আধ ঘণ্টার নাটকীয়তায় ইনিংস হারের মুখে বাংলাদেশ

দিনের শুরুটা হয়েছিল বেশ ভালো। দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস সাড়ে চারশর আগে থামিয়ে দেন বোলাররা। কিন্তু শেষ বিকেলের নাটকীয় ব্যাটিং ধসে বাংলাদেশ পড়েছে ইনিংস হারের শঙ্কায়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2020, 02:10 PM
Updated : 9 Feb 2020, 02:19 PM

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে রোববার তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১২৬। পাকিস্তানকে আবার ব্যাটিংয়ে নামাতে সফরকারীদের এখনও করতে হবে ৮৬ রান, হাতে ৪ উইকেট। অধিনায়ক মুমিনুল হক ৩৭ ও লিটন দাস ০ রানে খেলছেন। হ্যাটট্রিক করেছেন নাসিম শাহ।

অথচ দিনের প্রথম দেড় সেশন বাংলাদেশের কেটেছিল দারুণ। ৩ উইকেটে ৩৪২ রান নিয়ে দিন শুরু করে পাকিস্তান। রুবেল হোসেন, আবু জায়েদ চৌধুরিদের দারুণ বোলিংয়ে স্বাগতিকরা বাকি ৭ উইকেটে যোগ করতে পারে মাত্র ১০৩ রান। যদিও তারা পেয়ে যায় ২১২ রানের লিড।

আগের দিন ১৭ ওভারে উইকেটশূন্য ছিলেন রুবেল। প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল তাকে খেলানো নিয়ে। ডানহাতি পেসার এদিন ৮ ওভার ৫ বলে নেন ৩ উইকেট। তিনটি নেন আবু জায়েদ।

দ্বিতীয় ইনিংসে ইতিবাচক শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাইফ হাসান। নিরাপদে পার করে দেন আট ওভার। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে ফেরা অভিষিক্ত সাইফ হাসান রানের খাতা খোলেন শাহিন শাহ আফ্রিদিকে দারুণ এক কাভার ড্রাইভ বাউন্ডারিতে।

কিন্তু ইনিংস টেনে নিতে পারেননি তিনি। নাসিমকে পরপর দুই চার হাঁকিয়ে সেই ওভারেই বোল্ড হয়ে যান ডানহাতি ওপেনার। ২৫ বলে ৪ চারে করেন ১৬ রান।

ভালো খেলছিলেন তামিমও; কিন্তু শেষটা ওই একই। বিসিএলে ট্রিপল সেঞ্চুরি করে যাওয়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যান থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি।

চা-বিরতির পর তাকে থামান প্রথম ইনিংসে উইকেটশূন্য থাকা ইয়াসির শাহ। লেগ স্পিনারকে ডিফেন্স করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ হন তামিম। ৫৬ বলে ৬ চারে করেন ৩৪।

তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল। দুজনই খেলছিলেন দেখেশুনে। জমে ওঠা জুটিতে দিন পার করে দেওয়ার আশা দেখছিল বাংলাদেশ।

কিন্তু শেষ আধা ঘণ্টায় নাসিমের বোলিংয়ে এলোমেলো হয়ে যায় সফরকারীরা। তরুণ পেসার টানা তিন বলে শান্ত, তাইজুল ইসলাম, ও মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে গড়েন সবচেয়ে কম বয়সে টেস্ট হ্যাটট্রিকের কীর্তি।

প্রথম দুজন হন এলবিডব্লিউ। হ্যাটট্রিক ডেলিভারিতে স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করে স্লিপে ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহ।

পরে ইয়াসিরের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে বিপদ আরও বাড়ান মোহাম্মদ মিঠুন। ২ উইকেটে ১২৪ থেকে স্কোর হয়ে যায় ৬ উইকেটে ১২৬, ২ রানের মধ্যে নেই ৪ উইকেট! আলোকস্বল্পতায় খেলা শেষ হয়ে যায় আগেভাগেই।

দেশের বাইরে নিজেদের শেষ চার টেস্টেই বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে। এবার চোখ রাঙাচ্ছে আরেকটি ইনিংস ব্যবধানে হার। মুমিনুল-লিটনদের সামনে অপেক্ষায় আরও কঠিন দিন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৩৩

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১২২.৫ ওভারে ৪৪৫ (মাসুদ ১০০, আবিদ ০, আজহার ৩৪, বাবর ১৪৩, শফিক ৬৫, হারিস ৭৫, রিজওয়ান ১০, ইয়াসির ৫, আফ্রিদি ৩, আব্বাস ১* নাসিম ২; ইবাদত ২৫ -৬-৯৭-১, আবু জায়েদ ২৯-৪-৮৬-৩, রুবেল ২৫.৫-৩-১১৩-৩, তাইজুল ৪১-৬-১৩৯-২, মাহমুদউল্লাহ ২-০-৬-০)

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৪৫ ওভারে ১২৬/৬ (তামিম ৩৪, সাইফ ১৬, শান্ত ৩৮, মুমিনুল ৩৭*, তাইজুল ০, মাহমুদউল্লাহ ০, মিঠুন ০, লিটন ০*; আফ্রিদি ১১-২-৩৫-০, আব্বাস ১১.৪-৫-২০-০, নাসিম ৮.২-২-২৬-৪, ইয়াসির ১১-২-৩৩-২, আসাদ ৩-০-১২-০)