সৌম্যর ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসেও পারল না কুমিল্লা

লিটন দাস ও আফিফ হোসেনের আগ্রাসী জুটিতে শুরু। শোয়েব মালিক ও আন্দ্রে রাসেলের জুটির তাণ্ডবে ইনিংসের শেষ। এই চতুষ্টয়ের ব্যাটিংয়ে যে উচ্চতায় উঠল রাজশাহী, সৌম্য সরকারের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসেও সেই রানের নাগাল পেল না কুমিল্লা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Dec 2019, 09:17 AM
Updated : 28 Dec 2019, 01:23 PM

বিপিএলে শনিবারের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে ১৫ রানে হারিয়েছে রাজশাহী রয়্যালস।

দারুণ ফর্মে থাকা রাজশাহীর এটি ষষ্ঠ ম্যাচে পঞ্চম জয়, সাত ম্যাচে কুমিল্লার পরাজয় পাঁচটি। 

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে এ দিন ২০ ওভারে রাজশাহী তোলে ৪ উইকটে ১৯০ রান। সৌম্যর দারুণ ইনিংসের পরও কুমিল্লা যেতে পারে ১৭৫ রান পর্যন্ত।

চার বছর পর বিপিএলে ফিফটির স্বাদ পেলেন সৌম্য। ৫ চার ও ৬ ছক্কায় ৪৮ বলে করেন ৮৮। তবে রান তাড়ায় আরেকপাশ থেকে সেভাবে সঙ্গী পাননি কাউকে।

এই ম্যাচের আগে বিপিএলে ৫৭ ম্যাচে সৌম্যর ফিফটি ছিল কেবল একটি, ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর রংপুর রাইডার্সের হয়ে। চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে সেই ম্যাচের ৫৮ রানই এতদিন ছিল তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস।

অপরাজিত ৬১ রানের ইনিংস ও গুরুত্বপূর্ণ একটি উইকেটে ম্যাচের সেরা রাজশাহীর শোয়েব মালিক।

মালিককে ঝড় তোলার মঞ্চ গড়ে দিয়েছিল দুই ওপেনার লিটন ও আফিফ। দাসুন শানাকা দেশে ফিরে যাওয়ায় কুমিল্লাকে নেতৃত্ব দেন দাভিদ মালান। টস জিতে নামেন তারা বোলিংয়ে। কিন্তু কুমিল্লার বোলিংকে পাত্তাই দেননি রাজশাহীর দুই ওপেনার।

আবু হায়দারের প্রথম ওভারে আফিফের দুর্দান্ত কাভার ড্রাইভ ও লিটনের ফ্লিকে বাউন্ডারিতে শুরু করে রাজশাহী। দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে রান আসে ৫৬।

দুজনকেই মনে হচ্ছিল অপ্রতিরোধ্য। কিন্তু দুজনের কেউই বড় করতে পারেননি ইনিংস। ১৯ বলে ২৪ রান করে ফেরেন লিটন। আফিফের ব্যাট থেকে আসে ৩০ বলে ৪৩।

চারে নামা রবি বোপারা সুবিধে করতে পারেননি। ১২ বলে ১০ করে স্টাম্পে টেনে আনেন মুজিব-উর-রহমানের অনেক বাইরের বল।

সেখান থেকে দারুণ জুটিতে ইনিংস শেষ করেন মালিক ও রাসেল। শেষ বলে রান আউট হওয়া মালিক ৩৮ বলে করেন ৬১। অধিনায়ক রাসেল ৪ ছক্কায় অপরাজিত ২১ বলে ৩৭।

দুজনের জুটিতে ৮৪ রান আসে ৪২ বলে।

বড় রান তাড়ায় প্রয়োজন ছিল আগ্রাসী শুরুর। কুমিল্লা ছিল উল্টো পথে। রবিউল ইসলাম রবির সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা স্টিয়ান ফন জিল। প্রথম ৪ ওভারে তোলে তারা মাত্র ২৫ রান।

রবি আউট হন ১৫ বলে ১২ করে। তিনে নেমে অধিনায় মালান ফিরে যান ৩ রানেই। সৌম্য শুরু থেকেই খেলেন দারুণ সব শট। তবে আরেকপাশে রান নিতে ধুঁকছিলেন ফন জিল। শেষ পর্যন্ত ২৩ বলে ২১ করে বোল্ড হয়ে যান তিনি মালিকের বলে।

সৌম্য এরপরও চেষ্টা করে গেছেন। সাব্বির রহমানের সঙ্গে একটি জুটিও গড়েন। কিন্তু পরিস্থিতির দাবি ছিল বড় শট। সাব্বিরের ব্যাটিংয়ে দেখা গেল না সেই চেষ্টাই। তাই প্রয়োজনীয় রান রেট বাড়তে থাকে ক্রমেই।

২৩ বলে ২৫ করে সাব্বির বিদায় নেন অষ্টাদশ ওভারে। কুমিল্লার লক্ষ্য ততক্ষণে নাগালের বাইরে। শেষ দিকে বিশাল দুটি ছক্কা মারেন আসরে প্রথম খেলতে নামা অলরাউন্ডার ডেভিড ভিসা।

জয় নিশ্চিত দেখে কয়েক পা দৌড়ে আলতো করে বল করেন আন্দ্রে রাসেল। সৌম্য কাজে লাগিয়েছেন বিশাল সব ছক্কায়। তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস তাতে বড় হয়েছে। পরাজয়ের ব্যবধান ছোট হয়েছে। কিন্তু ম্যাচের ভাগ্যে হেরফের হয়নি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৯০/৪ (লিটন ২৪, আফিফ ৪৩, মালিক ৬১*, বোপারা ১০, রাসেল ৩৭*; আবু হায়দার ৩-০-৩১-০, মুজিব ৪-০-২৫-১, আল আমিন ৪-০-৪৯-০, ভিসা ২-০-৩০-০, সানজামুল ৪-১-২০-১, রবি ১-০-১৪-০, সৌম্য ২-০-১৮-১)।

কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ২০ ওভারে ১৭৫/৪ (রবি ১২, ফন জিল ২১, মালান ৩, সৌম্য ৮৮*, সাব্বির ২৫, ভিসা ১৬*; রাসেল ৩-০-৪৪-১, ইরফান ৪-০-২৪-১, তাইজুল ১-০-৬-০, ফরহাদ ৪-০-৪৮-১, অলক ১-০-৯-০, আফিফ ১-০-৮-০, বোপারা ৩-০-১৬-০, মালিক ৩-০-১৯-১)।

ফল: রাজশাহী রয়্যালস ১৫ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শোয়েব মালিক