চার দিনের টেস্ট চালুর কথা ভাবছে আইসিসি

তিন দিন, চার দিনের টেস্ট একসময় ক্রিকেটে দেখা যেত প্রায়ই। সময়বিহীন টেস্টও ছিল দীর্ঘ দিন ধরে। সময়ের পরিক্রমায় টেস্ট বাধ্যতামূলক পাঁচ দিনের হয়ে গেছে অনেক দিন ধরেই। তবে আবারও ফিরে আসতে পারে চার দিনের টেস্ট ম্যাচ। ভবিষ্যৎ সূচির পরবর্তী চক্র থেকে চার দিনের টেস্ট চালুর কথা গুরুত্ব দিয়েই ভাবছে আইসিসি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2019, 12:52 PM
Updated : 30 Dec 2019, 01:51 PM

আইসিসি ভবিষ্যৎ সূচির বর্তমান চক্র শেষ হবে ২০২৩ সালে। পরের চক্র ২০২৩ থেকে ২০৩১। সেই চক্রেই চার দিনের টেস্ট চালু করতে চায় বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে আগামী বছর।

১৯৭৪ সালের পর থেকে চার দিনের টেস্ট ম্যাচ বন্ধ ছিল। ২০১৭ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা ও গত জুলাইয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ড চার দিনের টেস্ট খেলেছে আইসিসির বিশেষ অনুমতি নিয়ে। পরের চক্রে এটিই বাধ্যতামূলক করতে চায় আইসিসি।

ভাবনার পেছনে মূল কারণ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর ক্রমবর্ধমান চাপে সূচিতে ফাঁকা জায়গা সঙ্কুচিত হয়ে আসা। বিভিন্ন দেশ টি-টোয়েন্টি লিগের জন্য সুনির্দিষ্ট সূচি রাখতে চাইছে। সবচেয়ে প্রভাবশালী ক্রিকেট বোর্ড, বিসিসিআই চাইছে নিজেদের দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোর জন্য সূচিতে আরও বেশি সময়। পাশাপাশি টেস্ট ম্যাচের ক্রমবর্ধমান খরচও ভাবাচ্ছে বোর্ডগুলোকে। সব মিলিয়েই চলছে চার দিনের টেস্টের ভাবনা। 

২০১৫ থেকে ২০২৩ ভবিষ্যৎ সূচির যে চক্র, পরের চক্রে সূচি যদি এরকমই থাকে, চার দিনের টেস্ট ম্যাচ আয়োজন করলে ৮ বছরে সূচিতে জায়গা বেড়ে যাবে ৩৩৫ দিন। নতুন অনেক কিছুই তাই করার সুযোগ থাকবে বলে ভাবছে আইসিসি। তিন বা পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের সংখ্যাও বাড়ানোর সুযোগ থাকবে। টিভি সম্প্রচার থেকে বোর্ডগুলোর আয় বাড়ানোর সুযোগও সৃষ্টি হবে।

চার দিনের টেস্ট হলে, দিনে ৯০ ওভারের জায়গায় ৯৮ ওভার খেলা হবে। তবে সব মিলিয়ে ৫ দিনের টেস্টের চেয়ে কেবল ৫৮ ওভার কম হবে খেলা।

গত বছর থেকে এ পর্যন্ত ৬০ শতাংশ টেস্ট ম্যাচ শেষ হয়েছে ৪ দিনেই। আইসিসির ভাবনার পেছনে এটিও ভূমিকা রেখেছে। 

অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক টিম পেইনের অবশ্য চার দিনের টেস্ট ম্যাচের ধারণা খুব পছন্দ হয়নি। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বক্সিং ডে টেস্টে জয়ের পর এই কিপার ব্যাটসম্যান ব্যাখ্যা করলেন তার যুক্তি।

“চার দিনের টেস্ট হলে অ্যাশেজে হয়তো আমরা জয়-পরাজয় দেখতাম না। প্রতিটি ম্যাচই তো পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে! পাঁচ দিনের টেস্ট হলে সেটি মানসিকতার পরীক্ষা, শারীরিকভাবেও কঠিন। চার দিনের প্রথম শ্রেণির ম্যাচগুলির চেয়ে টেস্ট ম্যাচ তাই ক্রিকেটারদের সামর্থ্যের পরীক্ষা নেয় বেশি। টেস্ট ক্রিকেটকে সেভাবেই গড়ে তোলা হয়েছে। আমি আশা করি, সেটি এমনই থাকবে।”

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের সংগঠন, ফিকার প্রধান টনি আইরিশ তুলে ধরলেন দুটি দিক।

“চার দিনের টেস্ট ম্যাচের দুটি দিক আছে। ক্রিকেটের দিক থেকে একটি, সূচির দিক থেকে আরেকটি। এটি চালু হলে সূচি নিয়ে ঠাসাঠাসির ব্যাপারটির হয়তো সুরাহা হবে। তবে আমাদের দুর্ভাবনার জায়গা, ফাঁকা হওয়া জায়গায় আরও অনেক বেশি ক্রিকেট ঠেসে দেওয়া হবে। এটি চালু করার আগে তাই কাঠামো নিয়ে সম্মিলিতভাবে ভাবতে হবে।”

“ক্রিকেটের দিক থেকে এটি কিভাবে কাজ করে, সেটি উপলব্ধি করতে হবে এবং ক্রিকেটারদের কাছে নিয়ে যেতে হবে ব্যাপারটি। অতীতে অনেক ক্রিকেটারই এটির বিপক্ষে ছিল। তবে যদি একটি পরিষ্কার চিত্র ফুটিয়ে তোলা যায় যে এটি কিভাবে কাজ করবে ও সূচির কাঠামো যদি ভালো হয়, তাহলে ক্রিকেটাররা সেটি বিবেচনা করে দেখতে পারে।”