ওয়েলিংটনের ওয়েস্টপ্যাক স্টেডিয়ামে শুক্রবার চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে মনিশ পান্ডের অপরাজিত ফিফতিতে ৮ উইকেটে ১৬৫ রান করে ভারত। রান তাড়ায় এক উইকেট কম হারিয়ে কলিন মানরো আর টিম সাইফার্টের ফিফটিতে নিউ জিল্যান্ডও থামে ঠিক ১৬৫ রানেই।
সুপার ওভারে কিউইরা তোলে ১৩ রান। প্রথম দুই বলে ছক্কা ও চার হাঁকিয়ে সমীকরণ সহজ করে আউট হন লোকেশ রাহুল। চতুর্থ বলে ডাবল নেওয়ার পর পঞ্চম বলে বাউন্ডারি হাঁকান বিরাট কোহলি। উল্লাসে ফেটে পড়ে ভারত।
অথচ একসময় ম্যাচ ছিল নিউ জিল্যান্ডের হাতের মুঠোয়। শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ১১ রান। নবদিপ সাইনির করা ১৯তম ওভারে আসে মোটে ৪ রান। তারপরও সাত উইকেট হাতে নিয়ে মাত্র সাত রানের সমীকরণ মেলানো কঠিন হওয়ার কথা ছিল না।
কিন্তু প্রথম বলেই শার্দুল ঠাকুরকে ওড়ানোর চেষ্টায় ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন রস টেইলর। পরের বলে বাউন্ডারি মেরে সমীকরণ সহজ করে নেন নতুন ব্যাটিংয়ে নামা ড্যারিল মিচেল। কিন্তু পরের বলে রান আউট হয়ে দলকে শঙ্কায় রেখে যান দারুণ খেলতে থাকা সেইফার্ট। ভেসে ওঠে আগের ম্যাচের স্মৃতি। যে ম্যাচে ৪ বলে ২ রানের হিসাব মেলাতে ব্যর্থ হয়েছিল কিউইরা।
সেই শঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হয়। চতুর্থ বলে সিঙ্গেল নেন মিচেল স্যান্টনার। ২ বলে ২ রানের সামনে দাঁড়িয়ে মিড অফে সহজ ক্যাচ দেন মিচেল। শেষে ওয়াইড বলে খোঁচা মেরে এক নেন স্যান্টনার।
আগেই সিরিজ নিশ্চিত হওয়াই এই ম্যাচে রোহিত শর্মা, মোহাম্মাদ সামি ও রবীন্দ্র জাদেজাকে বিশ্রাম দেয় ভারত। সুযোগ পান সাঞ্জু স্যামসন, ওয়াশিংটন সুন্দর ও সাইনি।
তৃতীয় ম্যাচে কাঁধে চোট পাওয়া কেন উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতিতে নিউ জিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেন টিম সাউদি।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৫১ রান তুললেও এ সময় স্যামসন ও কোহলিকে হারিয়ে ফেলে। ইশ সোধির স্পিনে ৯০ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারায় তারা।
২৬ রানে ৩ উইকেট নেন সোধি।
রান তাড়ার শুরুতে বেগ পেতে হয় নিউ জিল্যান্ডকে। পঞ্চম ওভারে দলীয় ২২ রানে ফিরে যান মার্টিন গাপটিল। তবে ক্রিজে নেমে চিত্র পাল্টে দেন সাইফার্ট। খেলতে থাকেন দারুণ সব শট। ভাগ্যকেও পাশে পেয়েছেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান।
চেহেলের করা পঞ্চদশ ওভারে দুইবার জীবন পান সাইফার্ট। স্লগ সুইপে তার ওড়ানো বল নাগালে পেয়েও তালুবন্দি করতে পারেননি নবদিপ সাইনি, হাত গলে বল গিয়ে পড়ে মাঠের বাইরে। তার রান তখন ৩১। পরের বলে রিভার্স সুইপে ক্যাচ দেন শর্ট থার্ড ম্যানে। কঠিন সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি বুমরাহ। চেহেলের এই ওভার থেকে আসে ১৭ রান।
হাত খুলে খেলতে থাকেন মানরোও। রান আসতে থাকে দ্রুত। ৪৭ বলে ৬টি চার ও ৩ ছক্কায় ৬৪ রান করে রান আউট হয়ে যান মানরো। ভাঙে ৭৪ রানের জুটি।
পরের ওভারে টম ব্রুসকে বোল্ড করে দেন যুজবেন্দ্র চেহেল।
৬২ রানের জুটিতে দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে যান সাইফার্ট ও রস টেইলর। শেষ ওভারে টেইলরকে হারানোর মধ্য দিয়েই শুরু হয় নাটকের। যার শেষ হাসি হাসে ভারত।
৩৯ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৭ রান করেন সাইফার্ট।
শেষ ওভারে ২ উইকেট নেওয়া শার্দুলই হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ১৬৫/৮ (রাহুল ৩৯, স্যামসন ৮, কোহলি ১১, আইয়ার ১, দুবে ১২, মনিশ৫০*, ওয়াশিংটন ০, শার্দুল ২০, চেহেল ১, সাইনি ১১*; সাউদি ৪-০-২৮-১, কুগেলাইন ৪-০-৩৯-১, স্যান্টনার ৪-০-২৬-১, বেনেট ৪-০-৪১-২, সোদি ৪-০-২৬-৩)
নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৬৫/৭ (গাপটিল ৪, মানরো ৬৪, সাইফার্ট ৫৭, ব্রুস ০, টেইলর ২৪, মিচেল ৪, স্যান্টনার ২, কুগেলাইন ০*; শার্দুল ৪-০-৩৩-২, সাইনি ৪-০-২৯-০, বুমরাহ ৪-০-২০-১, চেহেল ৪-০-৩৮-১, ওয়াশিংটন ২-০-২৪-০, দুবে ২-০-১৪-০)
ফল: ম্যাচ টাই (সুপার ওভারে ভারত জয়ী)
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ভারত ৪-০তে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: শার্দুল ঠাকুর