ব্যাটিং-বোলিং ব্যর্থতায় সিরিজ হারল বাংলাদেশ

দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৯ উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে পাকিস্তান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2020, 08:38 AM
Updated : 25 Jan 2020, 12:24 PM

ব্যাটিং-বোলিং ব্যর্থতায় সিরিজ হারল বাংলাদেশ

আগের ম্যাচের চেয়েও খারাপ হলো ব্যাটিং। বোলিংয়েও হলো অবনতি। দুই বিভাগে বাজে খেলার প্রতিফলন পড়ল ফলাফলে, ৯ উইকেটে হেরে সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ।

১৩৭ রানের লক্ষ্য ২০ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে গেছে পাকিস্তান। মোহাম্মদ হাফিজ ও বাবর আজমের জুটি ভাঙতেই পারেনি সফরকারীরা। দ্বিতীয় উইকেটে ১৩১ রানের জুটি গড়েন দুজন। তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে পাকিস্তান। প্রথম টি-টোয়েন্টি তারা জিতেছিল ৫ উইকেটে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৬/৬ (তামিম ৬৫, নাঈম ০, মেহেদি ৯, লিটন ৮, আফিফ ২১, মাহমুদউল্লাহ ১২, সৌম্য ৫*, আমিনুল ৮*; ইমাদ ২-০-১৬-০, আফ্রিদি ৪-০-২২-১, হাসনাইন ৪-০-২০-২, রউফ ৪-০-২৭-১, শাদাব ৩-০-২৮-১, মালিক ২-০-৯-০, ইফতিখার ১-০-১২-০)

পাকিস্তান: ১৬.৪ ওভারে ১৩৭-১ / (বাবর ৬৬*, এহসান ০, হাফিজ ৬৭*; মেহেদি ৪-০-২৮-০, শফিউল ৩-০-২৭-১, আল আমিন ৩-০-১৭-০, মুস্তাফিজ ৩-০-২৯-০, আমিনুল ২-০-১৬-০, আফিফ ১-০-১৬-০, মাহমুদউল্লাহ ০.৪-০-৩-০)

ফল: পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী

হাফিজের পর বাবরের ফিফটি

পাকিস্তানের দুই ব্যাটসম্যানকে থামানোর পথ পাচ্ছেন না বাংলাদেশের বোলাররা। মোহাম্মদ হাফিজের পর ফিফটি তুলে নিয়েছেন বাবর আজম।

মুস্তাফিজুর রহমানকে ছক্কা হাঁকানোর পর সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি স্পর্শ করেন পাকিস্তান অধিনায়ক।

এই ওভারেই লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান হাফিজ। তিন অঙ্ক ছুঁয়েছে দ্বিতীয় উইকেট জুটির রান।

১৪ ওভার শেষে পাকিস্তানের স্কোর ১০৮/১। দুই ব্যাটসম্যানই খেলছেন ৫২ রান নিয়ে।

হাফিজের ফিফটি

বাবার আজমের সঙ্গে দারুণ জুটিতে দলকে জয়ের পথে রেখেছেন মোহাম্মদ হাফিজ। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে তুলে নিয়েছেন ফিফটি।

শফিউল ইসলামকে টানা দুই বাউন্ডারি হাঁকানোর পর সিঙ্গেল নিয়ে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন হাফিজ। ১৩ ওভার শেষে পাকিস্তানের স্কোর ৯৬/১। হাফিজ ৫০ ও বাবর ৪৩ রানে ব্যাট করছেন।

শুরুতেই শফিউলের আঘাত

আগের ম্যাচে ইনিংসের দ্বিতীয় বলে পেয়েছিলেন উইকেট। এবার পেলেন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে। চতুর্থ বলে নিলেন উইকেট। শূন্য রানে এহসান আলিকে ফিরিয়ে দিলেন শফিউল ইসলাম।

ডানহাতি পেসারকে ছক্কায় উড়িয়ে রানের খাতা খুলতে চেয়েছিলেন এহসান। টাইমিং করতে পারেননি। মিড অফে সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমান মাহমুদউল্লাহ।

২ ওভার শেষে পাকিস্তানের স্কোর ৭/১। ক্রিজে বাবর আজমের সঙ্গী মোহাম্মদ হাফিজ।

তামিমের ফিফটির পরও বড় হলো না সংগ্রহ

উইকেট আগের ম্যাচের মতোই মন্থর। পেসাররা বাড়তি বাউন্স পেলেন মাঝে-মধ্যে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টাইমিং পেতে সংগ্রাম করলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান। লম্বা সময় ক্রিজে থেকে ফিফটি করেছেন দেশের সফলতম ব্যাটসম্যান কিন্তু সেভাবে কখনও গতি পায়নি ইনিংস।

