পাকিস্তানের ম্যাচ পাকিস্তানেই হবে: পিসিবি সভাপতি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে পাকিস্তানের নির্বাসনে থাকার দিন শেষ হয়েছে বলে মনে করেন পিসিবি সভাপতি এহসান মানি। এখন থেকে পাকিস্তানের সব ম্যাচ পাকিস্তানেই হবে, জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। করাচিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাকিস্তানের টেস্ট সিরিজ জয়ের পর পিসিবি প্রধানের কণ্ঠে শোনা গেল এই দৃঢ় উচ্চারণ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2019, 02:26 PM
Updated : 23 Dec 2019, 02:46 PM

২০০৯ সালের মার্চে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। এই সিরিজ দিয়েই টেস্ট ক্রিকেট ফিরেছে পাকিস্তানে।

নিজেদের সব ম্যাচ নিজেদের মাঠেই খেলার প্রত্যয় পিসিবি প্রধান এমন সময় ব্যক্ত করলেন, যখন বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। আগামী মাসে পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ কেবল টি-টোয়েন্টি খেলতে চায়, টেস্ট খেলতে চায় নিরোপেক্ষ ভেন্যুতে।

তবে মানির বার্তা শুধু বাংলাদেশ নয়, পাকিস্তানের সব প্রতিপক্ষের জন্য।

“পাকিস্তানের ঘরের টেস্ট কোথায় হবে, এটি নিয়ে কারও কোনো ভ্রান্ত ধারণা থাকা উচিত নয়। বাংলাদেশ হোক বা অন্য যে কোনো দলের বিপক্ষে, পাকিস্তানের সব ম্যাচ পাকিস্তানেই হবে। আমি এখনও আশা করি, বিসিবি বিষয়টি বিবেচনা করবে এবং মেনে নেবে যে, তাদের পাকিস্তান সফরে না আসার কোনো কারণ নেই।”

শ্রীলঙ্কার এবারের সফর থেকেই এভাবে জোর গলায় দাবি জানানোর সাহস খুঁজে নিয়েছেন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মানি।

“শ্রীলঙ্কা যদি আসতে পারে, যাদের নিয়ে আসা ছিল খুব ঝুঁকিপূর্ণ, তার মানে এটি নিরাপদ। যদি ছোটখাটো কিছুও ঘটত, তখন না হয় সবাই বলতে পারত এখানে আসা নিরাপদ নয়। তারা (শ্রীলঙ্কা) এখানকার মানুষকে বিশ্বাস করেছে এবং এসেছে। পরে তারা এমনকি আফসোসও করেছে, যদি তারা সীমিত ওভারের সিরিজও খেলতে পারত! কারণ, তারা যা শুনেছে এবং এখানকার যে বাস্তবতা, তা অনেকটাই ভিন্ন।”

এই বছরের শুরুতে নিউ জিল্যান্ড সফরে অল্পের জন্য সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়া থেকে বেঁচে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। এখন ভারত জুড়ে চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। সময়ের সব বাস্তবতা তুলে ধরে পিসিবি প্রধান চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাখলেন বিসিবিকে।

“আমি দীর্ঘদিন আইসিসির সঙ্গে ছিলাম। আমি জানি এটা কীভাবে কাজ করে। তাদেরকে প্রমাণ করতে হবে পাকিস্তান নিরাপদ নয়। আমরা মনে করি আমরা নিরাপদ এবং বিশ্বকেও আমরা দেখিয়েছি সেটি।”

“ক্রাইস্টচার্চের ঘটনা মনে করুন (সন্ত্রাসী হামলা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া), এমন ঘটনা অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড, এমনকি বিশ্বের যে কোন জায়গায় ঘটতে পারে। নিরাপত্তার দিক থেকে, পাকিন্তানের চেয়ে ভারতে এখন গণ্ডগোল অনেক বেশি হচ্ছে। আমি কোনো খেলোয়াড়ের নিরাপত্তা বা সুরক্ষা নিয়ে ঝুঁকি নেব না। এখানে আসা নিয়ে যাদের দুর্ভাবনা আছে, তাদের কথা শুনব, তবে শেষ পর্যন্ত তাদের প্রমাণ করতে হবে এখানে আসা নিরাপদ নয়।”

বাংলাদেশের সফর নিয়ে আপাতত বিসিবির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় পিসিবি। সিদ্ধান্ত জানার পর অবস্থা বুঝে তারা নেবে ব্যবস্থা।

“এসব সিদ্ধান্ত নিয়ে আইসিসিতে আলোচনা করার সুযোগ আমাদের অবশ্যই আছে। আপাতত বেশি কিছু বলতে চাই না, কারণ বিসিবির সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। যখন তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কাছে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানাবে, তার পর আমরা করণীয় দেখব।”

“বাংলাদেশের মেয়েদের দল পাকিস্তানে এসেছিল, অনূর্ধ্ব-১৬ দলও এবং তারা খুব খুশি হয়ে ফিরে গেছে। কাজেই আমরা তাদের কোনো সংশয়েই রাখতে চাই না, তারা যদি খেলতে চায়, সেটি হবে পাকিস্তানেই।”