বিপিএলের ঢাকা পর্ব যেমন কাটল দেশের ক্রিকেটারদের

বিদেশি বড় তারকা কমই এসেছেন বিপিএলের এবারের আসরে। গুরুত্ব পাচ্ছেন স্থানীয় ক্রিকেটাররা। টপ অর্ডারে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাচ্ছেন নিয়মিত। বোলিংয়েও তাদের হাতে গুরুত্বপূর্ণ সময় হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বল।   

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2019, 06:45 PM
Updated : 15 Dec 2019, 06:45 PM

সাম্প্রতিক সময়ে নিয়মিত বোলিং করছেন সৌম্য সরকার। এই তরুণ ক্রমেই হয়ে উঠছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার। মাথা খাটিয়ে বল করায় সাফল্য পাচ্ছেন নিয়মিত। এখন পর্যন্ত নিয়েছেন ৪ উইকেট। তার চেয়ে বেশি উইকেট আছে কেবল থিসারা পেরেরার। ব্যাট হাতে অবশ্য সেই পুরানো সমস্যায় ভুগছেন, সম্ভাবনাময় ইনিংসগুলোকে দিতে পারছেন না পূর্ণতা।

নাসির হোসেন, সাব্বির হোসেন সংগ্রাম করছেন নিজেদের ফিরে পেতে। এখন পর্যন্ত আলোর রেখা দেখা যায়নি দুই তরুণের ব্যাটিংয়ে। ভুগছেন মুস্তাফিজুর রহমানও। বাঁহাতি এই পেসারের বোলিং নিয়ে হতাশার কথা জানিয়েছেন হাবিবুল বাশার।

ঢাকা পর্ব শেষে ছয় ব্যাটসম্যানের রান ছুঁয়েছে তিন অঙ্ক। তাদের পাঁচ জনই স্থানীয়। ১১৭ রান করে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে আছেন চাডউইক ওয়ালটন। শীর্ষ আটে তিনিই একমাত্র বিদেশি।

একশ বা এর বেশি রান করেছেন মোহাম্মদ মিঠুন, তামিম ইকবাল, মোসাদ্দেক হোসেন ও এনামুল হক। রান সংগ্রাহকদের সেরা আটে আছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও লিটন দাস।

সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসটি মিঠুনের। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে ৪৮ বলে করেছিলেন অপরাজিত ৮৪ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি খেলেন নাঈম। তরুণ এই ওপেনার চট্টগ্রামের বিপক্ষে করেন ৭৮ রান।

৩০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত আসরের সেরা বোলিং ফিগার থিসারার। ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে লঙ্কান অলরাউন্ডারের পরে আছেন আল আমিন হোসেন। অলক কাপালী ৩ উইকেট নিয়েছেন ১৭ রানে।

লঙ্কান অলরাউন্ডার দাসুন শানাকার (৭৫*) পরেই আছেন তামিম। গত বিপিএলের ফাইনালের সেঞ্চুরিয়ান খেলেছেন ৭৪ রানের ইনিংস। স্থানীয়দের মধ্যে ফিফটি করেছেন এনামুল, ইমরুল ও মোসাদ্দেক। ঢাকার বিপক্ষে খেলা মোসাদ্দেকের অপরাজিত ৬০ তরুণ এই অলরাউন্ডারের ক্যারিয়ার সেরা। 

সবে টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছে, এখনই খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স মূল্যায়নের সময় আসেনি বলে মনে করেন মাহমুদউল্লাহ।

“আমাদের দলে ইমরুল খুব ভালো ব্যাটিং করছে, মুস্তাফিজকে যখন খেলছিলাম সে ভালো বোলিং করেছে। ওর সঙ্গে কথাও হয়েছে, ও কঠোর পরিশ্রম করছে। তামিম রান পেয়েছে, মুশফিক রান পাচ্ছে। নাঈম ভালো ব্যাটিং করেছে, দারুণ একটি ইনিংস খেলেছে। আমার মনে হয়, আমরা সঠিক পথে আছি।”

বঙ্গবন্ধু বিপিএলে একমাত্র স্থানীয় কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। স্থানীয় খেলোয়াড়দের বেশ কিছু ইতিবাচক ব্যাপার তার চোখে ধরা পড়েছে।

“আমার মনে হয়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয়রা খুব ভালো রান করছে। আপনারা দেখেন যে প্রথম দুটি ম্যাচে স্থানীয় ব্যাটসম্যানরা রান করেছে। আমার মনে হয়, সিলেটে ওরা রান করবে। তারা ভালো বোলিংয়ের বিরুদ্ধেও রান করছে এবং এই ধরনের (ভালো) উইকেটে খেললে আমাদের খেলোয়াড়দের শট আরও বাড়বে।”

“এর আগে আমরা চিন্তা করতাম যে, বল মারলে কি পার হবে কিনা, এই চিন্তাটা সবসময় থাকতো। কিন্তু দেখুন এখন লিটন অনেক সেনসিবল ব্যাটিং করছে। যেমন উইকেটে যেভাবে ব্যাটিং করা দরকার সেটাই সে করছে। আর ইমরুল ভালো ব্যাটিং করেছে, মিঠুন প্রথম ম্যাচে ভালো করেছে, তামিম ভালো করেছে। আমাদের স্থানীয় ক্রিকেটাররা কিন্তু ভালো ব্যাটিং করছে।”

স্থানীয় ক্রিকেটারদের রান পাওয়ার পেছনে ভালো উইকেটের অবদান দেখেন ঢাকা প্লাটুন কোচ সালাউদ্দিন।

“আমার মনে হয়, এই উইকেটের সঙ্গে যদি তারা দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে তাহলে তাদের আত্মবিশ্বাস আসবে এবং শটের রেঞ্জও বাড়বে আস্তে আস্তে।”