লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে শুক্রবার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। লাহোরের সন্তান বাবর এই প্রথম দেশকে নেতৃত্ব দেবেন ঘরের মাঠে, নিজ দর্শকদের সামনে।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন বাবর। এরপর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে। আইসিসির শীর্ষ ব্যাটসম্যানদের তালিকায় তিন সংস্করণেই রয়েছে তার নাম। নিজেকে প্রমাণ করেছেন বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৩৬ ম্যাচে ৫০.১৭ গড়ে বাবরের রান এক হাজার ৪০৫। অন্তত ৫০০ রান করেছেন, এমন ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং গড় ৫০-এর উপরে আছে কেবল আর একজনেরই। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি ৭৮ ম্যাচে ৫২.৭২ গড়ে করেছেন দুই হাজার ৬৮৯ রান।
এই সংস্করণে দীর্ঘ দিন ধরে র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর ব্যাটসম্যান বাবর। ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে আছেন তিন নম্বরে। টেস্টে একটা সময় রেকর্ড বিবর্ণ থাকলেও গত কিছুদিনে নিয়মিতই হাসছে ২৫ বছর বয়সীর ব্যাট। নিজেকে তুলে নিয়েছেন র্যাঙ্কিংয়ের সপ্তম স্থানে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগের দিন বাবর ফিরে গেলেন তার শৈশবের দিনগুলিতে, যখন স্বপ্নাতুর চোখে ছুটে যেতেন এই মাঠে।
“মনে হচ্ছে, এই তো গতকালের ঘটনা, ২০০৭ সালে পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্টে কাজ করেছি বল-বয় হিসেবে। প্রতিদিন প্রায় তিন মাইল হেঁটে গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে যেতাম।”
“খেলাটির খেলার প্রতি ভালোবাসার কারণেই যেতাম। কয়েকজন তারকার প্রতি প্রবল আকর্ষণের ব্যাপারও ছিল, ইনজামাম-উল-হক, ইউনিস খান, মোহাম্মাদ ইউসুফ, মিসবাহ-উল-হক, গ্রায়েম স্মিথ, হাশিম আমলা, জ্যাক ক্যালিস এবং ডেল স্টেইন। তাদের টানেই আমি কোনো কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে ঘর থেকে বের হয়ে ছুটতাম পাকিস্তানের হোম অব ক্রিকেটে।”
বাবর জানালেন, বল-বয়ের সেই দিনগুলিই তার মনে এঁকে দিয়েছিল ভবিষ্যতের স্বপ্ন।
“আমার কাছে সেটি ছিল টেস্ট ক্রিকেট ও কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের কাছাকাছি যাওয়ার উপলক্ষ্য। ওই ম্যাচের সময় তাদের পিঠ চাপড়ে দেওয়া ও তাদের মুখের হাসি ছিল আমার কাছে সবচেয়ে বড় পুরস্কার। যে কোনো তরুণের জন্য সেটি এক জীবনের অভিজ্ঞতা।”
সেই বাবর আজ পাকিস্তানের সেরা ব্যাটসম্যান, বিশ্ব ক্রিকেটের সেরাদের একজন। দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারার গৌরব তার সঙ্গী। ক্রিকেটের আঙিনায় নিজের সফলতার মন্ত্রটাও জানালেন তিনি।
“ক্রিকেটে প্রতি আবার আবেগ, যেখানে মিশে আছে ক্রিকেটের প্রতি পাগলের মতো ভালোবাসা, আর খানিকটা ভাগ্যের সহায়তা আমাকে এই পর্যায়ে তুলে এনেছে। এই ভ্রমণে আমি ছিলাম ভাগ্যবান। অনেকেই আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, কোচরা আমাকে শিখিয়েছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, ভালো ও মন্দ দিনে পাশে থেকেছেন।”
“সব সাফল্যের জন্য আমি সেই সব আড়ালের নায়কদের কাছে ঋণী। এখন আমার দায়িত্ব উৎকর্ষের পেছনে ছোটা, যেন খেলোয়াড় ও অধিনায়ক হিসেবে আমি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারি।”