

খেলাঘর: ৫০ ওভারে ২২১/৯ (ইমতিয়াজ ২৯, সাদিকুর ১২, জহুরুল ৫১, ফরহাদ ৬, মিরাজ ৭, সালমান ২৪, রাফসান ৯, মাসুম ৩২, ইফরান ২৪, টিপু ৮*, খালেদ ২*; মাশরাফি ৭-১-৩৪-০, নাসির ৬-১-১৪-১, সোহরাওয়ার্দী ৭-০-২৬-২, ইবাদত ৯-০-৪৫-১, ইলিয়াস সানি ৮-০-৩৫-২, সালাউদ্দিন ৯-০-৩৬-২, তানবীর ৩-০-১৪-০, আশরাফুল ১-০-৯-০)।

ফল: শেখ জামাল ৫৫ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: সৈকত আলি।