ফ্লেচারের সেঞ্চুরিতে থামল খুলনার জয়রথ

ভালো শুরুগুলো বড় করতে পারছিলেন না আন্দ্রে ফ্লেচার। অবশেষে পারলেন বিস্ফোরক এই ওপেনার। উপহার দিলেন আসরের প্রথম সেঞ্চুরি। বিধ্বংসী এক ইনিংস খেললেন জনসন চার্লস। দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তায় বড় সংগ্রহ গড়া সিলেট থান্ডার থামাল খুলনা টাইগার্সের জয়রথ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Dec 2019, 09:32 AM
Updated : 21 Dec 2019, 11:30 AM

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে শনিবারের প্রথম ম্যাচে ৮০ রানে জিতেছে মোসাদ্দেক হোসেনের দল। ২৩৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৯ বল বাকি থাকতে ১৫২ রানে গুটিয়ে যায় খুলনা। টানা চার হারের পর জয় পেল সিলেট। টানা তিন জয়ের পর টুর্নামেন্টে প্রথম হারের তেতো স্বাদ পেল মুশফিকুর রহিমের দল।
 
ফ্লেচারের সেঞ্চুরি ও চার্লসের ৯০ রানের ওপর ভর করে ৫ উইকেটে ২৩২ রান করে সিলেট। বিপিএলের ইতিহাসে এর চেয়ে বড় স্কোর আছে কেবল তিনটি।  
 
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি সিলেটের। আসরে প্রথমবারের মতো মাঠে নামা ওপেনার আব্দুল মজিদ ফিরে যান প্রথম ওভারেই।
 
ক্রিজে গিয়েই ঝড় তোলেন চার্লস। দারুণ সঙ্গ পান ফ্লেচারের। দুই ক্যারিবিয়ান টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের ব্যাটে দ্রুত এগোয় সিলেট।
 
চার্লস পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ২৫ বলে, ফ্লেচারের লাগে একটি বেশি। ২৮ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করা জুটি তিন অঙ্কে যান ৫২ বলে। জুটির পরের পঞ্চাশ আসে কেবল ১৭ বলে।
 

চার্লসকে এলবিডব্লিউ করে ৭০ বল স্থায়ী ১৫০ রানের জুটি ভাঙেন শহিদুল ইসলাম। ক্যারিবিয়ান টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ৩৮ বলে ১১ চার ও পাঁচ ছক্কায় ফিরেন ৯০ রান করে।
সাজানো মঞ্চ কাজে লাগাতে পারেননি মোহাম্মদ মিঠুন, মোসাদ্দেক হোসেন ও নাজমুল হোসেন মিলন। ১৯তম ওভারে মোহাম্মদ আমিরকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ফ্লেচার ছাড়িয়ে যান এবারের আসরে সর্বোচ্চ মুশফিকের ৯৬, পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি।
৫৩ বলে তিন অঙ্ক ছোঁয়া ফ্লেচার শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১০৩ রানে। তার ৫৭ বলের ইনিংসটি গড়া পাঁচ ছক্কা ও ১১ চারে।   রান তাড়া করে জিততে ভালোবাসে খুলনা। তবে এদিন লক্ষ্যটা তাদের জন্যও ছিল বেশি। মনির হোসেনের করা ইনিংসের প্রথম বল ছিল ওয়াইড। পরের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা সাইফ হাসান যেতে পারেননি বেশিদূর। দুই চারে ২০ রান করে ফিরেন রান আউট হয়ে। ক্রিজে গিয়েই ঝড় তোলা রাইলি রুশো এগিয়ে নেন খুলনাকে।
পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর বেশিক্ষণ টিকেননি রুশো। নাভিন-উল-হকের ফুলটস বলে ধরা পড়েন সীমানায়। দক্ষিণ আফ্রিকান বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ৩২ বলে খেলা ৫২ রানের ইনিংস গড়া চারটি করে ছক্কা ও চারে।
বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তামিম ইকবালকে পেছনে ফেলেই বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। এদিন বেশিক্ষণ টিকেননি শামসুর রহমান।
শেষের দিকে ২০ বলে ৪৪ রানের বিস্ফোরক ইনিংসে ব্যবধান কিছুটা কমান ফ্রাইলিঙ্ক। চোটের জন্য ব্যাটিংয়ে নামেননি খুলনার শফিউল ইসলাম।
৩৭ রানে ৩ উইকেট নেন ক্রিসমার সান্টোকি। দুটি করে উইকেট নেন ইবাদত হোসেন ও মনির।
আসরের প্রথম সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন ফ্লেচার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট থান্ডার: ২০ ওভারে ২৩২/৫ (ফ্লেচার ১০৩*, মজিদ ২, চার্লস ৯০, মিঠুন ৩, মোসাদ্দেক ১১, নাজমুল মিলন ১১, সোহাগ ০; ফ্রাইলিঙ্ক ৪-০-৩৭-২, আমির ৪-০-৪৫-০, শফিউল ৪-০-৪৪-১, শহিদুল ৪-০-৪৮-১, রবিউল ৩-০-৪৪-১, মিরাজ ১-০-১০-০)
খুলনা টাইগার্স: ১৮.৩ ওভারে ১৫২ (রহমানউল্লাহ ০, সাইফ ২০, রুশো ৫২, মুশফিক ১২, শামসুর ৭, ফ্রাইলিঙ্ক ৪৪, মিরাজ ৪, শহিদুল ২, আমির ৪, রবিউল ০, শফিউল আহত অনুপস্থিত; মনির ৩-০-৩১-২, সান্টোকি ৪-০-৩৭-৩, সোহাগ ৪-০-৩৫-০, মোসাদ্দেক ১-০-৮-০, ইবাদত ৩.৩-০-১৭-২, নাভিন ৩-০-২১-১)
ফল: সিলেট থান্ডার ৮০ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: আন্দ্রে ফ্লেচার