রাসেলকে ছাড়াই জিতে শীর্ষে রাজশাহী

নিয়মিত অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল মাঠে নামতে পারলেন না চোখের সমস্যায়। রাজশাহীর পারফরম্যান্স দেখে সেটা কে বলবে! ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শোয়েব মালিক নেতৃত্ব দিলেন সামনে থেকে। ব্যাটে-বলে দারুণ পারফরম্যান্সে তারা অনায়াসেই হারিয়ে দিল রংপুরকে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকসিলেট থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Jan 2020, 09:38 AM
Updated : 2 Jan 2020, 11:57 AM

নয় ম্যাচে ষষ্ঠ জয়ে রাজশাহী উঠে এলো পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। ৯ ম্যাচ খেলে রংপুর হারল ৬টিতেই।

ম্যাচের শুরু থেকেই রাজশাহী এগিয়েছে রংপুরকে পাত্তা না দিয়ে। আফিফ হোসেন ও লিটন দাস দলকে এনে দেন উড়ন্ত সূচনা।

ম্যাচের প্রথম ওভারেই আরাফাত সানির বলে আফিফের ছক্কায় শুরু হয় রাজশাহীর পথচলা। আরেক পাশে লিটন দাসও চেষ্টা করেন দ্রুত রান তুলতে। ৪ ওভারে উঠে যায় ৪৮।

১৫ বলে ১৯ রান করা লিটনকে ফিরিয়ে পঞ্চম ওভারে জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজুর রহমান। পরের ওভারে মোহাস্মদ নবির দারুণ টার্ন ও বাউন্সে বিভ্রান্ত হয়ে স্টাম্পড হয়ে যান আফিফ। ততক্ষণে ৩ ছক্কায় ১৭ বলে ৩২ রান করে ফেলেছেন তরুণ ব্যাটসম্যান।

জোড়া ধাক্কার পর ইরফান শুক্কুরকে নিয়ে জুটি গড়ে তোলেন মালিক। শুক্কুর যদিও ২০ রান করতে খেলেন ২০ বল। মালিক সচল রাখেন রানের চাকা। নিজের ইনিংসকে অবশ্য পূর্ণতা দিতে পারেননি, ফিরেন ৩১ বলে ৩৭ রান করে।

অসমাপ্ত সেই কাজ শেষ করেন রবি বোপারা। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে শেষ দিকে বাড়ান দলের রান। এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা মোহাম্মদ নওয়াজ দেন সঙ্গ। শেষ ৬ ওভারে আসে ৭২ রান।

মুস্তাফিজর রহমানের করা ইনিংসের শেষ ওভারের শেষ তিন বলে বাউন্ডারিতে বোপারা স্পর্শ করেন ফিফটি। ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ২৯ বলে ৫০। নওয়াজ অপরাজিত থাকেন ৯ বলে ১৫ রানে।

আগের তিন ম্যাচের ধারাবাহিকতায় এদিনও বোলিং ভালোই করছিলেন মুস্তাফিজ। ৩ ওভার শেষে তার নামের পাশে ছিল ১৯ রানে ২ উইকেট। কিন্তু শেষ ওভারে হজম করেন ২২ রান। রংপুরের ফিল্ডিংও ম্যাচ জুড়ে ছিল বেশ বাজে।

রংপুর রান তাড়ায় শুরু থেকেই ছিল পথহারা। ব্যর্থতার বলয় ছিড়ে বের হতে পারেননি শেন ওয়াটসন। রংপুর অধিনায়ক টানা চতুর্থ ম্যাচে ফিরেন দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে। নওয়াজের বলে স্টাম্প উন্মুক্ত করে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন বাজে ভাবে। তৃতীয় ওভারে রংপুরের রান তখন ৩।

২ চার ও ১ ছক্কায় ১৪ করে ক্যামেরন দেলপোর্ত ক্যাচ দেন দৃষ্টিকটু শটে। মোহাম্মদ নাঈম শেখ চেষ্টা করেন পাল্টা জবাব দেওয়ার। কিন্তু দুটি করে চার ও ছক্কায় আউট হয়ে যান ১৮ বলে ২৭ করে।

চতুর্থ উইকেটে টম অ্যাবেল ও ফজলে মাহমুদ রাব্বি ৬৪ রানের জুটি গড়েন বটে। তবে ক্রমশ বাড়তে থাকা রান রেটের দাবি মেটাতে পারেননি। ২৪ বলে ২৯ করেন অ্যাবেল, ২৬ বলে ৩৪ ফজলে রাব্বি।

মোহাম্মদ নবি তখনও ছিলেন বলে খানিকটা টিকে ছিল রংপুরের সম্ভাবনা। কিন্তু অন্য প্রান্তে আল আমিন পারছিলেন না ব্যাটে-বলে লাগাতে, পারেননি নবিকে স্ট্রাইক দিতে। পরে বড় শট খেলতে গিয়েই বিদায় নেন নবি। ১৭ বলে ১৮ করে ইরফানের বলে বোল্ড হন আল আমিন।

কার্যকর ইনিংসের পর বোলিংয়েও দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন মালিক। তবে ঝড়ো ফিফটির জন্য ম্যাচের সেরা বোপারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৭৯/৪ (লিটন ১৯, আফিফ ৩২, মালিক ৩৭, শুক্কুর ২০, বোপারা ৫০*, নওয়াজ ১৫*; সানি ৪-০-৪৫-১, মুস্তাফিজ ৪-০-৪১-২, তাসকিন ৪-০-৩৬-০, নবি ৪-০-২৬-১, দেলপোর্ত ২-০-১১-০, অ্যাবেল ২-০-১৮-০)।

রংপুর রেঞ্জার্স :  ২০ ওভারে ১৪৯/৭ (নাঈম ২৭, ওয়াটসন ২, দেলপোর্ত ১৪, অ্যাবেল ২৯, ফজলে মাহমুদ ৩৪, নবি ৫, আল আমিন ১৮, জহুরুল ; নওয়াজ ৪-০-২১-২, ইরফান ৪-০-২৩-১, মালিক ৪-০-২৭-২, আফিফ ২-০-১৬-০, আবু জায়েদ ২-০-১৭-০, বোপারা ১-০-১০-০, কামরুল রাব্বি ৩-০-৩২-২)।

ফল: রাজশাহী রয়্যালস ৩০ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: রবি বোপারা