দক্ষিণ আফ্রিকায় হোয়াইটওয়াশড অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ব্যাটিংয়ে একাই লড়লেন মার্নাস লাবুশেন। তার দারুণ সেঞ্চুরির পরও দল পেল না বড় পুঁজি। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে লক্ষ্যটা নাগালে রাখলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। বাকি কাজটা সহজেই সারলেন ব্যাটসম্যানরা। ওয়ানডে সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করে ছাড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2020, 03:32 PM
Updated : 7 March 2020, 04:07 PM

পচেফস্ট্রুমে শনিবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে ৬ উইকেটে। ২৫৫ রানের লক্ষ্য প্রোটিয়ারা পেরিয়ে যায় ২৭ বল হাতে রেখেই।

তিন বা এর বেশি ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার দক্ষিণ আফ্রিকায় হোয়াইটওয়াশড হলো অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ২০১৬ সালের সফরে তারা হেরেছিল ৫-০ ব্যবধানে।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডারের কেউ জ্বলে উঠতে পারেননি। চার নম্বর নেমে দলকে টেনেছেন লাবুশেন। আগের ম্যাচে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পাওয়া ব্যাটসম্যান এবার করেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। তার ১০৮ রান ছাড়া আর কেউ যেতে পারেননি চল্লিশেও। 

শুরুটা ডেভিড ওয়ার্নারকে দিয়ে। পঞ্চম ওভারে আনরিক নরকিয়ার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তিনে নেমে বেশিক্ষণ টেকেননি স্টিভেন স্মিথ। আন্দিলে ফেলুকওয়ায়োর সোজা বল মিস করে এলবিডব্লিউ হন সাবেক অধিনায়ক।

অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ফেরেন থিতু হয়ে। তার ৪৮ বলে ২২ রানের ইনিংস শেষ হয় অভিষিক্ত ডারিন ডুপাভিলনকে প্রথম উইকেট দিয়ে। ৫৫ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে সফরকারীরা।

লাবুশেনের লড়াই শুরু এরপরই। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান মিডল ও লোয়ার-মিডল অর্ডারদের নিয়ে এগিয়ে নেন দলকে। ডার্সি শর্টের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৮১ রানের জুটিতে গড়েন প্রতিরোধ। বাঁহাতি স্পিনে ৩৬ রান করা শর্টকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন জন-জন স্মাটস।

পঞ্চম উইকেটে মিচেল মার্শের সঙ্গে ৫৩ রানের আরেকটি কার্যকরী জুটি গড়েন লাবুশেন। ২টি চার ও একটি ছক্কায় ৩২ রান করে রান আউট হন মার্শ। কিপার-ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স কেয়ারি ফেরেন শূন্য রানে।

সপ্তম উইকেটে জাই রিচার্ডসনের সঙ্গে ৬৪ রানের জুটিতে দলের স্কোর আড়াইশ পার করার পাশাপাশি লাবুশেন করেন সেঞ্চুরি। ৪৮তম ওভারে ডাবল নিয়ে ঠিক ১০০ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এই ব্যাটসম্যান।

শেষ ওভারে নরকিয়ার স্লোয়ারে বোল্ড হওয়া লাবুশেন ঠিক ১০৮ বলে করেন ১০৮ রান। ইনিংসে ছিল ৮টি চার। ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন জাই রিচার্ডসন।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২টি করে উইকেট নেন নরকিয়া ও স্মাটস।

রান তাড়ায় ৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ভালো সূচনা এনে দেন কুইন্টন ডি কক ও ইয়ানেমান মালান। নিজের টানা দুই ওভারে দুই ওপেনারকে ফেরান একাদশে ফেরা জশ হেইজেলউড।

আলগা শটে বোল্ড হওয়া ডি কক করেন ২৬ রান। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মালান এবার ২৩ রান করে হন কট বিহাইন্ড।

তৃতীয় উইকেটে ৯৬ রানের জুটিতে স্বাগতিকদের জয়ের পথে এগিয়ে নেন স্মাটস ও কাইল ভেরেইন। ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করার পরই অ্যাডাম জ্যাম্পাকে ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে ফেরেন ভেরেইন। ৫০ বলে ৩টি করে চার-ছক্কায় ডানহাতি ব্যাটসম্যান করেন ৫০ রান।

স্মাটস ৬২ বলে ফিফটি করার পর টেনে নিয়েছেন ইনিংস। সেঞ্চুরির হাতছানিও ছিল। কিন্তু কেন রিচার্ডসনকে ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে ক্যাচ দেন ৮৪ রানে। ৯৮ বলে ১২ চারে সাজান ইনিংস। তার বিদায়ে ভাঙে হাইনরিখ ক্লাসেনের সঙ্গে ৭৯ রানের জুটি।

ডেভিড মিলারকে নিয়ে বাকি কাজটা সারেন ক্লাসেন। মার্শকে টানা তিন বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ম্যাচের ইতি টানা ক্লাসেন অপরাজিত থাকেন ৬৮ রানে। ইনিংসে ১০টি চারের সঙ্গে ছক্কা একটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৫৪/৭ (ওয়ার্নার ৪, ফিঞ্চ ২২, স্মিথ ২০, লাবুশেন ১০৮, শর্ট ৩৬, মার্শ ৩২, কেয়ারি ০, জাই রিচার্ডসন ২৪*, কেন রিচার্ডসন ০*; নরকিয়া ৭-০-৩৫-২, সিপামলা ৮-০-৪০-০, ডুপাভিলন ৬-০-২১-১, ফেলুকওয়ায়ো ৭-০-৪৯-১, মহারাজ ১০-০-৪৫-০, ক্লাসেন ৩-০-১৯-০, স্মাটস ৯-১-৪২-২)  

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৫.৩ ওভারে ২৫৮/৪ (মালান ২৩, ডি কক ২৬, স্মাটস ৮৪ , ভেরেইন ৫০, ক্লাসেন ৬৮*, মিলার ৩*; জাই রিচার্ডসন ১০-১-৫৮-০, হেইজেলউড ১০-১-৩৭-১, কেন রিচার্ডসন ৯-০-৬৩-১, জ্যাম্পা ১০-০-৪৫-১, মার্শ ১.৩-০-২১-০, ফিঞ্চ ২-০-১১-০, শর্ট ৩-০-২০-০)

ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জয়ী দক্ষিণ আফ্রিকা

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: জন-জন স্মাটস

প্লেয়ার অব দা সিরিজ: হাইনরিখ ক্লাসেন