তামিমের রেকর্ডের পর বিপাকে সৌম্য-শান্তরা

ইনিংস ঘোষণা এলো অনেকটা হুট করেই, তামিম ইকবাল একটু অবাকই হলেন। ভেবেছিলেন রেকর্ড ইনিংসটিকে আরও বড় করার আরেকটু সময় হয়তো পাবেন। তবে দ্বিতীয় সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ইনিংস ছেড়ে দিলেন পূর্বাঞ্চল অধিনায়ক মুমিনুল হক। যে আশায় ইনিংস ঘোষণা, সেটি অবশ্য পূরণ হয়েছে অনেকটাই। তুলে নিতে পেরেছেন তারা প্রতিপক্ষের ৩ উইকেট।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2020, 12:52 PM
Updated : 2 Feb 2020, 12:52 PM

তামিম ইকবালের রেকর্ড গড়া ইনিংসে বিসিএলে পূর্বাঞ্চল গড়েছে রানের পাহাড়। মধ্যাঞ্চল লড়ছে ইনিংস পরাজয় এড়াতে।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে রোববার ২ উইকেটে ৫৫৫ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে পূর্বাঞ্চল। তামিম অপরাজিত ছিলেন ৩৩৪ রানে, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।

প্রথম ইনিংসে ২১৩ রানে গুটিয়ে যাওয়া মধ্যাঞ্চল দ্বিতীয় ইনিংসে করেছে ৩ উইকেটে ১১৫ রান। এখনও পিছিয়ে আছে তারা ২২৭ রানে।

তামিম দিন শুরু করেছিলেন ২২২ রানে। প্রতিপক্ষ বোলাররা এ দিনও তাকে থামানোর কোনো পথ পায়নি। লাঞ্চে যান তিনি ২৭৯ রান নিয়ে।

শুভাগত হোমের বলে সিঙ্গেল নিয়ে পূরণ করেন তিনশ। ৪০৭ বল খেলে স্পর্শ করেন মাইলফলক। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের মাত্র দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে পেলেন এই স্বাদ।

একটু পর সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড নিজের করে নেন। ছাড়িয়ে যান ২০০৭ সালে করা রকিবুল হাসানের ৩১৩ রানের ইনিংসকে। রকিবুল ছিলেন মাঠেই, প্রতিপক্ষ দলে ফিল্ডিং করছিলেন ব্যাটসম্যানের কাছেই। ছুটে এসে সবার আগে তামিমকে অভিনন্দন জানান তিনি।

ইনিংস ঘোষণার আভাস পেয়ে এরপর ঝড় তোলেন তামিম। তিনশর আগে ছিল না একটিও ছক্কা, তিনশ পেরোনোর পর মারেন তিনটি।

অবশেষে মুমিনুল ইনিংস ঘোষণা করলে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায় মধ্যাঞ্চলের বোলাররা। ৫৮৫ মিনিট খেলে ৪২৬ বলে ৩৩৪ রানে অপরাজিত তখন তামিম। বাংলাদেশের মাটিতেও এটি সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরের রেকর্ড।

তিনটি ছক্কার পাশে তার ইনিংসে চার ছিল ৪২টি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আগের রেকর্ড ছিল মোসাদ্দেক হোসেনের ৩৭ চার।

তামিমকেই শুধু নয়, এ দিন আরেক প্রান্তেও কোনো উইকেট নিতে পারেনি মধ্যাঞ্চল। ইয়াসির আলি চৌধুরি রাব্বি অপরাজিত ছিলেন ৬২ রানে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ১৯৭।

বিশাল ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে মধ্যাঞ্চল শুরুতেই হারায় সৌম্য সরকারকে। পাকিস্তান সফরের বাংলাদেশ টেস্ট দলে ডাক পাওয়া ব্যাটসম্যান ৪ রানে বিদায় নেন টেস্ট দলের বোলার আবু জায়েদ চৌধুরির বলে। স্লিপে দারুণ ক্যাচ নেন ইয়াসির।

টেস্ট স্কোয়াডে থাকা অন্য দুই ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন ভালো কিছুর। কেউই পারেননি ইনিংস বড় করতে। দুজনকেই ফেরান টেস্ট দলের স্পিনার নাঈম হাসান।

৩৩ রানে বিদায় নেন সাইফ। ৮ চারে ৫৪ করে শান্ত বিদায় নেন শেষ বিকেলে সুইপ খেলতে গিয়ে।

শেষ দিনে মধ্যাঞ্চলের ব্যাটসম্যানদের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে ম্যাচ বাঁচানোর।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস: ২১৩

পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস: ১৩৯.৫ ওভারে ৫৫৫/২ (ইনিংস ঘোষণা) (আগের দিন ৩৯৫/২) ( পিনাক ২৬, তামিম ৩৩৪*, মুমিনুল ১১১, ইয়াসির ৬২*; মুস্তাফিজ ২৫-২-১০৬-০, শহিদুল ২২-০-১১৯-০, শুভাগত ৪৯-৮-১৬২-১, মুকিদুল ২৫-৩-৭১-১, সোহরাওয়ার্দী ১৩.৫-১-৫৬-০, সাইফ ৫-০-২৪-০)।

মধ্যাঞ্চল ২য় ইনিংস: ৪০ ওভারে ১১৫/৩ (সাইফ ৩৩, সৌম্য ৪, শান্ত ৫৪, রকিবুল ১৬*, শহিদুল ৭* আবু জায়েদ ৫-১-১৩-১, হাসান ৮-২-২০-০, তাইজুল ১৩-৩-২৫-০, রুবেল ৪-১-২০-০, নাঈম ১০-২-৩৬-২)।