২০ ওভারে ৬ উইকেটে রানে থেমেছে বাংলাদেশ। বিশের ঘর ছাড়াতে পেরেছেন কেবল তামিম। সাত চার ও এক ছক্কায় ৫৩ বলে করেছেন ৬৫। 

টানা দুই ম্যাচে লাহোরে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড ভাঙল বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের ১৪১ ছিল লাহোরে প্রথম ইনিংসে কোনো দলের সর্বনিম্ন। এবার রান হলো এর চেয়েও কম।

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৬/৬ (তামিম ৬৫, নাঈম ০, মেহেদি ৯, লিটন ৮, আফিফ ২১, মাহমুদউল্লাহ ১২, সৌম্য ৫*, আমিনুল ৮*; ইমাদ ২-০-১৬-০, আফ্রিদি ৪-০-২২-১, হাসনাইন ৪-০-২০-২, রউফ ৪-০-২৭-১, শাদাব ৩-০-২৮-১, মালিক ২-০-৯-০, ইফতিখার ১-০-১২-০)

বোল্ড মাহমুদউল্লাহ

আগের ম্যাচে শেষ ওভারে হারিস রউফের ওপর চড়াও হয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। এই ম্যাচেও একই পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশ অধিনায়কের। এবার পারেননি, তেড়েফুড়ে মারতে গিয়ে ফিরেছেন বোল্ড হয়ে। ১২ বলে ১ চারে ১২ রান করেছেন তিনি।

আবারও রান আউট তামিম

টানা দ্বিতীয় ম্যাচে আউট হয়ে ফিরেছেন তামিম ইকবাল। ইমাদ ওয়াসিমের সরাসরি থ্রোয়ে শেষ হয়েছে বাঁহাতি এই ওপেনারের ইনিংস।

হারিস রউফের বল অফ খেলেই রান নিতে ছুটেন দুই ব্যাটসম্যান। মাঝপথে একটু মন্থর হয়ে পড়েন তামিম। ইমাদের সরাসরি থ্রো ফেলে দেয় ফেলস, তখনও বেশ দূরে ছিলেন তিনি। ভাঙে ৩১ রানের জুটি।

৫৩ বলে সাত চার ও এক ছক্কায় ৬৫ রান করেন তামিম। ১৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১১৯/৫। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী সৌম্য সরকার।

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে তামিমের ফিফটি

বল সহজে ব্যাটে আসছে না, অন্য প্রান্ত থেকে মিলছে না খুব একটা সহায়তা। এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন তামিম ইকবাল। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৪৪ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার।

শাদাব খানের বলে কাভার দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ফিফটিতে যান তামিম। পরে টানা দুই বলে তুলে নেন বাউন্ডারি।

১৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১০২/৪। তামিম ৪৮ বলে ৫৯ ও মাহমুদউল্লাহ ২ বলে ২ রানে ব্যাট করছেন।  

আফিফের বিদায়ে ভাঙল জুটি

সময়ের দাবি ছিল বড় শট খেলার। খেলেছিলেনও আফিফ হোসেন। টাইমিং করতে না পেরে ফিরলেন থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়ে।

মোহাম্মদ হাসনাইনের গতি ও বাড়তি বাউন্স কাল হলো আফিফের। জায়গা করে নিয়ে ওড়ানোর চেষ্টায় ধরা পড়লেন সীমানায়। ভাঙে ৪৫ রানের জুটি।

একটি করে ছক্কা ও চারে ২০ বলে ২১ রান করেন আফিফ। ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৮৮/৪। ক্রিজে তামিমের সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ।

রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন তামিম

সরে গিয়ে লেগে বল ঘুরাতে চেয়েছিলেন তামিম ইকবাল। মোহাম্মদ হাসনাইনের গতিময় ডেলিভারি খেলতে পারেননি ব্যাটে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন বাঁহাতি ওপেনার। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায় বল পড়েছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে। বেঁচে যান তামিম। সে সময় তিনি ছিলেন ৪০ রানে।

আম্পায়ার্স কলে এলবিডব্লিউ লিটন

এক প্রান্ত আগলে রাখছেন তামিম ইকবাল। কিন্তু অন্য প্রান্ত থেকে মিলছে না খুব একটা সহযোগিতা। দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে ফিরে গেছেন লিটন দাসও।

