রোহিত-কোহলির ব্যাটে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিল ভারত

দুর্দান্ত বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে তিনশর কাছাকাছি রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ। তারওপর ফর্মে থাকা এক ওপেনার ম্যাচের শুরুতেই ছিটকে গেলেন চোট পেয়ে। রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি বুঝি বললেন, ‘পরোয়া করি না!’ দুজনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজ জিতে নিল ভারত।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2020, 04:23 PM
Updated : 19 Jan 2020, 04:23 PM

প্রথম ম্যাচে ১০ উইকেটে উড়ে গিয়েছিল যে দল, সেই ভারতই পরের দুই ম্যাচে দারুণ জয়ে জিতে গেল সিরিজ। তৃতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে তারা ৭ উইকেটে।

বেঙ্গালুরুতে রোববার স্টিভেন স্মিথের দারুণ সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে ২৮৬ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। তবে সেই রানে জমেনি লড়াই। রোহিতের সেঞ্চুরি ও কোহলির সঙ্গে দারুণ জুটিতে ভারত জিতে গেছে ১৫ বল বাকি রেখে।

ক্যারিয়ারে ২৯তম ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অষ্টম সেঞ্চুরিতে রোহিত করেন ১১৯। ম্যাচের সেরা তিনিই।

কোহলি সেঞ্চুরি পাননি, ফিরেন ৯১ বলে ৮৯ রান করে। তবে এই ইনিংসের পথে গড়েন অধিনায়ক হিসেবে দ্রুততম পাঁচ হাজার রানের রেকর্ড। দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে স্পর্শ করেন রান তাড়ায় সাত হাজার রানের মাইলফলক।

ম্যাচের পঞ্চম ওভারে ফিল্ডিংয়ের সময় কাঁধে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন আগের দুই ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা শিখর ধাওয়ান। রান তাড়ায় রোহিতের সঙ্গে ভারতের ইনিংস শুরু করেন লোকেশ রাহুল।

রাহুল খুব স্বচ্ছন্দে খেলতে পারেননি। তবে উইকেটে টিকে থাকেন ১২ ওভার। রোহিতের সৌজন্যে ৬৯ রানের উদ্বোধনী জুটি পায় ভারত।

২৭ বলে ১৯ রান করে ফেরেন রাহুল। দ্বিতীয় উইকেটে রোহিত ও কোহলির জুটি গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। দুজনে যোগ করেন ১৩৭ রান।

৮ চার ও ৬ ছক্কায় ১১৯ রান করে রোহিত বিদায় নেন অ্যাডাম জ্যাম্পাকে ছক্কা মারতে গিয়ে। ম্যাচের তখন কেবল আনুষ্ঠানিকতা বাকি। উত্তেজনা যা ছিল, তা কেবল কোহলির সম্ভাব্য সেঞ্চুরি নিয়ে।

আরেক পাশে শ্রেয়াস আইয়ার নেমেই দারুণ সব শটে ছুটতে থাকেন ঝড়ের গতিতে। কোহলি শেষ পর্যন্ত ছুঁতে পারেননি তিন অঙ্ক। বোল্ড হয়ে যান ১৪ মাস পর ওয়ানডে খেলতে নামা জশ হেইজেলউডের বলে।

৩৫ বলে ৪৪ রানের ইনিংসে দলকে জিতিয়ে ফেরেন শ্রেয়াস।

অস্ট্রেলিয়ার বিপদের শুরু ম্যাচের শুরু থেকেই। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ডেভিড ওয়ার্নারকে হারায় তারা ৩ রানে। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ১৯ রানে বিদায় নেন রান আউটে।

তৃতীয় উইকেটে স্মিথ ও মার্নাস লাবুশেনের জুটিতে তারা সামাল দেয় শুরুর ধাক্কা। ১২৭ রানের জুটি অস্ট্রেলিয়াকে গড়ে দেয় বড় রানের মঞ্চ।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম ফিফটির দেখা পেয়েছেন লাবুশেন। তবে আউট হয়ে গেছেন ৬৪ বলে ৫৪ রানে।

শক্ত ভিত পেলেও পরের দিকে ঝড় তুলতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ানরা। মিচেল স্টার্ককে ব্যাটিং অর্ডারে ওপরে তুলে আনা কাজে লাগেনি। অ্যালেক্স কেয়ারি ৩৫ রান করতে খেলেন ৩৬ বল। অ্যাশটন টার্নার, অ্যাশটন অ্যাগারের ব্যাটও ছিল ঘুমিয়ে।

রান যা বাড়ানোর, সেই স্মিথই বাড়িয়েছেন। নবম ওয়ানডে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ১১৭ বলে। তার সবশেষ ওয়ানডে সেঞ্চুরি ছিল তিন বছর আগে ঠিক এই দিনেই।

সেঞ্চুরির পর স্মিথ চেষ্টা করেন রানের গতি বাড়াতে। শেষ পর্যন্ত আউট হন ১৩২ বলে ১৩১ রান করে।

শেষ দিকের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় অস্ট্রেলিয়া পারেনি তিনশ করতে। তাদের বোলাররা পারেনি ম্যাচ জমিয়ে তুলতে। ভারত পাত্তাই দেয়নি সেই রানকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৮৬/৯ (ওয়ার্নার ৩, ফিঞ্চ ১৯, স্মিথ ১৩১, লাবুশেন ৫৪, স্টার্ক ০, কেয়ারি ৩৫, টার্নার ৪, অ্যাগার ১১*, কামিন্স ০, জ্যাম্পা ১, হেইজেলউড ১*; বুমরাহ ১০-০-৩৮-০, শামি ১০-০-৬৩-৪, সাইনি ১০-০-৬৫-১, কুলদীপ ১০-০-৬২-১, জাদেজা ১০-১-৪৪-২)।

ভারত: ৪৭.৩ ওভারে ২৮৯/৩ (রোহিত ১১৯, রাহুল ১০, কোহলি ১৬, শ্রেয়াস ৪৪*, মনিশ ৪*; কামিন্স ৭-০-৬৪-০, স্টার্ক ৯-০-৬৬-০, হেইজেলউড ৯.৩-১-৪৩-১, অ্যাগার ১০-০-৩৮-১, জ্যাম্পা ১০-০-৪৪-১, লাবুশেন ১-০-১১-০, ফিঞ্চ ১-০-৯-০)।

ফল: ভারত ৭ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে ভারত ২-১ ব্যবধানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: রোহিত শর্মা

ম্যান অব দা সিরিজ: বিরাট কোহলি