সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতকে ১০ উইকেটে গুঁড়িয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এগিয়ে গেছে তিন ম্যাচের সিরিজে।
মুম্বাইয়ে মঙ্গলবার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত এক পর্যায়ে সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বড় স্কোরের। কিন্তু মাঝের ওভারগুলোতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় অস্ট্রেলিয়ান বোলিং। ভারত অলআউট হয় ২৫৫ রানে।
রান তাড়ায় ফিঞ্চ ও ওয়ার্নার পাত্তাই দেননি ভারতকে। অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনারই দলকে জিতিয়ে দিয়েছেন ৭৪ বল বাকি রেখে। দুজনই সেঞ্চুরি করে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফিরেছেন।
রেকর্ড বইয়ের বেশ কয়েকটি পাতায় জায়গা পেয়ে গেছে দুজনের ২৫৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। রান তাড়ায় যে কোনো উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার সেরা জুটি এটি। ১০ উইকেটের জয়ে সব দেশ মিলিয়েই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি। ভারতের বিপক্ষে সব দল মিলিয়ে যে কোনো উইকেটেই প্রথম আড়াইশ ছোঁয়া জুটিও এটিই।
ভারত নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে ১০ উইকেটে হারল পঞ্চমবার, দেশের মাটিতে মাত্র দ্বিতীয়বার।
ম্যাচের শুরুটায় যদিও ছিল অন্য ইঙ্গিত। ম্যাচের প্রথম ওভারেই মিচেল স্টার্কের বলে দারুণ দুটি ড্রাইভে চার মারেন রোহিত শর্মা। তবে স্টার্ক ও প্যাট কামিন্সের জুটি দ্রুতই গুছিয়ে নেয় নিজেদের। রোহিতকে ১০ রানে থামান স্টার্কই।
সেই ধাক্কা স্বাগতিকরা দারুণভাবে সামাল দেয় দ্বিতীয় উইকেটে। ৩ নম্বরে অসাধারণ সাফল্য পাওয়া কোহলি নিজে না নেমে তিনে পাঠান লোকেশ রাহুলকে। তার সঙ্গে শিখর ধাওয়ান গড়েন শতরানের জুটি। দুজন ব্যর্থ করে দিচ্ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সব প্রচেষ্টা।
তবে হাল না ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ানরা লড়াই চালিয়ে গেছেন। ফলও মিলেছে। ১২১ রানের জুটি ভেঙেছেন বাঁহাতি স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগার। রাহুল আউট হন ৪৭ রানে।
দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে ধাওয়ানকে থামিয়েছেন কামিন্স। ৯১ বলে বাঁহাতি ওপেনার করেছেন ৭৪ রান।
ভারতকে এরপর বড় ধাক্কা দেন অ্যাডাম জ্যাম্পা। শর্ট বলে ছক্কা মারার পরের বলেই ফিরতি ক্যাচ দেন কোহলি (১৬)। এই নিয়ে ৭ ইনিংসে কোহলিকে ৪বার আউট করলেন এই লেগ স্পিনার।
অস্ট্রেলিয়ার ৫ বোলারই নিয়েছেন উইকেট। ৩ উইকেট নিয়ে সফলতম বোলার স্টার্ক। তবে যথারীতি সেরা বোলার ছিলেন কামিন্স।
লক্ষ্য খুব কঠিন ছিল না। ওয়ার্নার ও ফিঞ্চের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে কাজ হয়ে যায় আরও সহজ। কোনো বোলারকেই পরোয়া না করে দুজন দলকে এগিয়ে নেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে।
দুই ব্যাটসম্যানকেই অবশ্য একবার করে আউট দিয়েছিলেন আম্পায়াররা। কিন্তু রিভিউয়ে টেকেনি সেই সিদ্ধান্ত।
ওয়ার্নার ৮৮ বলে স্পর্শ করেন ১৮তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। স্পর্শ করেছেন মার্ক ওয়াহর সেঞ্চুরি সংখ্যা। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে কেবল আর রিকি পন্টিংয়ের, ২৯টি।
ফিঞ্চ ছুটছেন ঠিক পেছনেই। ১৬ সেঞ্চুরিতে তিনি স্পর্শ করেছেন অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে। রেকর্ডের তিনে তারা দুজন আছেন যৌথভাবে।
শেষ পর্যন্ত ১৭ চার ও ৩ ছক্কায় ১১২ বলে ১২৮ রান করে অপরাজিত থাকেন ওয়ার্নার। ম্যাচের সেরাও তিনিই। অধিনায়ক ফিঞ্চ অপরাজিত থাকেন ১১৪ বলে ১১০ রানে।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ শুক্রবার রাজকোটে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৪৯.১ ওভারে ২৫৫ (রোহিত ১০, ধাওয়ান ৭৪, রাহুল ৪৭, কোহলি ১৬, শ্রেয়াস ৪, পান্ত ২৮, জাদেজা ২৫, শার্দুল ১৩, শামি ১০, কুলদীপ ১৭, বুমরাহ ০*; স্টার্ক ১০-০-৫৬-৩, কামিন্স ১০-১-৪৪-২, রিচার্ডসন ৯.১-০-৪৩-২, জ্যাম্পা ১০-০-৫৩-১, অ্যাগার ১০-১-৫৬-১)।
অস্ট্রেলিয়া: ৩৭.৪ ওভারে ২৫৮/০ (ওয়ার্নার ১২৮*, ফিঞ্চ ১১০*; শামি ৭.৪-০-৫৮-০, বুমরাহ ৭-০-৫০-০, শার্দুল ৫-০-৪৩-০, কুলদীপ ১০-০-৫৫-০, জাদেজা ৮-০-৪১-০)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ১০ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ১-০তে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: ডেভিড ওয়ার্নার