তামিমের রেকর্ডে বাংলাদেশের রেকর্ড

আউট হওয়ার পর চোখেমুখে ফুটে উঠল বিরক্তি। ব্যাটের দিকেও তাকাচ্ছিলেন বারবার, বল লাগেনি ঠিক জায়গায়। হতাশ হয়ে ফিরছিলেন তামিম ইকবাল। অথচ ততক্ষণে তার নাম উঠে গেছে রেকর্ড বইয়ে! তুমুল সমালোচনা ও প্রচণ্ড চাপ সামলে তামিম খেললেন রেকর্ড গড়া ইনিংস। বাংলাদেশের রান আবারও উঠল রেকর্ড উচ্চতায়।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিসিলেট থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2020, 11:34 AM
Updated : 3 March 2020, 11:49 AM

১৩৭ বলে ১৫৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন তামিম। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সিলেটে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ৫০ ওভারে করেছে ৮ উইকেটে ৩২২ রান।

আগের ম্যাচেই ৩২১ রান তুলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ। পরের ম্যাচেই তা পেছনে পড়ে গেল।

দেশের হয়ে নিজের আগের রেকর্ড ১৫৪ টপকে গেছেন তামিম। বাংলাদেশের হয়ে দেড়শ রানের একটি ইনিংসও নেই আর কারও।

উইকেট আগের ম্যাচের মতোই ব্যাটিং সহায়ক, আবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ঠিক আগের ম্যাচের মতোই প্রথম ওভারে দৃষ্টিনন্দন একটি বাউন্ডারিতে শুরু করেন লিটন।

তবে এ দিন আর বেশিদূর এগোতে পারেননি ডানহাতি। তামিমের ড্রাইভে বোলারের হাতের ছোঁয়ায় নন স্ট্রাইক প্রান্তে রান আউট হয়ে যান দুর্ভাগ্যজনকভাবে।

তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত রান আউট হন তামিমের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে। তবে তামিম বাউন্ডারির ফোয়ারায় শুরু করেছিলেন বলেই ২ উইকেট হারানোর পরও দলের স্কোরকার্ডের চেহারা ছিল বেশ ভালো।

আগের ম্যাচে দশম ওভারে গিয়ে প্রথম বাউন্ডারি পেয়েছিলেন তামিম। এই ম্যাচে ১০ ওভারেই বাউন্ডারি মেরেছেন ১০টি। ৪২ বলে স্পর্শ করেছেন ফিফটি।

চারে নেমে মুশফিকুর রহিম শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। নিজের মতোই সুইপ-রিভার্স সুইপে রান বাড়িয়েছেন দ্রুত।

বড় কিছুর আভাস ছিল মুশফিকের ব্যাটেও। কিন্তু তার ৫০ বলে ৫৫ রানের ইনিংস শেষ হয়েছে হতাশাজনক শটে। অফ স্পিনার ওয়েসলি মাধেভেরেকে ছক্কা মারতে গিয়ে ধরা পড়েছেন সীমানায়। ভেঙ্গেছে ৮৭ রানের জুটি।

পরের জুটিতে এসেছে শতরান। তামিমকে সঙ্গ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে ছন্দ পেতে কিছুটা সময় লেগেছে মাহমুদউল্লাহর। সে সময় রানের গতি কমে যায় কিছুটা। জুটিতে এসেছে ১০৬ রান।

১০৬ বলে তামিম স্পর্শ করেছেন ক্যারিয়ারের দ্বাদশ সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৭ হাজার রান স্পর্শ করেছেন সেঞ্চুরির আগেই।

সেঞ্চুরির পর তামিম হয়ে ওঠেন আরও অপ্রতিরোধ্য। তুলোধুনো করেছেন জিম্বাবুয়ের বোলারদের। টিনোটেন্ডা মুটুমবোদজির টানা চার বলে মেরেছেন তিন চার ও এক ছক্কা। ওই ওভার থেকে এসেছে ২৪ রান।

মাহমুদউল্লাহ থিতু হলেও শেষ করে আসতে পারেননি কাজ। ৫৭ বলে করেছেন ৪১। তামিমকে থামানো যায়নি। ১৩২ বলে ছুঁয়েছেন দেড়শ। পরের বলেই ছক্কায় নতুন রেকর্ড। ওই ওভারেই আরেকটি ছক্কা মারতে গিয়ে ধরা পড়েছেন সীমানায়।

তার ইনিংসে চার ছিল ২০টি, বাংলাদেশের হয়ে এক ইনিংসে যা সবচেয়ে বেশি চারের রেকর্ড। ছক্কা ৩টি।

শেষ দিকে রান যা বাড়ানোর, করেছেন মোহাম্মদ মিঠুন একাই। ঝড় তুলতে পারেননি মিরাজ-মাশরাফিরা। শেষ ১০ ওভারে এসেছে ৮৩ রান, উইকেট পড়েছে ৫টি। আগের ম্যাচে ঝড়ো ফিফটির পর মিঠুন এবার করেছেন ১৮ বলে অপরাজিত ৩২।

একসময় স্কোর মনে হচ্ছিল পৌঁছে যাবে সাড়ে তিনশর কাছে। সেটি হয়নি। তবে এই রানও হওয়ার কথা জিম্বাবুয়ের ধরাছোঁয়ার বাইরে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩২২/৮ (তামিম ১৫৮, লিটন ৯, শান্ত ৬, মুশফিক ৫৫, মাহমুদউল্লাহ ৪১, মিঠুন ৩২*, মিরাজ ৫, মাশরাফি ১, তাইজুল ০, শফিউল ৫*; মুম্বা ১০-০-৬৪-২, টিশুমা ৫-০-৩৫-১, টিরিপানো ৮-০-৫৫-২, মাধেভেরে ৭-০-৩৮-১,  রাজা ১০-০-৫৯-০, উইলিয়ামস ৭-০-৩৫-০, মুটুমবোদজি ৩-০-৩৪-০)।