১২ ইনিংসে ১৫.৬০ গড়ে ২০ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ। তার দাপুটে বোলিংয়েই বাজে শুরুর পর ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছিল রংপুর রেঞ্জার্স। ওভার প্রতি দিয়েছেন ৭.০১ রান। সেরা ৩/১০। বিপিএলে সব মিলিয়ে তার উইকেট ৫০টি।
বেড়েছে গতি। বোলিংয়ে এসেছে কিছুটা বৈচিত্র্য। দুই-একটা খরুচে ওভার ছাড়া শেষের দিকে বেশিরভাগ ম্যাচেই ব্যাটসম্যানদের ভাবাতে পেরেছেন মুস্তাফিজ। প্রাথমিক পর্বেই শেষ হয়ে গেছে তরুণ পেসারের যাত্রা। তারপরও ফাইনালের আগে পর্যন্ত আছেন শীর্ষে। এবারের বিপিএল দিয়ে দিলেন যেন ফিরে আসার বার্তা।
বিপিএলে নিয়মিত ভালো করা রুবেলও টুর্নামেন্ট শেষ করেছেন ১৩ ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়ে। উইকেট প্রতি দিয়েছেন ১৭.৮৫ রান, ওভার প্রতি দিয়েছেন ৭.৩১ রান। সেরা ৩/১৭। দ্বিতীয় বোলার ও প্রথম পেসার হিসেবে বিপিএলে একশ উইকেটের পথে আরও এগিয়ে গেছেন তিনি। ৯০ উইকেট নেওয়া এই পেসারের চেয়ে এগিয়ে আছেন কেবল সাকিব আল হাসান (১০৬)।
গতবার চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে ব্যাটে-বলে আলো ছড়ানো রবি ফ্রাইলিঙ্ক এবার বোলিংয়ে আরও উজ্জ্বল। ১৩ ম্যাচে ১৮.৮৯ গড়ে ১৯ উইকেট নিয়ে আছেন তালিকার তিন নম্বরে। সেরা ৫/১৬। নতুন-পুরান দুই বলেই অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমকে দিয়েছেন নির্ভরতা। প্রয়োজনের সময় নিয়মিত এনে দিয়েছেন উইকেট।
শেষটায় চোট কিছুটা ভুগিয়েছে, বোলিংয়েও পড়েছে এর প্রভাব। তবে শুরুতে মুগ্ধতা ছড়ানো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মেহেদি হাসান রানা ১৮ উইকেট নিয়ে আছেন চার নম্বরে। তরুণ বাঁহাতি এই পেসার উইকেট প্রতি খরচ করেছেন ১৫.৮৩ রান, ওভার প্রতি ৭.৫০।
মেহেদি রানার মতো ১৮ উইকেট নিয়েছেন খুলনার দুই পেসার আমির ও শহিদুল। প্রথমবারের মতো বিপিএলের সেরা পাঁচে নেই কোনো স্পিনার।
প্রথম কোয়ালিফায়ারে বিপিএলের সব আসর মিলিয়ে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়ে সেরা পাঁচে চলে এসেছেন আমির। ১৭.৭৭ গড়ে বাঁহাতি এই পেসার নিয়েছেন ১৮ উইকেট। সেরা ৬/১৭। ইকোনমি ৬.৯০।
রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে যেন সুইং বোলিংয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন আমির। ফাইনালে সেই দলের বিপক্ষেই শুক্রবার মিরপুরে মুখোমুখি হবে খুলনা। অমন পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি করতে পারলে এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড গড়ার সুযোগ থাকবে আমিরের। গত আসরে ২৩ উইকেট নিয়ে রেকর্ডটি গড়েন সাকিব।
২০১৬ আসরে চট্টগ্রাম ভাইকিংসের হয়ে স্রেফ একটি ম্যাচ খেলেন শহিদুল। গত আসরে চট্টগ্রাম পর্বে রংপুরের হয়ে দারুণ বোলিংয়ে নজর কাড়েন। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং স্বর্গে তার ওপর আস্থা রেখেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। প্রতিদান দিতে ভুল করেননি শহিদুল। সেই আসরে ৪ ম্যাচ খেলে নেন ৫ উইকেট।
ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক দিন ধরেই ভালো করছেন। বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে নিয়মিত পারফরম করেন। এবার প্রথমবারের মতো বিপিএলে নিয়মিত খেলার সুযোগ পেয়ে মেলে ধরেছেন নিজেকে। ২০.৭২ গড়ে নিয়েছেন ১৮ উইকেট। সেরা ৪/২৩, ইকোনমি ৮.২৮।
ফ্রাইলিঙ্ক-আমির আলোর নিচে চাপা পড়ে গেছেন। তবে অনেকটা নীরবেই নিজের কাজ করে গেছেন শহিদুল। তাকে নিয়ে সেভাবে আলোচনা হয়নি, তবে নিজের দিনে পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন তিনিও। এখন পর্যন্ত টেবিলের যে চিত্র তাতে শহিদুল চূড়ায় থেকে আসর শেষ করলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।