ওয়াটসনকে এনেও লড়াই করতে পারল না রংপুর

দল পড়ে আছে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে। মরিয়া রংপুর তাই উড়িয়ে এনেছে শেন ওয়াটসনকে। আগের রাতে ঢাকা পৌঁছে অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার শুক্রবার মাঠে নেমে গেলেন দলের অধিনায়ক হয়ে। তবে পারলেন না দলের ত্রাতা হতে। খুলনার কাছে পাত্তাই পেল না রংপুর।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2019, 03:16 PM
Updated : 27 Dec 2019, 05:06 PM

বঙ্গবন্ধু বিপিএলে শুক্রবার দ্বিতীয় ম্যাচে একতরফা ম্যাচে রংপুর রেঞ্জার্সকে ৫২ রানে হারিয়েছে খুলনা টাইগার্স।

৬ ম্যাচে ৪ জয়ে খুলনা উঠে এলো পয়েন্ট টেবিলের তিনে। সমান ম্যাচে ৫ পরাজয়ে রংপুর থেকে গেল তলানিতেই।

ম্যাচের শুরুতে অবশ্য দারুণ বোলিংয়ে খুলনাকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। তবে সেই ধাক্কা সামলে মুশফিকুর রহিম ও নাজিবউল্লাহ জাদরানের ব্যাটে খুলনা ২০ ওভারে তোলে ১৮২ রান।

রান তাড়ায় রংপুর জয়ের সম্ভাবনাই জাগাতে পারেনি কখনও। ২০ ওভারে করেছে ৯ উইকেটে ১৩০। খুলনার পেসার শহিদুল ইসলাম নিয়েছেন ২৩ রানে ৪ উউকেট।

বিপিএল অভিষেকে টস জিতে খুলনাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ওয়াটসন। ম্যাচের শুরুটা ছিল চমকপ্রদ। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে মেহেদি হাসান মিরাজকে ওপেনিংয়ে পাঠায় তারা। সঙ্গে নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সাবেক অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের ব্যাটে প্রথম ওভারেই আসে চারটি চার।

মুকিদুল ইসলামের করা ইনিংসের প্রথম দুটি বল ছিল লেগ স্টাম্পে। দুটিই কাজে লাগান শান্ত। একই ওভারে দুটি দৃষ্টিনন্দন চার মারেন মিরাজ। পরের ওভারে মুস্তাফিজকেও দারুণ এক শটে চার মারেন মিরাজ।

কিন্তু এই ওভারেই খুলনাকে কাঁপিয়ে দেন মুস্তাফিজ। পরপর দুটি দারুণ ডেলিভারিতে বিদায় করেন মিরাজ ও রাইলি রুশোকে।

মিরাজের ডেলিভারিটি ছিল গতিময়, অ্যাঙ্গেলে বেরিয়ে ব্যাট ছুঁয়ে আশ্রয় নেয় কিপারের গ্লাভসে। রুশোর বলটি ছিল আরও দুর্দান্ত। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানর অফ স্টাম্পের একটু বাইরে পিচ করে বল বেরিয়ে যায় সুইং করে। স্লিপে রিফ্লেক্স ক্যাচ নেন ওয়াটসন।

চারে নামা শামসুর রহমান দারুণ এক ছক্কার পর আউট হয়ে যান ১৩ রানে। ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারানো খুলনাকে এরপর এগিয়ে নেন শান্ত ও মুশফিক।

এবারের আসরে আগের চার ইনিংসে শান্ত রান ছিল ৪, ০, ১, ০। এ দিন খেলছিলেন দারুণ। কিন্তু বড় কিছু করতে ব্যর্থ আবারও। ২২ বলে ৩০ করে আউট হয়েছেন মোহাম্মদ নবিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে।

মুশফিক আর নাজিবউল্লাহর জুটি এরপরই। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৮২ রান যোগ করেছেন দুজন ৫১ বলে।

২৬ বলে ৪১ রান করে শেষের আগের ওভারে আউট হয়েছেন নাজিবউল্লাহ। ৪৮ বলে ৫৯ রান করে মুশফিক বিদায় নেন শেষ ওভারে। ততক্ষণে দল পেয়ে গেছে বড় পুঁজি।

রান তাড়ায় রংপুরের বড় ভরসা ছিলেন ওয়াটসন। তিনিই বিদায় নেন সবার আগে। দ্বিতীয় ওভারেই ফেরেন ৫ রানে।

আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ দারুণ কিছু শট খেললেও বড় করতে পারেননি ইনিংস। মোহাম্মদ আমিরের গতি সামলাতে না পেরে আউট হন ৯ বলে ২০ করে।

এরপর তারা উইকেট হারিয়েছে নিয়মিত বিরতিতেই। চারে নামা লুইস গ্রেগোরি চেষ্টা করেছেন উত্তেজনা জিইয়ে রাখতে। তবে পারেননি ম্যাচ জমাতে। ৩ ছক্কায় ২৬ বলে ৩৪ করে আউট হয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার তানভির ইসলামকে ওড়াতে গিয়ে।

এরপর কেবল শেষের অপেক্ষা। শেষ ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজ ২ ছক্কায় ১১ বলে ২১ করে কিছুটা কমিয়েছেন ব্যবধান। তার পরও খুলনার জয় বড় ব্যবধানেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৮২/৭ (শান্ত ৩০, মিরাজ ১২, রুশো ০, শামসুর ১৩, মুশফিক ৫৯, নাজিবউল্লাহ ৪১, ফ্রাইলিঙ্ক ৯, শহিদুল ০*, আমির ১*;  মুকিদুল ২-০-৩৪-০, মুস্তাফিজ ৪-০-২৮-৩, নবি ৪-০-১৬-১, গ্রেগোরি ৪-০-৩৬-২, দেলপোর্ত ৩-০-৪০-০, সঞ্জিত ৩-০-২৬-০)।

রংপুর রেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৩০/৯ (ওয়াটসন ৫, নাঈম ২০, দেলপোর্ত ৯, গ্রেগোরি ৩৪, ফজলে মাহমুদ ৪, নবি ৭, সাদমান ১৬, জহুরুল ১, সঞ্জিত ৫*, মুকিদুল ০, মুস্তাফিজ ২১*; আমির ৩-০-১৫-১, ফ্রাইলিঙ্ক ৪-১-২৩-১, মিরাজ ৪-০-২০-০, শফিউল ২-০-১৪-১, তানভির ৩-০-২৯-২, শহিদুল ৪-০-২৩-৪)।

ফল: খুলনা টাইগার্স ৫২ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শহিদুল ইসলাম