সেঞ্চুরিয়ান মালানকে ছাপিয়ে আফিফ

সাব্বির রহমান-ইয়াসির আলীদের বাজে দিনে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে টেনেছেন দাভিদ মালান। ইংলিশ ব্যাটসম্যানের দারুণ সেঞ্চুরি ছাপিয়ে গেছে আফিফ হোসেনের চমৎকার ইনিংস। শেষটায় রবি বোপারা ও আন্দ্রে রাসেলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সহজ জয়ই পেয়েছে রাজশাহী রয়্যালস।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Dec 2019, 02:30 PM
Updated : 24 Dec 2019, 04:22 PM

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবারের দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতে রাজশাহী। ১৭১ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ১৩ বল বাকি থাকতে।

অনেক বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা জাগিয়েও ১৭০ রানে থামে কুমিল্লা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দলকে এগিয়ে নেওয়া মালান অপরাজিত থাকেন ১০০ রানে। তার ৫৪ বলের ইনিংস গড়া নয় চার ও পাঁচ ছক্কায়। তাকে খুব একটা সহায়তা দিতে পারেননি অন্য ব্যাটসম্যানরা।

রান তাড়ায় আফিফ হোসেন দলকে পথ দেখালেন লম্বা সময়। শুরুতে সহায়তা পান লিটন দাসের। শেষটায় দারুণ সঙ্গ দেন বোপারা।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি কুমিল্লার। আগের ম্যাচে অপরাজিত ৯৬ রানের চমৎকার ইনিংস খেলা ভানুকা রাজাপাকসা ফিরে যান দুই অঙ্ক ছুঁয়ে।

মিডল অর্ডার থেকে প্রমোশন পেয়ে ওপেনিংয়ে নামা মালান এগিয়ে নেন দলকে। ব্যাট হাতে বিপিএলে বাজে সময় কাটানো সাব্বির আবারও ব্যর্থ। আন্দ্রে রাসেলের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন ৫ রান করে। শেষ পাঁচ ম্যাচে চারবার আউট হলেন এক অঙ্কের ঘরে।

চারে নেমে মালানের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়েন সৌম্য। সে সময় রাজশাহীর কোচ ওয়াইজ শাহ বলছিলেন, ১৯০ রানের মধ্যে থামাতে পারা হবে অনেক বড় ব্যাপার। প্রতিপক্ষের বাজে ব্যাটিং আর নিজেদের দারুণ বোলিংয়ে কুমিল্লাকে এর অনেক আগেই থামিয়ে দেয় রাজশাহী।

বোপারার বলে অলক কাপালীকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় সৌম্যর সম্ভাবনাময় ইনিংস। ছয় ম্যাচেই দুই অঙ্কে গেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু একবারও ছুঁতে পারেননি পঞ্চাশ। ২২ বলে করেন ২০ রান।

সৌম্যর উইকেট দিয়ে পথ হারানোর শুরু কুমিল্লার। প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি দাসুন শানাকা। ইয়াসির আলি ফিরেন শূন্য রানে। আসরে তৃতীয়বার দুই অঙ্কে যেতে ব্যর্থ হলেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

রবিউল ইসলাম রবি ও সুমন খানকে পরপর দুই বলে ফিরিয়ে দিয়ে হ্যাটট্রিকের আশা জাগান মোহাম্মদ ইরফান। দীর্ঘদেহী পেসারের হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেন মুজিব উর রহমান। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক ফিরিয়ে মালানের সেঞ্চুরিতে রাখেন অবদান।     

রান তাড়ায় দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন লিটন ও আফিফ। আল আমিন হোসেনের এক ওভার থেকে দুই তরুণ তুলে নেন ২৪ রান। আরেকটি সম্ভাবনাময় ইনিংসকে পূর্ণতা দিতে পারেননি লিটন। দুটি করে ছক্কা ও চারে ১৯ বলে ২৭ রান করে ফিরে যান মুজিবের বলে বোল্ড হয়ে। ভাঙে ৪২ বলে ৬০ রানের জুটি।

বোলিংয়ে ফিরে ওভারের শেষ বলে শোয়েব মালিককে ফেরান আল আমিন। পরে আবার আক্রমণে এসে নিজের প্রথম বলে বিদায় করেন আফিফকে। ততক্ষণে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ছাড়িয়ে গেছেন এই সংস্করণে নিজের আগের সেরা ৬৫। ৫৩ বলে আট চার ও দুই ছক্কায় আফিফ ফিরেন ৭৬ রান করে। তার বিদায়ে ভাঙে ৩৭ বল স্থায়ী ৬২ রানের জুটি।

লিটনের সঙ্গে জুটিতে ২৩ বলে আফিফের অবদান ছিল ২৮। রবি বোপারার সঙ্গে ৬২ রানের জুটিতে তার অবদান ২২ বলে ৩৯। 

আল আমিনের হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেওয়া বোপারাকে নিয়ে বাকিটা সহজেই সারেন রাসেলকে নিয়ে। বোপারা অপরাজিত থাকেন ৪০ রানে। চার হাঁকিয়ে দলের জয়কে সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়া রাসেল করেন ২১।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ২০ ওভারে ১৭০/৮ (রাজাপাকসা ১০, মালান ১০০*, সাব্বির ৫, সৌম্য ২০, শানাকা ১১, ইয়াসির ০, মাহিদুল ৪, রবি ৫, রবি ০, মুজিব ২*; রাসেল ৪-০-২৬-২, ইরফান ৪-০-২৩-২, আফিফ ৩-০-২৩-১, রাব্বি ১-০-১৩-০, নাহিদুল ১-০-১৩-০, মালিক ১-০-১০-০, কাপালী ১-০-১২-০, বোপারা ৩-০-১৯-১, আবু জায়েদ ২-০-২৪-২)

রাজশাহী রয়্যালস: ১৭.৫ ওভারে ১৭১/৩ (লিটন ২৭, আফিফ ৭৬, মালিক ১, বোপারা ৪০*, রাসেল ২১*; মুজিব ৪-১-১৭-১, সুমন ৩-০-৩৮-০, আল আমিন ৩.৫-০-৪৯-২, শানাকা ৩-০-২৪-০, রবি ৩-০-২৪-০, সৌম্য ১-০-১৪-০)

ফল: রাজশাহী রয়্যালস ৭ উইকেটে জয়ী