দলে বেশি পরিবর্তনের বিপক্ষে বাংলাদেশ কোচ ও অধিনায়ক

নতুন অভিযানের আগে একটা জায়গায় একমত রাসেল ডমিঙ্গো ও মুমিনুল হক, দল নিয়ে খুব বেশি নাড়াচাড়া করা যাবে না। বাংলাদেশ কোচ ও অধিনায়ক মনে করেন, একজন খেলোয়াড়ের নিজেকে প্রমাণের জন্য যথেষ্ট সুযোগ পাওয়া উচিত। তারা দল নির্বাচনে একটা ধারাবাহিকতা আনার দিকে জোর দিচ্ছেন।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Feb 2020, 12:46 PM
Updated : 3 Feb 2020, 02:54 PM

ভারতে দুই টেস্টই তিন দিনে হেরেছিল বাংলাদেশ। কোনো ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে দ্বিতীয়বার ব্যাট করাতে পারেনি তারা। ওই দুই ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে হারের পরও দলে খুব বেশি পরিবর্তন আনার পক্ষে নন ডমিঙ্গো ও মুমিনুল।

এরপরও নানা কারণে পাকিস্তান সফরের দলে আছে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন। ভারত সিরিজের দল থেকে নেই ছয় জন। এর মধ্যে চারজন চোটের জন্য বাদ। নিরাপত্তা শঙ্কায় নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। কোনো ম্যাচ না খেলে বাদ পড়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। ডমিঙ্গো জানিয়েছেন, আবার টেস্ট খেলতে এই পেসারকে টেকনিক্যাল বেশ কিছু কাজ করতে হবে। 

পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দল নিয়ে খুশি বাংলাদেশ অধিনায়ক। মুমিনুল জানান, তার নেতৃত্বের দর্শনই খুব বেশি পরিবর্তন না আনা।

“আমি অধিনায়ক থাকলে চেষ্টা করি যে, দলে যেন খুব বেশি পরিবর্তন না হয়। আমার কাছে মনে হয়, সেটি ভালো হচ্ছে। আগেও ছিল। এবারও সবশেষ টেস্ট সিরিজে যারা ছিল, তারাই আছে। মুশফিক ভাই নেই এবার, তামিম ভাই আছে। এই তো। মুশফিক ভাইকে হয়তো মিস করব, সাকিব ভাইকে তো আগে থেকেই মিস করছি। তবে অন্য যারা সুযোগ পাচ্ছে, তাদের জন্য সুযোগ এটি।”

সবশেষ সিরিজে মিডল অর্ডারে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। তার আউটের ধরণ ও টেকনিক নিয়ে হয়েছে অনেক সমালোচনা। ডমিঙ্গো জানালেন, এক-দুই ম্যাচ দেখে কাউকে বাদ দেওয়ার কোনো ভাবনা তার নেই। নিজেকে প্রমাণের জন্য সবাইকে দেবেন যথেষ্ট সুযোগ। 

“মিঠুন খারাপ ফর্মে, তা বলা চলে না। এখন সে ৬০ রানে (মধ্যাঞ্চলের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৩ করেছেন) ব্যাট করছে। পাকিস্তানে একটা টি-টোয়েন্টি খেলেছে। আমার মতে, বিপিএলও তার ভালো ছিল। সে খারাপ ফর্মে তা বলব না।”

“ভারতে কঠিন কন্ডিশনে আমাদের টেস্ট দলে খেলেছে মিঠুন। এক-দুই টেস্ট পরই কাউকে বাদ দেওয়া কঠিন। আমি সবসময় বলি যে, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিক হতে হবে। কারো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাকে কয়েক টেস্ট খেলতে দিতে হবে। এই সফরে অনেকে আছে যারা ভারতের বিপক্ষে দলে ছিল। আমরা তাদের খেলায় উন্নতি করার সুযোগ দিচ্ছি।”

ভারত সফর থেকে ডমিঙ্গো বলে আসছেন, সংস্করণ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন দল গঠন করবেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ জানালেন, চলছে এর প্রস্তুতির কাজ।

“আগেও বলেছি যে কেউ কেউ সব সংস্করণে থাকবে না। যখন আপনার হাতে অনেক সুযোগ থাকবে না, তখন সব সংস্করণে কয়েকজন যেন খেলতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্দিষ্ট কিছু পজিশনে সব সংস্করণে কিছু খেলোয়াড়কে খেলানোর চেষ্টা করতে হবে।”

খেলোয়াড়দের সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা তৈরি হয়েছে ডমিঙ্গোর। এখন নিজে থেকে নির্বাচকদের কিছু নাম দিতে পারছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের কোচের দায়িত্বে ছিলেন ওটিস গিবসন। পরে জাতীয় দলের বোলিং কোচের দায়িত্ব পাওয়া এই ক্যারিবিয়ান দিয়েছেন সম্ভাবনাময় ১০ পেসারের নাম। ডমিঙ্গো জানান, ধীরে ধীরে গুছিয়ে আনছেন তার দল। 

“গতকাল সিলেকশন কমিটির সঙ্গে কথা বলার সময় আমি তাদের কিছু নাম দিয়েছি। বিশেষ করে সামনের কিছু সিরিজে টি-টোয়েন্টিতে যাদের প্রয়োজন হতে পারে। এখন আমার সব খেলোয়াড়দের সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা হয়েছে। ওরা কোথায় খেলে, কিসে ভালো ওদের কিসে উন্নতি প্রয়োজন। আমার মনে হয়, আমি এখন আরও ভালো বুঝতে পারছি কাকে পছন্দ করি, কার সঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন, কার জন্য মনোযোগ প্রয়োজন, কাকে ছেড়ে দিতে হবে, কে আমাদের যাত্রায় সঙ্গী হতে পারে।”

“গিবসনকে আমি অনেক দিন ধরেই চিনি। তিনি অভিজ্ঞ একজন কোচ। তাকে কেবল বোলিং কোচ হিসেবেই ব্যবহার করব না। অন্য ব্যাপারগুলোতেও তাকে সম্পৃক্ত করব। আমাকে ১০ জন বোলারের নাম দিয়েছেন যাদের তিনি মনে করছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার মতো। ওদের খেলাতে আগামী কয়েক মাসে আমাদের কিছু ম্যাচ প্রয়োজন হবে।”