‘আমি দ. আফ্রিকা থেকে এসেছি’, বোর্ড সভাপতির কথার পর বললেন ডমিঙ্গো

ম্যাচের আগের দিনই একাদশ জানিয়ে দিতে হবে বোর্ড সভাপতিকে। জানাতে হবে ব্যাটিং অর্ডারসহ ম্যাচের যাবতীয় পরিকল্পনা। যা বলা হবে, ম্যাচে থাকতে হবে সেটির প্রতিফলন। বদলানো যাবে না কিছুই। এমন হাঁসফাঁস করা বাধ্যবাধকতায় একজন কোচের দম বন্ধ হয়ে আসার কথা। রাসেল ডমিঙ্গো হেসে মনে করিয়ে দিলেন, তিনি এসেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে, যেখানেও কোচের কাজ খুব কঠিন!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2020, 10:08 AM
Updated : 21 Feb 2020, 03:00 PM

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান দিন দুয়েক আগে সংবাদ সম্মেলনে অনেকটা হুমকির সুরেই টিম ম্যানেজমেন্টের উদ্দেশে বলেন, একাদশ থেকে শুরু করে পরিকল্পনার খুঁটিনাটি তাকে ম্যাচের আগের দিনই জানাতে হবে। অথচ ক্রিকেটে ম্যাচের দিন উইকেট দেখে, টসের ওপর নির্ভর করে অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ম্যাচ চলার সময়ও পরিস্থিতি বুঝে বদলাতে হয় অনেক পরিকল্পনা। বিসিবি সভাপতি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তাকে জানানো পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশ কোচ ও অধিনায়কের সংবাদ সম্মেলনের অনেকটা জুড়ে থাকল বোর্ড সভাপতির মন্তব্যের প্রসঙ্গ। কোচের কাছে শুরুর প্রশ্নই ছুটে গেল, ‘বোর্ড সভাপতিকে কি একাদশ জানিয়েছেন?’ মুচকি হাসিতে ‘বাউন্সারটি’ না খেলে ছেড়ে দিলেন ডমিঙ্গো।

“বোর্ড সভাপতির সঙ্গে আমার আলোচনা যা হয়, তিনি দল নিয়ে খুবই আবেগপ্রবণ। তিনি চান, দল সত্যিই ভালো করুক। আজকে এখনও পর্যন্ত তার সঙ্গে কথা হয়নি। গত সপ্তাহে খুব ভালো অনুশীলন সেশন হয়েছে আমাদের। তবে হ্যাঁ, এখও পর্যন্ত তার সঙ্গে কথা হয়নি।”

ডমিঙ্গো এড়িয়ে যেতে চাইলেও এই প্রসঙ্গ এলো আবার। এবার ডমিঙ্গো চেষ্টা করলেন বাউন্সারে হুক করার।

“আমাকে এখনও কেউ বলেনি যে দল নিয়ে সবকিছু কাউকে বলতে হবে। এমন কিছু করতে হবে, সেই ধারণা আমার নেই। যেটি বললাম, বোর্ড সভাপতি দল নিয়ে খুব আবেগপ্রবণ, আমিও একইরকম। আমাকে তারা পারিশ্রমিক দেন কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য, নিজের কাজ করার জন্য। আমি সেসব করব।”

ডমিঙ্গোর জায়গা থেকে সরাসরি উত্তর না দেওয়াই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ ক্রিকেটের বাস্তবতায় ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকাদের কথায় আপত্তি করা কঠিনই। তবে তার দাবি, এমন হস্তক্ষেপের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া তার জন্য নতুন নয়!

বাংলাদেশের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ ছিলেন ডমিঙ্গো। সেখানেও কোটা পদ্ধতিসহ আরও অনেক বিতর্ক সামলে পরিচালনা করতে হয়েছে দল। কোচ মনে করিয়ে দিলেন সেটিই।

“ভুলে যাবেন না, আমি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছি! ওখানেও অনেক ঝামেলা চলে। এমন নয় যে আমি ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছি, যেখানে সবকিছুই সহজ, নিজের ইচ্ছেমত সব করা যায়। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও কাজটা ছিল কঠিন। দল নির্বাচন সহজ ছিল না। ওখানেও লোকের অনেক মতামত ও ইস্যু থাকে। এসব সামলানো আমার কাজেরই অংশ।”

“আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো, অধিনায়ক ও ক্রিকেটারদের এসব থেকে দূরে রাখা। আমাকে হতে হবে মাঝের ব্যক্তি। অনেক বড় ভূমিকা এটি, তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় আমি করেছি। ওখানেও অনেক ঝামেলা ও চ্যালেঞ্জ থাকে, আমার জন্য নতুন কিছু নয়। আমি এসবে অভ্যস্ত।”

কোচ এসব থেকে অধিনায়ক ও ক্রিকেটারদের দূরে রাখতে চাইলেও, সংবাদ সম্মেলনে করা মন্তব্য ক্রিকেটারদের স্পর্শ করারই কথা। অধিনায়ক মুমিনুল হক অবশ্য এই প্রসঙ্গ পুরোপুরিই এড়িয়ে গেলেন।

“আমি উনার মন্তব্য শুনিনি। আপনাদের কাছ থেকেই শুনছি। ঠিক জানি না। আমার জন্য মন্তব্য করা কঠিন।”