বাংলাদেশের দুই ওপেনারের ব্যাটিং দ্যুতিতে ঝলমল করল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের সবুজ প্রান্তর। ঝড় উঠল রেকর্ড বইয়েও। কতগুলো পাতায় যে হয়ে গেল ওলট-পালট!
আগের ম্যাচে ১৫৮ রানের রেকর্ডর পর তামিম বলেছিলেন, “এবারের রেকর্ড ২-৩ বছরেই ভেঙে যাবে। হতে পারে আগামী বছরও।” তামিম হয়তো ভাবতে পারেননি, পরের বছর নয়, পরের ম্যাচেই অতীত হয়ে যাবে তার রেকর্ড!
তামিমকে উইকেটে রেখেই তাকে পেরিয়ে গেলেন লিটন। অভিনন্দনও সবার আগে পেলেন তামিমের কাছ থেকেই।
তামিম ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যানের দেড়শ রানের ইনিংস ছিল না আগে। এবার লিটন সেই অনির্বচনীয় স্বাদ পেলেন। এগিয়ে গেলেন আরও। বৃষ্টিতে ইনিংস নেমে এসেছিল ৪৩ ওভারে, তার পরও হাতছানি দিচ্ছিল ডাবল সেঞ্চুরি!
তামিমকে পেছনে ফেলেছেন আরেকটি জায়গাতেও। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার সময়ও লিটনের ইনিংসে ছিল না কোনো ছক্কা। সেঞ্চুরির পর হাওয়ায় ভাসিয়ে বল সীমানা ছাড়া করলেন ৮ বার!
বাংলাদেশের হয়ে এক ইনিংসে ৭ ছক্কার আগের রেকর্ড তামিম করেছিলেন ২০১০ সালে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ৯৫ রানের ইনিংসে।
রেকর্ডের এই উৎসবে সামিল হয়েছেন তামিমও। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে সেঞ্চুরির কীর্তি অনেক দিন থেকেই তার। সেটিকে ধরাছোঁয়ার আরেকটু বাইরে নিলেন ত্রয়োদশ শতকে।
টানা দুই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করলেন তিনি দুই দফায়। এবারের আগে ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে করেছিলেন টানা দুই সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের আর কারও নেই এই কীর্তি।
ব্যক্তিগত সব অর্জনের পাশপাশি দুজন যৌথভাবেও সমৃদ্ধ হয়েছেন দারুণ সব প্রাপ্তিতে। ওয়ানডেতে এই প্রথম সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার।
দুজনের জুটি ১৭০ রান ছাড়ানোর পরই গড়েছে উদ্বোধনী জুটির রেকর্ড। সেই ১৯৯৯ সালে শাহরিয়ার হোসেন ও মেহরাব হোসেনের জুটি পেছনে পড়েছে অবশেষে।
বাংলাদেশের হয়ে যে কোনো উইকেটে আগের সেরা ছিল ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউ জিল্যোন্ডের বিপক্ষে কার্ডিফের স্মরণীয় জয়ে ২২৪ রানের জুটি।
উদ্বোধনী জুটির বিশ্বরেকর্ডে তামিম ও লিটনের জুটি জায়গা করে নিয়েছে তিনে।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৪৩ ওভার ব্যাটিং করেও দুজনের ব্যাটিং তাণ্ডবে বাংলাদেশ তুলেছে ৩২২ রান। প্রথমবার টানা তিন ম্যাচে তিনশ ছুঁতে পারল বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচে ছিল ৩২১ ও ৩২২।
বাংলাদেশের ইনিংসে ছক্কা ছিল মোট ১৪টি, এটিও নিজেদের রেকর্ড। গতবছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ডাবলিনের মালাহাইডে ছক্কা ছিল ১১টি।