৪৫ ভালো সংখ্যা, অবসর ভাবনা প্রসঙ্গে গেইল

অগাস্টের পর থেকে আছেন জাতীয় দলের বাইরে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভবিষ্যৎ পরিষ্কার নয়। বয়সও হয়ে গেছে ৪০। আর কত দিন খেলবেন ক্রিস গেইল? ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে মনের দুয়ার খুলে দিলেন ক্যারিবিয়ান ওপেনার। জানালেন, খেলতে চান আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ৪৫ বছর পর্যন্ত চালিয়ে যেতে চান ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট।  

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2020, 12:57 PM
Updated : 9 Jan 2020, 03:18 PM

গত বিশ্বকাপের পরপর ক্রিকেট থেকে বিদায়ের আভাস দিয়েছিলেন গেইল। পরে মন বদল করে জানান, খেলা চালিয়ে যাওয়ার কথা। বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে খেলা এই ব্যাটসম্যান জানালেন, দিন দিন যেন আরও তরুণ মনে হচ্ছে নিজেকে।

“অনেক মানুষ এখনও ক্রিস গেইলকে মাঠে দেখতে চায়। খেলাটার জন্য এখনও আমার সেই একই রকম ভালোবাসা ও আবেগ রয়েছে। যত দিন সম্ভব আমি টি-টোয়েন্টি ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট চালিয়ে যাব। আমি মনে করি, আমার অনেক কিছু দেওয়ার আছে তাই, পৃথিবীর নানা প্রান্তে কিছু ম্যাচ খেলব। শরীর ঠিক আছে, আমি নিশ্চিত দিন দিন আমি ছোট হচ্ছি! তাই আমি সামনের দিকে তাকিয়ে আছি।”          

“৪৫ ভালো একটি সংখ্যা। চলো, ৪৫ নিয়ে কথা বলা যাক। আমার মনে হয়, এটা ভালো একটা সংখ্যা।”

ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ওপেনারদের একজন গেইল। টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। তরুণদের জানালেন, তার ধারে-কাছে যেতে কী করতে হবে।

“সারা পৃথিবীতে খেলতে হবে, নিজের নাম প্রতিষ্ঠা করতে হবে, সব ধরনের কন্ডিশনে পারফর্ম করতে হবে-এগুলো আমি যথেষ্টই করেছি। আমার কিছু প্রমাণ করার নেই, আমার ক্যারিয়ার কোথায় দাঁড়িয়ে আছে আপনারা জানেন। ওদের স্রেফ এই পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হবে।”

“আর কোনো ক্রিস গেইল কিংবা ইউনিভার্স বস আসবে না। গেইল সব সময় একজনই থাকবে এবং আমার মতো কেউ কখনও হবে না।”

১৯৯৯ সালে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় গেইলের। ক্রিকেট উপভোগ করছেন এখনও। যত দিন উপভোগ করবেন তত দিন চালিয়ে যেতে চান খেলা। জানালেন, অবসরের পর কোচিংয়ে যুক্ত হওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই তার।

“অবশ্যই এখনও ক্রিকেট উপভোগ করছি। আমার মনে হয়, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঠিক করার ব্যাপারে আমি একটু মন্থর। ২০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি, ২০ বছর ধরে এই খেলা খেলছি। ক্রিকেটের বাইরে জীবন থাকবেই। এমন একটা সময়ে এসে ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু কিছু পরিকল্পনা করা যায়, একই সঙ্গে কিছুটা ক্রিকেটও খেলা যায়। এটা সেই সময়ের মতো নয় যখন সব টুর্নামেন্টে খেলতাম, সব ম্যাচে খেলতাম। তাই কিভাবে এগোচ্ছি, সেক্ষেত্রে নিজেকে পর্যবেক্ষণ করতেই হয়।”

“কোচিং আমার পরিকল্পনায় নেই। তবে আমি সবসময়ই যেমন বলি, না কখনও বলা যাবে না। আমার মনে হয়, ক্রিকেটের পরও আমি কিছুটা ভ্রমণ করব। এমন কিছু জায়গা দেখতে চাই যেখানে আগে কখনও যাইনি। আমার একটি পরিবার আছে, তাদের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে চাই।”

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখছেন গেইল। তবে জানেন সুযোগ পাওয়ার পথটা ভীষণ কঠিন। সম্ভাবনাময় কয়েকজন তরুণ এরই মধ্যে জায়গা পাকা করার লড়াইয়ে নেমেছেন।

“যদি খেলতে পারি তাহলে দারুণ হবে। আমি যেমন বলেছি, দরজা খোলা রয়েছে। দেখা যাক, কি হয়। আমাদের কিছু উজ্জ্বল তরুণ ক্রিকেটারও রয়েছে। আবার পরিবারের কথা শোনার জন্যও একটা বিকল্প আমি খুলে রেখেছি। দেখা যাক, ইউনিভার্স বস কোন দিকে যায়।”  

ক্রিকেটের সঙ্গে জীবনকে না মেলানোর পরামর্শ দিয়েছেন গেইল। তাহলে জীবন আর ক্রিকেট দুইটাই থাকবে উপভোগ্য।

“জীবন সব সময়ই শুরু করা যায়। আমি সব সময়ই এটা উপভোগ করি। ক্রিকেটের সঙ্গে কখনও জীবনকে মেলানোর চেষ্টা করি না। পৃথিবীর যেখানেই আমি যাই, চেষ্টা করি যতটা সম্ভব উপভোগ করার। কারণ, গত ২০ বছর ধরে আমি ঘরের বাইরেই বেশি থাকি। নতুন মানুষ, নতুন ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেখা হয়, এগুলো আসলে পরিবার হিসেবে নতুন বন্ধন তৈরি করে। অসাধারণ একটা জীবন এবং যতক্ষণ পর্যন্ত আমি জীবন আর ক্রিকেটকে গুলিয়ে না ফেলব, ততক্ষণ পর্যন্ত উপভোগ করব।”