নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের চোট ও অনুপস্থিতি মিলিয়ে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ৬টি টেস্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু ব্যাট হাতে ফর্ম হারিয়ে তিনি হারিয়েছেন দলে জায়গা।
টেস্ট দলে তার জায়গা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেকবারই। ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে বাদ পড়েছিলেন এক দফায়। পরে ফিরেছেন। আবারও প্রশ্নের অবকাশ জাগিয়েছে তার পারফরম্যান্স। তবে একটা পর্যায়ে কিছুদিনের জন্য মনে হচ্ছিল, টেস্ট ক্রিকেটে বুঝি অবশেষে থিতু হতে পেরেছেন। ২০১৮ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরিতে দলে জায়গা টিকিয়ে ফেলেন।
পরের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আরেকটি সেঞ্চুরিতে মোটামুটি পোক্ত করেন জায়গা। গত বছরের শুরুতে নিউ জিল্যান্ড সফরে হ্যামিল্টনে উপহার দেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। পরের টেস্টে করেন ফিফটি। আবারও হয়ে ওঠেন টেস্ট দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
কিন্তু এরপর ফিরে এসেছে ব্যর্থতার কালো ছায়া। আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে দুই ইনিংসে রান পাননি। ভারতের গিয়ে দুই টেস্টে পাননি ফিফটির দেখা। সবশেষ পাকিস্তানেও দুই ইনিংসে ফিরতে পারেননি ছন্দে। শেষ ইনিংসে আউট হয়েছেন শূন্য রানে, হ্যাটট্রিক বলের মুখোমুখি হয়ে উইকেট বিলিয়ে এসেছেন বাজে শটে।
সেটির খেসারত দিতে হয়েছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের বাংলাদেশ দল থেকে বাদ পড়ে। এর মধ্যে বিসিএলের একটি ম্যাচ খেলেও পাননি রানের দেখা। সবশেষ ধাক্কা হয়ে এসেছে, বিসিবির লাল বলের চুক্তি থেকে বাদ পড়া। যেটির মানে, আপাতত টেস্ট ক্রিকেটের ভাবনায় তিনি নেই। জাতীয় দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ও নির্বাচকরাও আপাতত তাকে টেস্টে ভাবছেন না বলেই ইঙ্গিত মিলেছে।
সামনেই একটি টেস্ট খেলতে করাচি যাওয়ার কথা বাংলাদেশ দলের। জুনে অস্ট্রেলিয়া আসবে দুই টেস্ট খেলতে। জুলাই-অগাস্টে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে বাংলাদেশ খেলবে তিন টেস্ট। অতি নাটকীয় কিছু না হলে একটিতেও হয়তো থাকবেন না মাহমুদউল্লাহ।
নিজের দাবি জানানোর মতো এমন কোনো সুযোগও নেই তার সামনে। জাতীয় লিগ ও বিসিএল শেষ হয়ে গেছে। পরের মৌসুমে হয়তো এসব টুর্নামেন্টে দারুণ কিছু করলে ও দলের প্রয়োজন হলে নির্বাচকদের ভাবনা বদলাতে পারে। তবে বয়স পেরিয়ে গেছে ৩৪, বাংলাদেশের বাস্তবতায় এটিও তার বিপক্ষে।
সব মিলিয়ে সাদা পোশাকে মাহমুদউল্লাহর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তিনি নিজেও স্পষ্ট কোনো ছবি দেখতে পাচ্ছেন না সামনে তাকিয়ে।
তার নেতৃত্ব জিম্বাবুয়েকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সব ঠিক থাকলে হয়তো আগামী অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তার হাতে থাকবে দলের ঝান্ডা। কিন্তু টেস্টে? মাহমুদউল্লাহ অন্ধকারে এগোনোর চ্যালেঞ্জই নিতে চান।
“আমি এখনও নিশ্চিত নই… (টেস্টে ফেরার পথ)। আমি শুধু এটুকু বলব, আমি চেষ্টা করব যেন লড়াই করে নিজের জায়গাটা নিতে পারি। কারণ পারফরম্যান্সই সবকিছু।”