জয়ের সেঞ্চুরি হবে মুশফিকের ‘অন্যতম সেরা অর্জন’

ঘণ্টাখানেক পুরোদস্তুর নেট সেশন। এরপর আরও মিনিট দশেক স্রেফ নক করা। লম্বা সময় নেটে ঘাম ঝরিয়ে ধীর পায়ে ড্রেসিং রুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন মুশফিকুর রহিম। তার কাছে এগিয়ে গিয়ে সেঞ্চুরির জন্য আগাম অভিনন্দন জানাতেই কৌতূহলের চোখে তাকালেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। আরেক ম্যাচ জিতলেই স্পর্শ করবেন ওয়ানডে জয়ের সেঞ্চুরি, এটি জানার পর তার ক্লান্ত মুখে ফুটে উঠল চওড়া হাসি, “তাই নাকি? জানতাম না তো! দারুণ ব্যাপার…।”

ক্রীড়া প্রতিবেদকসিলেট থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2020, 12:26 PM
Updated : 2 March 2020, 04:01 PM

বাংলাদেশ ক্রিকেটে দীর্ঘ পথচলায় রেকর্ড, অর্জনের ছবি অনেক এঁকেছে তার ব্যাট। এবার তিনি দাঁড়িয়ে অনন্য এক মাইলফলকের সামনে, যেখানে এক বিন্দুতে মিশছে তার নিজের ও দলের সাফল্য। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে জয়ের সেঞ্চুরি!

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে জয়টি ছিল বাংলাদেশের হয়ে মুশফিকের ৯৯তম জয়। পরের ম্যাচে প্রত্যাশিত জয়টি পেলেই ধরা দেবে ব্যতিক্রমী এই সেঞ্চুরি।

দ্বিতীয় ওয়ানডের আগের দিন সোমবার বাংলাদেশ দলের ছিল ঐচ্ছিক অনুশীলন। তবে মুশফিক তো ঐচ্ছিক অনুশীলনে বরাবরই নিয়মিত মুখ। এ দিনও দীর্ঘ সময় ঝালিয়ে নিলেন ব্যাটিং। এরপর যখন শততম জয়ের হাতছানির কথা জানলেন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন, নিজের কীর্তিতে তিনি অভিভূত।

“লম্বা সময় বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পেরেছি বলেই ১০০ জয় হতে যাচ্ছে। মাশরাফি ভাই, সাকিব-তামিমরাও অনেক বছর ধরে খেলছে। আমি সৌভাগ্যবান যে সব ঠিক থাকলে সবার আগে ১০০ জয় আমার হচ্ছে।”

নিজের সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারের সেরা প্রাপ্তিগুলোর একটি হিসেবেই এই অর্জনকে রাখছেন মুশফিক।

“দলের জয়ই আমাদের কাছে শেষ কথা। ১০০টি জয় দেখতে পারছি দলের, অনেক বড় ব্যাপার এটি। আমার ক্যারিয়ারের সেরা অর্জনগুলোর একটি হবে এটি।”

২১৭ ওয়ানডে খেলে আপাতত ৯৯ জয় মুশফিকের। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে তার পরেই আছেন মাশরাফি। ৯৭টি ওয়ানডে জয়ের স্বাদ পেয়েছেন তিনি, তবে বাংলাদেশের হয়ে জিতেছেন ২১৬ ম্যাচের ৯৫টি। তার বাকি দুটি জয় এশিয়া একাদশের হয়ে আফ্রিকা একাদশের বিপক্ষে।

নিষেধাজ্ঞার কারণে আপাতত ক্রিকেটের বাইরে থাকা সাকিব আল হাসানও আছেন শততম জয়ের খুব কাছে। বাংলাদেশের সবসময়ের সেরা ক্রিকেটার ২০৬ ওয়ানডে খেলে জয়ের সাক্ষী হয়েছেন ৯৪ ম্যাচে।

২০৫ ম্যাচে বাংলাদেশের ৮৬ জয় দেখেছেন তামিম ইকবাল, ১৮৬ ম্যাচে ৮৩টি মাহমুদউল্লাহ।

বাংলাদেশের হয়ে জয়ের ফিফটি আছে আর কেবল দুই জনের। ১৫৩ ওয়ানডে খেলে আব্দুর রাজ্জাক জয়ী হিসেবে মাঠ ছেড়েছেন ৬২ ম্যাচে, ১৭৫ ম্যাচে ৫৫ বার মোহাম্মদ আশরাফুল।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অবশ্য এই রেকর্ড চমক জাগানিয়া কিছু নয়। সবচেয়ে বেশি ২৬২ ওয়ানডে জয়ের রেকর্ড আছে রিকি পন্টিংয়ের। দুইশর বেশি ওয়ানডেতে জয়ী দলে ছিলেন আরও ১০ ক্রিকেটার। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় এই রেকর্ড বিশেষ কিছু, বললেন মুশফিকও।

“একসময় জয়ের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হতো আমাদের। পরে নিয়মিত জিততে শিখেছি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এত লম্বা সময় ধরে খেলতে পারাও বড় ব্যাপার। ফর্ম-ফিটনেস সবকিছু মিলিয়ে এতদিন ধরে খেলা সহজ নয়। সেদিক থেকে অবশ্য নিজেকে আবার সৌভাগ্যবান বলব এবং অবশ্যই এটি বড় প্রাপ্তি।”