পাকিস্তানে পরের টেস্ট মাথায় রেখে দলে ৫ পেসার

ঘরের মাঠে কোনো টেস্টের জন্য পাঁচ পেসার দলে রাখা বাংলাদেশের জন্য বিরল। সেই কাজ করার পর প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন জানালেন, পাকিস্তান সফরের পরের টেস্টের প্রস্তুতির জন্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের দলে রাখা হয়েছে পাঁচ পেসার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2020, 12:16 PM
Updated : 16 Feb 2020, 05:02 PM

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামী শনিবার শুরু হতে যাওয়া একমাত্র টেস্টের জন্য ১৬ সদস্যের দল দিয়েছে বিসিবি। রোববার ঘোষিত দলে আবু জায়েদ চৌধুরী ও ইবাদত হোসেনের সঙ্গে আছেন মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ।

২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্টে স্পিন সহায়ক উইকেট বানিয়ে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার কী তাহলে পেস সহায়ক উইকেট বেছে নেবে তারা। প্রতিপক্ষ দলে কাইল জার্ভিস ও টেন্ডাই চাটারার অনুপস্থিতিতে কি দেশের মাটিতে সবুজ উইকেটের দিকে যাবে বাংলাদেশ। সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল জানালেন, দেড় মাস পরের টেস্টের প্রস্তুতি মাথায় রেখে সাজিয়েছেন স্কোয়াড। 

“পেস বোলার বেশি নেওয়ার কারণ হচ্ছে, ম্যানেজমেন্ট চাচ্ছে কিছু বোলারকে প্রস্তুত করতে। কারণ, এরপর আমাদের পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ আছে, এর প্রস্তুতিও যেন এক সঙ্গে নেওয়া যায়। এই টেস্টের পর তো আবার ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাবে। এখানে কিন্তু বেশি সুযোগ নেই অনুশীলনের। যে কদিন হাতে আছে টেস্টের প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করা যায় আরকি।”

পাকিস্তানে প্রথম টেস্টের দলে এসেছিলেন চার জন, বাদ পড়েছিলেন ছয় জন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের দলে নেই চার জন, এসেছেন ছয় জন। দলে এতো পরিবর্তনের পেছনে কী নির্বাচকদের সঙ্গে টিম ম্যানেজমেন্টের যোগাযোগে ঘাটতি?

“না যোগাযোগে ঘাটতির জন্য না। এখানে পুরোপুরি বোঝাপড়ার মধ্যেই নেওয়া হচ্ছে। তারা চাচ্ছে এবং আমরা যেটা চাচ্ছি সেটা অধিনায়কের সঙ্গেও আমরা আলোচনা করে নিয়েছি। গত ছয় মাস আমাদের পারফরম্যান্স ‘আপ টু দা মার্ক’ নয়। সবকিছু মাথায় রেখে এই সিরিজ দিয়ে নতুন করে শুরু করতে চাচ্ছি।”

ফিটনেস প্রমাণ করে ফিরেছেন তাসকিন। সম্ভাবনার বিবেচনায় এসেছেন হাসান। প্রধান নির্বাচক জানান, এই দুই জনের দলে থাকার পেছনে গতিময় বোলিংয়ের বড় অবদান আছে।

“টেস্ট ক্রিকেটে আমরা ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করে এখন চাচ্ছি যে যারা জোরে বল করতে পারে, যাদের গতি ১৪০ এর কাছাকাছি তাদের বিবেচনা করতে। বিসিএলে তাসকিন ভালো করেছে।”

“হাসানের মধ্যে আমরা এই ট্যালেন্টটা দেখেছি। দুর্ভাগ্যবশত মাঝখানে সে কিছুটা লাইনচ্যুত ছিল। আবার কামব্যাক করেছে, যার কারণে সিস্টেমের মধ্যে আমরা ওকে নিয়েছি।”

চোটের জন্যই নেই আল আমিন হোসেন। কয়েক ওভার বল করে মাঝ পথ থেকে এই পেসার ছিটকে যাক এমন কিছু চান না বলে ঝুঁকি নিতে চাননি নির্বাচকরা।

“আল আমিন কিন্তু পাকিস্তান সিরিজের আগেই ইনজুরিতে পড়েছে। ফিটনেস চিন্তা করে ওকে ওয়ানডের জন্য রাখছি। রুবেল হোসেনকে আমরা ব্যাকআপ বোলার হিসেবে দলে নিয়েছিলাম। আল আমিন চোট পাওয়ায় পাকিস্তানে তাকে খেলাতে হয়েছে।” 

প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর এক মন্তব্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে মুশফিকুর রহিমের খেলা নিয়ে শঙ্কা জেগেছিল। ফিট থাকলে মুশফিকের একাদশে না থাকার কোনো কারণ দেখেন না প্রধান নির্বাচক।

“মুশফিক হলো আমাদের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। ওর ফেরাটা তো স্বাভাবিক। তো এখানে কারও দ্বিমত থাকার কথা না। পাকিস্তান যায়নি বলে সেখানে খেলেনি।”

মোসাদ্দেক হোসেন কবে মাঠে ফিরতে পারবেন তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন মিনহাজুল। তরুণ অফ স্পিনিং অলরাউন্ডারকে নিয়ে নিতে চান না কোনো ঝুঁকি। জিম্বাবুয়ে সিরিজে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে জানালেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় সম্ভাব্য সেরা দলটিই বাছাই করেছেন তারা।

“এখানে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে না, আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন। আমরা অনেকগুলো তরুণ ক্রিকেটার দলে নিয়েছি এবং ওদের ওপর আস্থা রাখছি। আগামীতে এদের নিয়েই এগোবো। আমরা চাচ্ছি ভালো একটা টেস্ট টিম গড়তে।”