পাকিস্তান সফর নিয়ে যখন ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান, তখনই নিজের অনিচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন মুশফিক। সফর নিশ্চিত হওয়ার পর এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার প্রধান নির্বাচককে বলেছেন তাকে দলে না রাখতে। নিজের চাওয়ার কথা জানিয়ে বিসিবিতে আনুষ্ঠানিক চিঠিও দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার বিপিএল ফাইনাল শেষে সংবাদ সম্মেলনে জানা গেল মুশফিকের নিজের বক্তব্য। বাংলাদেশ দলের সিনিয়র ক্রিকেটার জানালেন, পারিবারিক কারণেই তিনি যাচ্ছেন না পাকিস্তানে।
“আগেই বলে দিয়েছি যে আমি যাব না। এটা আমার পারিবারিক কারণ। আগেই অনুরোধ করেছি, তারা (বোর্ড) মেনে নিয়েছেন। অফিসিয়াল চিঠিও দিয়েছি।”
“আমার পরিবার ভয়ে শঙ্কিত, এই মানসিক অবস্থায় আমি গিয়ে খেলতে পারি না। এই তো, স্বাভাবিক।”
সিদ্ধান্ত নেওয়াটা অবশ্য সহজ ছিল না তার জন্য। একটি ম্যাচ বাইরে বসে থাকা তো বহুদূর, কখনও বাংলাদেশ দলের একটি অনুশীলন সেশনও যিনি মিস করতে চান না, সেই মুশফিকের জন্য গোটা একটি সিরিজ নিজের ইচ্ছায় বাইরে থাকা অনেক কঠিন সদ্ধান্ত। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তিনি বাস্তবতাকেই গুরুত্ব দিয়েছেন সবচেয়ে বেশি।
“বাংলাদেশের হয়ে একটি সিরিজ বিশ্রাম নিতে হবে, এটির চেয়ে বড় শাস্তি আমার জন্য আর হতে পারে না। আমার সামনে কিন্তু সুযোগ ছিল পিএসএলে খেলার। কিন্তু যখন জেনেছি যে পুরো টুর্নামেন্ট পাকিস্তানে হবে, আমি প্রথমেই না করে দিয়েছি। বলে দিয়েছি যে আমার পরিবার যেহেতু চাচ্ছে না, আমি যাব না। জীবনের চেয়ে কখনোই ক্রিকেট আগে নয়।”
ভবিষ্যতে যদি পাকিস্তানের চিত্র পাল্টায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে বলে নিজে নিশ্চিত হতে পারেন, তখন পাকিস্তানে যেতে আগ্রহী হবেন বলে জানালেন মুশফিক।
“পাকিস্তানের অবস্থা হয়তো আগের চেয়ে ভালো। তবে আমি চাই যে আগামী ২-৩ বছরে যদি অন্যান্য দলও যায় নিয়মিত, তাহলে ব্যক্তিগতভাবে সেই আত্মবিশ্বাস আমার আসবে। পাকিস্তানে আমি আগে সফর করেছি ২০০৮ সালে, ওই ঘটনার আগে (২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর সস্ত্রাসী হামলা)।”
“পাকিস্তানের সুযোগ-সুবিধা অনেক ভালো উপমহাদেশের মধ্যে। ওখানকার উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো। সেদিক থেকে অবশ্যই অনেক মিস করব। কিন্তু ভবিষ্যতে ২-৩ বছরের মধ্যে যদি সেখানে পরিস্থিতি ধারাবাহিকভাবে ভালো থাকে, অবশ্যই না যাওয়ার কারণ নেই।”
মুশফিকের অভাব পাকিস্তানে নিশ্চিতভাবেই অনুভব করবে বাংলাদেশ দল। তবে তিনি এটিকে বড় করে দেখছেন না। বরং ইতিবাচক দিকটি তুলে ধরলেন মুশফিক।
“ভারতে তো আমি ছিলাম, টেস্ট দুটি আড়াই দিন, তিন দিনে হেরেছি। আমরা ৫ সিনিয়র থাকা অবস্থায় অনেক ম্যাচ হেরেছি। অনেকে না থাকা অবস্থায় অনেক জিতেছি। এটা বলতে পারেন, থাকলে ভালো করার সুযোগ থাকত।”
“এটা একটা সুযোগও। টিম ম্যানেজমেন্ট যেহেতু নতুন ক্রিকেটার বের করে আনার চেষ্টা করছে, বাংলাদেশের ক্রিকেট খুঁজছে, আমার জায়গায় যে আসবে, তার জন্য সুযোগ নিজেকে মেলে ধরার। আমি দলকে শুভকামরা জানাই। আশা করি দল ভালো খেলবে।”