বিসিএলের ম্যাচে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে রোববার এই কীর্তি গড়েছেন তামিম। মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে ম্যাচের তৃতীয় দিন লাঞ্চের পর পূর্বাঞ্চলের হয়ে ছুঁয়েছেন তিনশ রানের মাইলফলক।
পরে দল যখন ইনিংস ঘোষণা করল, তামিম তখন অপরাজিত ৩৩৪ রানে।
তার ট্রিপল সেঞ্চুরিতে দেশের ক্রিকেটের দীর্ঘ অপেক্ষাও ফুরালো। সেই ২০০৭ সালে জাতীয় লিগে বরিশালের হয়ে সিলেটের বিপক্ষে ফতুল্লায় অপরাজিত ৩১৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন রকিবুল হাসান। এটিই এতদিন ছিল দেশের একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরি।
সেই রকিবুল এই ম্যাচে তামিমের প্রতিপক্ষ দলে। তিনশর পর অন্যদের সঙ্গে তিনিও ছুটে গিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন তামিমকে।
৫৬০ মিনিটে ৪০৭ বল খেলে তিনশ স্পর্শ করেছেন তামিম। রকিবুলের ট্রিপল সেঞ্চুরি ছুঁতে লেগেছিল ৬০০ বল ও ৬৪০ মিনিট।
একটু পর রকিবুলকে পেরিয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ডও নিজের করে নেন তামিম।
ওপেনার হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আগের সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল লিটন দাসের। ২০১৮ সালে বিসিএলের ম্যাচেই মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে পূর্বাঞ্চলের হয়ে ২৭৪ রান করেছিলেন লিটন।
তামিম দিন শুরু করেন ২২২ রানে। আগের দিনের মতোই খেলেছেন স্বচ্ছন্দে। প্রথম ওভারে শহিদুল ইসলামকে বাউন্ডারিতে শুরু। এরপর এগিয়েছেন অনায়াসেই। মুকিদুল ইসলামের বলে পুল করে সিঙ্গেল নিয়ে আড়াইশ ছুঁয়েছেন ৩১৫ বলে।
২৬৫ রানে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে দিয়েছিলেন, ব্যাটের কানায় লেগে যেটি গালি দিয়ে উড়ে বেরিয়ে হয়ে যায় চার। সেটি ছাড়া আর কোনো শটই মনে হয়নি ছিল তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
লাঞ্চের আগের ওভারে শহিদুলকে কাভার ড্রাইভে চার মেরে বাউন্ডারির রেকর্ড নিজের করে নেন তামিম। লাঞ্চে যান ২৭৯ রান নিয়ে।
লাঞ্চের পরও এগিয়ে যান সাবলিলভাবে। পৌঁছে যান কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়। তিনশ ছুঁয়ে রকিবুলের ৩১৩ রানও ছাড়িয়ে যান দ্রুতই। খুব কাছেই ফিল্ডিংয়ে থাকা রকিবুল আবার ছুটে এসে তাকে অভিনন্দন জানান।
ট্রিপল সেঞ্চুরির পর বাড়িয়ে দেন রানের গতি। প্রথম তিনশতে ছক্কা না থাকলেও মাইলফলক ছোঁয়ার পর মারেন তিনটি ছক্কা। ২ উইকেটে ৫৫৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে দল। তামিমের নামের পাশে তখন ৪২৬ বলে ৩৩৪। চার ৪২টি, ছক্কা তিনটি।
রকিবুলের ওই ইনিংসের পর ট্রিপল সেঞ্চুরির সবচেয়ে কাছে গিয়েছিলেন নাসির হোসেন। ২০১৭ সালে জাতীয় লিগে রংপুরের বিপক্ষে আউট হয়ে গিয়েছিলেন ২৯৫ রানে।
২০১৩ সালে বিসিএলে মধ্যাঞ্চলের হয়ে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে বগুড়ায় ২৮৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মার্শাল আইয়ুব। ২০১৫ সালে জাতীয় লিগে বরিশালের হয়ে চট্টগ্রামের বিপক্ষে বিকেএসপিতে ২৮২ করেছিলেন মোসাদ্দেক।