পাকিস্তান সফরের দলে চমক হাসান মাহমুদ

এবারের বিপিএলে সম্ভাবনার যে ঝিলিক দেখিয়েছেন হাসান মাহমুদ, সেটিই তাকে নিয়ে এলো আরও বড় মঞ্চ আলোকিত করার চ্যালেঞ্জে। পাকিস্তান সফরের বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা পেয়েছেন ২০ বছর বয়সী এই পেসার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2020, 08:52 AM
Updated : 18 Jan 2020, 09:58 AM

তিন ম্যাচ সিরিজের এই দলে নতুন মুখ কেবল হাসানই। বিপিএলের পারফরম্যান্সেই দলে ফিরেছেন ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত, অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান ও পেসার রুবেল হোসেন।

সবশেষ ভারতে বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের বিপক্ষের দল থেকে বাদ পড়েছেন আবু হায়দার রনি, তাইজুল ইসলাম, আরাফাত সানি ও মোসাদ্দেক হোসেন। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম এই সফর থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আগেই।

পারিবারিক কারণে ভারত সফরে না যাওয়া তামিম ইকবাল প্রত্যাশিতভাবেই আছেন পাকিস্তান সফরের দলে।

ভারত সফরের মতো এই সফরেও টি-টোয়েন্টি দলকে নেতৃত্ব দেবেন মাহমুদউল্লাহ।

১৫ সদস্যের বাংলাদেশ দলের একটি উল্লেখযোগ্য দিক, স্পেশালিস্ট স্পিনার কেবল আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। স্পেশালিস্ট পেসার সেখানে ৫ জন।

বিপিএলের পারফরম্যান্সে ইমরুল কায়েসও প্রবলভাবে ছিলেন বিবেচনায়। তবে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন জানিয়েছেন, হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে শেষ পর্যন্ত ফেরা হয়নি ইমরুলের।

বিপিএলে এবার হাসান মাহমুদের বোলিং পরিসংখ্যান দেখলে আহামরি কিছু মনে হবে না। ১৩ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন, রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি ৯.২০। তার পরও এবারের আসরে দেশের ক্রিকেটের অন্যতম বড় প্রাপ্তি মনে করা হচ্ছে তাকে। মূল কারণ তার গতি ও সম্ভাবনা।

লক্ষীপুরের এই পেসার নিয়মিতই বল করেছেন ১৪০ কিলোমিটারের আশেপাশে। অনভিজ্ঞতার কারণে অনেক সময় রান দিয়েছেন বেশ, তবে দারুণ কিছু ডেলিভারিতে নিজের সম্ভাবনার প্রমাণও রেখেছেন। প্রধান নির্বাচকও নিশ্চিত করলেন, গতি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার দিকে তাকিয়েই নেওয়া হয়েছে হাসানকে।

মেহেদি দলে ফিরেছেন বিপিএলে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখিয়ে। অনেক দিন থেকেই তাকে মনে করা হচ্ছে বেশ সম্ভাবনাময়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের হয়ে একটি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিলেটে। জাতীয় দলের আশেপাশের ম্যাচগুলিতে খেলছেন নিয়মিতই। এবার বিপিএলে অফ স্পিনে ১২ উইকেট নিয়েছেন ওভারপ্রতি মাত্র ৬.৭৬ রান দিয়ে। ব্যাট হাতে ৩ ফিফটিতে ২৫৩ রান করেছেন ১৩৬.০২ স্ট্রাইক রেটে।

শান্তর ফেরা ও মোহাম্মদ মিঠুনের টিকে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়। গত সেপ্টেম্বরে দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে দুটি টি-টোয়েন্টি খেলে ভালো না করায় বাদ পড়েছিলেন শান্ত। এবারের বিপিএলের শুরুটাও ছিল তার চরম বাজে। তবে পরে কিছুটা রানে ফিরেছেন। শেষ দিকে দুটি ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। সেই দুই ম্যাচই দলে ফিরিয়েছে তাকে।

মিঠুন বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে ১৪ ম্যাচ খেলেছেন, ব্যাটিং গড় ১১.৭০। সবশেষ ভারত সফরে একটি ম্যাচ খেলে করেছিলেন ২৯ বলে ২৭। প্রধান নির্বাচক যা ইঙ্গিত দিলেন, ইমরুলের চোট শেষ পর্যন্ত সুখবর বয়ে এনেছে মিঠুনের জন্য।

বিপিএলের ব্যাটিং পজিশন বিবেচনায় নিলে দলে ওপেনারের ছড়াছড়ি। তামিমের সঙ্গে আছেন লিটন দাস, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, শান্ত ও আফিফ হোসেন। তবে প্রধান নির্বাচক জানালেন, আফিফ-শান্তকে মিডল অর্ডারেই বিবেচনা করা হয়েছে আপাতত। প্রয়োজনে পজিশন বদল হতে পারে যে কারও।

বিপিএলে মিডল অর্ডারে ব্যাটিং ও মিডিয়াম পেস বোলিং মিলিয়ে দারুণ পারফর্ম করা সৌম্য সরকারকে দলে নেওয়া হয়েছে একই ভূমিকায়।

বিপিএলে পারফর্ম করাদের মধ্যে দলে না থাকা উল্লেখযোগ্য নাম বাঁহাতি পেসার মেহেদি হাসান রানা ও ইবাদত হোসেন। গতির বিবেচনায়ই মূলত মেহেদি রানাকে টপকে গেছেন হাসান মাহমুদ। আর ইবাদতকে টেস্টের জন্য বিশেষভাবে তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানালেন প্রধান নির্বাচক।

বহু চর্চিত বাংলাদেশের এই পাকিস্তান সফরে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ তিনটি হবে আগামী ২৪, ২৫ ও ২৭ জানুয়ারি।

পাকিস্তান সফরের বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দল: মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, মুস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, আল আমিন হোসেন, রুবেল হোসেন, হাসান মাহমুদ।