বিপিএলের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ভালো উইকেট

কম রানের ম্যাচ, রানের জন্য ব্যাটসম্যানদের সংগ্রাম, উইকেটে দুই গতি, অসমান বাউন্স বিপিএলের আগের সব আসরের সাধারণ এক চিত্র। এবার অবশ্য ছিল অন্যরকম। উইকেটে ছিল ব্যাটসম্যানদের জন্য সহায়তা, বড় রান হয়েছে নিয়মিত। বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উইকেটের জন্য ফাইনালের দুই অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও আন্দ্রে রাসেলের প্রশংসা পেয়েছেন কিউরেটররা। 

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2020, 08:14 PM
Updated : 17 Jan 2020, 09:08 PM

সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে মিরপুরের উইকেট। টুর্নামেন্ট এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে খারাপ হতে থাকতো শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট। এবার অবশ্য হোম অব ক্রিকেটের উইকেট ছিল দারুণ। বিপিএলের সব আসর মিলিয়ে এবারই প্রথম এই মাঠেই দুইশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে কোনো দল।

উইকেট নিয়ে মুগ্ধতা আছে দুই অধিনায়কেরই। তবে রানার্সআপ মুশফিক এতো বেশি খুশি যে, তার কাছে এই আসরের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ভালো উইকেট।

“কিউরেটদের টুপি খোলা অভিনন্দন। এক-দুই ম্যাচ ছাড়া টুর্নামেন্ট জুড়ে আমরা ভালো উইকেট পেয়েছি। আপনি যদি অন্যসব বিপিএলের সঙ্গে তুলনা করেন, ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেট দেখেন, বোলারদের ইকোনমি দেখেন (তাহলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে)।”

দেশের বাইরে খেলতে গেলে এমন উইকেটেই খেলতে হবে। ব্যাটসম্যানদের জন্য রান থাকবে, বোলারদের জন্য উইকেট নেওয়ার, রানের গতিতে বাঁধ দেওয়ার চ্যালেঞ্জ থাকবে। কেবল স্পোর্টিং উইকেটে খেলেই সম্ভব সেই সব চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া।

“উইকেট যখন ভালো হবে, স্পোর্টিং হবে, সেখানে ব্যাটসম্যানদের জন্য যথেষ্ট রান থাকবে এবং বোলারদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে। আপনি এবারের পুরো বিপিএল দেখেন, স্পিনারদের জন্য খুব কঠিন ছিল। উইকেট অনেক ফ্ল্যাট ছিল, তাদের জন্য কোনো সহায়তা ছিল না। আগের বিপিএলগুলোতে উইকেট থেকে অনেক সহায়তা পেয়েছে, পাওয়ার প্লেতে তিন-চার ওভার বোলিং করেছে।”

“এবার যে উইকেটে খেলা হয়েছে, ভবিষ্যতেও যদি বেশিরভাগ সময় এমন উইকেটে বিপিএল হয় আমাদের ক্রিকেটের জন্য তা হবে দারুণ সহায়ক। আমাদের জাতীয় দলেও এমন খেলোয়াড় কম, যে কী না নিয়মিত ১৪০ কিংবা ১৫০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে রান করে। এমন উইকেটে যখন আপনি ১৮০ রানের লক্ষ্য দেবেন কিংবা ২০০ রানের লক্ষ্য তাড়া করবেন, আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।”

“আর বোলারদের জন্য, আমার মনে হয়, বিশ্বব্যাপী উইকেট এমনই ফ্ল্যাট থাকবে। তাদেরও অনেক কাজ করার বাকি আছে। আশা করি, তারাও চ্যালেঞ্জগুলো নেবে, কিভাবে বৈচিত্র্য বাড়ানো যায় যেন পাওয়ার প্লেতে কিংবা ডেথ ওভারে আরও কম রান দিতে পারে। অধিনায়কের জন্য চার ওভারে যত সম্ভব কম রান দেয়।”

স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স মনোযোগ কেড়েছে মুশফিকের। এতো জন এক সঙ্গে ভালো করেছে দেখে ভীষণ খুশি খুলনা টাইগার্স অধিনায়ক। স্থানীয় ক্রিকেটারদের তিনি দিলেন পরের আসরে এবারের পারফরম্যন্সের পুনরাবৃত্তির চ্যালেঞ্জ।

“এবার আমাদের স্থানীয় খেলোয়াড়রা খুব ভালো খেলেছে। আগে দেখা যেত, একজন-দুইজন ভালো খেলেছে। এবার অনেক বেশি খেলোয়াড় ভালো করেছে। আমি মনে করি, এটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য ভালো একটা লক্ষণ।”

“আশা করি, তারা কেবল এই এক বছর খেলে সন্তুষ্ট থাকবে না, এখান থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে পরের আসরে যেন আরও ভালো করতে পারে। অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে আপনি একটা আসরে হয়তো ভালো করতে পারেন, কিন্তু ধারাবাহিকভাবে ভালো করা কিন্তু অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। পরের বছর যেন এই পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি করতে পারে, এর চ্যালেঞ্জ তাদের সামনে থাকবে।” 

বিপিএলে নিয়মিতই খেলেন আন্দ্রে রাসেল। এবার রাজশাহী রয়্যালসের শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দিলেন সামনে থেকে। ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় জিতেছেন টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারও। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারও প্রশংসা করেছেন এবারের আসরের ভালো উইকেটের।

“কিউরেটররা খুব ভালো কাজ করেছে এবার। উইকেট খুব ভালো ছিল। স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হয়েছে। ব্যাটসম্যানরা সহায়তা পেয়েছে, পেসারদের জন্যও উইকেটে কিছু ছিল।”