বাংলাদেশের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ মিসবাহ-আজহার

মিসবাহ-উল-হক বলছেন ‘ভীষণ অন্যায়।’ আজহার আলির মতে, কোনো অজুহাতই গ্রহণযোগ্য নয়। পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজ খেলতে না চাওয়ার সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের ওপর বেজায় চটেছেন পাকিস্তানের কোচ ও অধিনায়ক।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2019, 12:46 PM
Updated : 23 Dec 2019, 01:04 PM

আইসিসির ভবিষ্যৎ সফরসূচী অনুযায়ী, ২ টেস্ট ও ৩ টি-টোয়েন্টির সিরিজ খেলতে আগামী মাসে পাকিস্তানে যাওয়ার কথা বাংলাদেশ দলের। তবে বাংলাদেশের বোর্ড এরই মধ্যে পাকিস্তানের বোর্ডকে জানিয়ে দিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে বাংলাদেশ কেবল টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যেতে চায় পাকিস্তানে। অনুরোধ করা হয়েছে নিরপেক্ষ কোনো ভেন্যুতে টেস্ট সিরিজ আয়োজন করতে।

বাংলাদেশের এই চাওয়াকে ভালোভাবে নেয়নি পাকিস্তান। পিসিবির প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান কয়েকদিন আগে বলেছেন, বাংলাদেশকে কড়া জবাব দিয়েছেন তারা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষে সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান কোচ মিসবাহর কণ্ঠেও শোনা গেল ক্ষোভ।

“টেস্ট ক্রিকেট চালু থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা (বাংলাদেশ) না এলে পাকিস্তানের জন্য সেটি হবে ভীষণ হতাশার। এই সময়ে এখানে না আসার কোনো অজুহাত থাকতে পারে না। নিরাপত্তার ছুতা দিলে তা হবে খুবই খোঁড়া। কারণ আন্তর্জাতিক সিরিজ এখন এখানে হচ্ছে, দলগুলি আসছে ও খেলছে। বাংলাদেশও টি-টোয়েন্টি খেলতে চাইছে, কিন্তু টেস্ট কেন খেলতে চাইছে না, তা আমার বোধের বাইরে।”

“কোনো কারণই দেখতে পাচ্ছি না আমি (টেস্ট না খেলার)। আমার মতে, এটি স্রেফ একটি অজুহাত, আর কিছু নয়। পাকিস্তানের প্রতি এটা হবে ভীষণ অন্যায়। কারণ আমরা এমনিতেই টেস্ট অনেক কম খেলতে পাই। নিয়মিত আরও বেশি টেস্ট খেলতে চাই আমরা।”

টেস্ট অধিনায়ক আজহার আলির কণ্ঠেও শোনা গেল একই সুর। তিনি তুলে ধরলেন এশিয়ান ভ্রাতৃত্ববোধের দিকটিও।

“আমি নিশ্চিত পিসিবি ব্যাপারটি দেখছে। তবে আমি বুঝতে পারছি না, সফরে না আসার কারণ কী হতে পারে। এটি আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা। অনেক দলই এখানে আসছে-যাচ্ছে। বিশ্ব একাদশ এখানে খেলে গেছে, যেখানে সময়ের অনেক বড় ক্রিকেটাররা ছিলেন। পিএসএলের কিছু ম্যাচ হয়েছে এখানে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, শ্রীলঙ্কা দল এখানে এসে কেবল একটি নয়, দুটি টেস্ট খেলে গেল।”

“যদি এশিয়ার এক দেশ আরেক দেশকে সমর্থন না করে, এশিয়ার এক বোর্ড আরেক বোর্ডের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে আমরা কোন পথে এগোব?”

পাকিস্তান অধিনায়ক আইসিসির প্রতি আহবান জানিয়েছেন এখানে ভূমিকা রাখতে।

“আমরা এমনিতেই টেস্ট অনেক কম খেলি। বাংলাদেশও খুব বেশি খেলার সুযোগ পায় না। আমাদের উচিত তাই পরস্পরকে সহযোগিতা করা। আমি আইসিসিকেও বলব এগিয়ে আসতে, কারণ সফরে না আসার কোনো কারণ নেই।”

“এখানে সবকিছুই মসৃণভাবে চলছে, মাঠে দর্শক ভীড় করছে। সবকিছুই নিখুঁতভাবে হচ্ছে। আমরা মানসম্পন্ন ক্রিকেটও দেখছি। তো, আমার মনে হয় না সফরে না আসার কোনো কারণ আছে।”

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সোমবার সমাপ্ত সিরিজ দিয়ে ১০ বছর পর টেস্ট ক্রিকেট ফিরেছে পাকিস্তানে। তবে অন্য দলগুলি সামনে পাকিস্তানে যাবে কিনা, সেটির নিশ্চয়তা নেই এখনও। গত ১০ বছরে অন্য দলগুলির সঙ্গে পাকিস্তান নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেললেও বাংলাদেশকে কখনও আমন্ত্রণ জানায়নি দুবাই-আবু ধাবির মতো জায়গায়।

মাঝের এই সময়টায় সীমিত আকারে সীমিত ওভারের সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে সফর করেছে জিম্বাবুয়ে, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিশ্ব একাদশও গিয়েছিল একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে। তবে প্রতিবারই দলগুলোতে ছিলেন না শীর্ষ ক্রিকেটারদের অনেকে। যে ক্রিকেটাররা গিয়েছিলেন, লোভনীয় অঙ্কের বোনাস দিয়ে তবেই তাদের রাজি করানো হয়েছিল।