পাকিস্তানের তৃতীয় বোলার হিসেবে ম্যাচে নিজের প্রথম ওভারে উইকেট পেলেন শাদাব খান। লেগ স্পিনারের গুগলি বুঝতে পারেননি লিটন। পুলের মতো করে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। আবেদন খুব একটা জোরালো না হলেও আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার।

তামিমের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নেন লিটন। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায় কোনোমতে লেগ স্টাম্প স্পর্শ করত বল। আম্পায়ার্স কলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যেতে হয় লিটনকে।

১৪ বলে ১ চারে কিপার-ব্যাটসম্যান করেন ৮ রান। ৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৪১/৩। ক্রিজে তামিমের সঙ্গী আফিফ হোসেন।  

টিকলেন না মেহেদি

শুরুতেই ভুগছিলেন মেহেদি হাসান। ইমাদ ওয়াসিমকে ছক্কা হাঁকালেও পেসারদের ছোট ছোট সুইং, গতি আর বাড়তি বাউন্স ভোগাচ্ছিল তাকে। আউট হয়েছে সেই পেস বলেই।

আগের দিন খরুচে বোলিং করা মোহাম্মদ হাসনাইন সাফল্য পেয়েছেন বোলিংয়ে এসেই। অফ স্টাম্পের বাইরের বাউন্সার টেনে পুল করেছিলেন মেহেদি। ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে সহজ ক্যাচ যায় মোহাম্মদ রিজাওয়ানের গ্লাভসে।

১২ বলে এক ছক্কায় ৯ রান করেন দলে ফেরা মেহেদি।

৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৭/২। ক্রিজে তামিম ইকবালের সঙ্গী লিটন দাস।

গোল্ডেন ডাক নাঈম

আগের দিন লম্বা সময় ক্রিজে থাকা মোহাম্মদ নাঈম শেখ এবার ফিরলেন দ্রুত। শাহিন শাহ আফ্রিদির বল ঠিক মতো খেলতে না পেরে পেলেন গোল্ডেন ডাকের স্বাদ।

অফ স্টাম্পের বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন নাঈম। একটু বাড়তি লাফানো বল ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে কিপারের গ্লাভসে।

২ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৬/১। ক্রিজে তামিম ইকবালের সঙ্গী দলে ফেরা মেহেদি হাসান।   

অপরিবর্তিত পাকিস্তান

জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করা পাকিস্তান কোনো পরিবর্তন আনেনি, খেলছে একই একাদশ নিয়ে। 

পাকিস্তান: বাবর আজম, এহসান আলি, হারিস রউফ, ইফতিখার আহমেদ, ইমাদ ওয়াসিম, মোহাম্মদ হাফিজ, মোহাম্মদ হাসনাইন, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাদাব খান, শাহিন শাহ আফ্রিদি, শোয়েব মালিক।

মিঠুনের জায়গায় মেহেদি

বোলিংয়ে শক্তি বাড়িয়েছে বাংলাদেশ। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুনের জায়গায় অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসানকে একাদশে ফিরিয়েছে সফরকারীরা।

২০১৮ সালে একটি টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন মেহেদি। এরপর থেকে দলের বাইরে থাকা তরুণ অলরাউন্ডার দলে ফিরেছেন বিপিএলের দারুণ পারফরম্যান্সে। এবার এলেন একাদশেও।

বাংলাদেশ: মাহমুদউল্লাহ, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, লিটন দাস, মেহেদি হাসান, আফিফ হোসেন, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, মুস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, আল আমিন হোসেন।

ছবি: পাকিস্তান ক্রিকেট

টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

টস জিতে আবারও ব্যাটিং নিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

সিরিজ বাঁচিয়ে রাখার লড়াইয়ে বাংলাদেশ

ব্যাটিংয়ে ছিল ১০-১৫ রানের ঘাটতি, বোলাররা উপহার দিয়েছেন বাউন্ডারি বল, ফিল্ডিংয়ে হাতছাড়া হয়েছে ক্যাচ আর রান আউটের সুযোগ। প্রথম ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর কাছে এগুলোই হারের কারণ। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে এসব ব্যাপারে উন্নতি চান বাংলাদেশ অধিনায়ক।

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে শনিবার বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটায় শুরু হবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি। প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে হেরেছে মাহমুদউল্লাহর দল।

উইকেট নিয়েও ভাবনাও পড়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কঠিন হয়েছে শট খেলা। ক্রিজে গিয়েই শট খেলতে ভুগতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের।