রশিদকে ছাপিয়ে ও’ব্রায়েনের ছক্কায় আইরিশদের জয়

আফগানিস্তান আর আয়ারল্যান্ডের লড়াই প্রায়ই হাজির হয় রোমাঞ্চ ও নাটকীয়তার পসরা সাজিয়ে। তেমনই এক দফা নাটক মঞ্চস্থ হলো গ্রেটার নয়ডায়। হারের কিনারায় দাঁড়িয়ে রশিদ খানের ছক্কা ও চারে ম্যাচ টাই করল আফগানিস্তান। কিন্তু সুপার ওভারে সেই রশিদের শেষ বলেই ছক্কা মেরে আয়ারল্যান্ডকে জয় এনে দিলেন কেভিন ও’ব্রায়েন।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2020, 01:51 PM
Updated : 10 March 2020, 02:02 PM

দুই দলের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে মঙ্গলবার সুপার ওভারে জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াল আয়ারল্যান্ড। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিল আফগানিস্তান। 

মূল ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ১৪২ রানে আটকে আফগানিস্তান ছিল সহজ জয়ের পথে। কিন্তু পরে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় আইরিশরা। শেষ ওভারে আফগানদের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান, শেষ ৩ বলে ১২।

তরুণ আইরিশ পেসার জশ লিটল স্নায়ুর চাপে ভুগেই হয়তো ওয়াইড করে বসেন দুটি। চতুর্থ বলে ছক্কা মারেন রশিদ। শেষ বলে আফগান অধিনায়ক কাভার দিয়ে চার মেরে ম্যাচ করেন টাই।

সুপার ওভারে ক্রেইগ ইয়াংয়ের দুর্দান্ত বোলিংয়ের বিপক্ষে কোনো বাউন্ডারি পায়নি আফগানিস্তান, ওভার থেকে আসে মাত্র ৮ রান। সেই রানেই আবার লড়াই জমে তুমুল। দ্বিতীয় বলে চার হজম করলেও তৃতীয় বলে পল স্টার্লিংকে গুগলিতে ফেরান রশিদ। শেষ বলে আইরিশদের প্রয়োজন ছিল ৩ রান। রশিদের মাথার ওপর দিয়ে বল সীমানা ছাড় করেন ও’ব্রায়েন।

১৪৩ রানের লক্ষ্যে আফগানদের হয়ে ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ খেলেন বিধ্বংসী ইনিংস। ২৯ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৪২। তবে আরেক ওপেনার উসমান গনি ছিলেন মন্থর। করেন ২৪ বলে ১৮ রান।

৬০ রানের উদ্বোধনী জুটির পর দুই ব্যাটসম্যানকে একই ওভারে ফেরান গ্যারেথ ডেলানি। করিম জানাত রানের গতিতে দম দিতে গিয়ে ফেরেন দ্রুত। মাঝের এক ওভারে দুই উইকেট তুলে নিয়ে আফগানদের চেপে ধরেন অফস্পিনার সিমি।

অধিনায়ক আসগর আফগান খেলেন শেষ ওভার পর্যন্ত। তবে পারেননি দলকে জয়ের স্বাদ দিতে। আউট হয়েছেন ৩০ বলে ৩২ রান করে। তখন ম্যাচ হেলে পড়েছিল আইরিশদের দিকে। শেষ তিন বলে চিত্র বদলে দেন রশিদ।

আইরিশরা ম্যাচের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল টস জিতে। চাপে পড়ে যায় তারা শুরুতেই। বিপজ্জনক পল স্টার্লিংকে শুন্য রানে ফেরান নাভিন উল হক। নিজের পরের ওভারে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নিকেও ফেরান এই পেসার।

সফরকারীদের রান বাড়ান কেভিন ও’ব্রায়েন, ডেলানি ও হ্যারি টেক্টর। ২১ বলে ২৬ করেন ও’ব্রায়েন। এই ওপেনারকে ফেরান এই ম্যাচে অভিষিক্ত লেগ স্পিনার কাইস আহমেদ।

২৯ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৩৭ রান করা ডেলানি শিকার হন রশিদের। তাণ্ডবের আভাস দেয়া টেক্টরকে ফেরান কাইস। ২২ বলে করেছেন তিনি ৩১।

শেষ দিকে দ্রুত রান তুলতে না পারেননি আইরিশ ব্যাটসম্যানরা। দল থামে দেড়শ রানের আগে।

টি-টোয়েন্টির ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন নাভিন, ২১ রানে নেন তিন উইকেট। অভিষিক্ত কাইসও নিয়েছেন ২৫ রানে তিনটি।

আইরিশদের পুঁজি ছিল মাঝারি। তখন কে জানত, ওই রানেই ম্যাচ ছড়াবে এত উত্তেজনা!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আয়ারল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৪২/৮ (স্টার্লিং ০, ও’ব্রায়েন ২৬, বালবার্নি ৯, ডেলানি ৩৭, টেক্টর ৩১, টাকার ৯, গেটকেট ৫, সিমি ১২*, ম্যাককার্থি ০, ইয়াং ৭*; নাভিন ৪-০-২১-৩, মুজিব ৪-০-৩২-১, জানাত ২-০-১৭-০, কাইস ৪-০-২৫-৩, রশিদ ৪-০-২৪-১, নাইব ২-০-২০-০)

আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৪২/৭ (গুরবাজ ৪২, উসমান ১৮, জানাত ১৭, আসগর ৩২, নবি ৪, নাজিবউল্লাহ ০, নাইব ১০, রশিদ ১৪*, কাইস ০*; ডেলানি ৪-০-২১-২, ম্যাককার্থি ৪-০-২১-১, সিমি ৪-০-৩৭-২, লিটল ৪-০-৩৩-১, ইয়াং ৪-০-২৯-১)

ফল: ম্যাচ টাই (সুপার ওভারে আয়ারল্যান্ড জয়ী)

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে আফগানিস্তান ২-১তে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: কেভিন ও’ব্রায়েন

ম্যান অব দা সিরিজ: রহমানউল্লাহ গুরবাজ