বিপিএলে ঢাকার উইকেটে মুগ্ধ সবাই

বল ব্যাটে আসছিল, ব্যাটসম্যানরা সহজে রান করতে পারছিলেন। স্পিনারদের জন্য ছিল না বাড়তি সুবিধা, গ্রিপ করছিল না খুব একটা। দেড়শ ছাড়ানো রান হয় বেশিরভাগ ম্যাচে। কোচ থেকে খেলোয়াড়, সবাই মুগ্ধ বিপিএলে ঢাকা পর্বের উইকেট দেখে। 

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2019, 05:33 PM
Updated : 15 Dec 2019, 05:33 PM

বরাবরই বিপিএলে ঢাকার উইকেট যেন এক রহস্য হয়ে ছিল। অজানা কারণে এই টুর্নামেন্টে রান হতো না। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ কিংবা আন্তর্জাতিক ম্যাচে রান হয়, কিন্তু বিপিএল এলেই যেন কিছু একটা হতো। স্পিনাররা পেতেন প্রবল সুবিধা, রানের জন্য সংগ্রাম করতে হতো ব্যাটসম্যানদের।

প্রথম কয়েকটি ম্যাচের পরই উঠতো প্রশ্ন। কম রানের ম্যাচের জন্য কাঠগড়ায় উঠতো উইকেট। অমন উইকেটের সমালোচনা করায় শাস্তি পর্যন্ত পেতে হয়েছিল ক্রিকেটারদের। তেমন উইকেট ভেবেই যেন এসেছিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার রবি বোপারা।

“ঢাকায় বরাবরই লড়াই হয়। হয়তো কম রানের ম্যাচ হয়, কিন্তু লড়াই হয়।”

উইকেট থেকে বোলাররা প্রবল সুবিধা পেতেন বলেই একশর আশেপাশের স্কোর নিয়ে লড়াই করা সম্ভব হতো। এবার উইকেট বেশ ভালো। প্রতিপক্ষের দারুণ বোলিং আর নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় কম রানে গুটিয়ে যাওয়া দলগুলো লড়াই করতে পারছে না এবার।

৯১ রানে অলআউট হওয়া সিলেট থান্ডার রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে হারে ৮ উইকেট। আন্দ্রে রাসেলের দল জয় তুলে নেয় ৫৫ বল বাকি থাকতে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ১৪৫ রানের লক্ষ্য খুলনা টাইগার্স পেরিয়ে যায় ৩৭ বল বাকি থাকতে। ঢাকা প্লাটুনের ১৩৪ রান তাড়ায় রাজশাহী জিতে ৯ উইকেটে।

ঢাকা পর্বে আট ম্যাচের ১৬ ইনিংসের নয়টি দেখেছে দেড়শ ছাড়ানো স্কোর। একশর নিচে গুটিয়ে যায় দুটি ইনিংস।  

এমন উইকেটে স্পিনারদের জন্য চ্যালেঞ্জ দেখছেন সিলেটের অফ স্পিনার নাঈম হাসান। 

“উইকেটে পরিবর্তন এসেছে বলতে, ব্যাটিংয়ের জন্য একটু সহায়ক হয়েছে। বল সহজেই ব্যাটে আসে, স্কিড করে। এতে ব্যাটসম্যানদের একটু কম সমস্যা হয়।”

চোট থেকে ফেরার পর কেবল একটি ম্যাচ খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। তাতেই উইকেটের পরিবর্তনটা বুঝতে পেরেছেন চট্টগ্রাম অধিনায়ক।

“উইকেটটা অসাধারণ ছিল। ব্যাটিং করার জন্য দারুণ ছিল। স্পিনারদের জন্য খুব একটা সুবিধা ছিল না। তবে আপনি লেংথে হিট করতে পারলে বাড়তি বাউন্স বা সিম মুভমেন্ট পেতে পারেন। উইকেটের কথা বললে, এটা খুবই ভালো উইকেট।”

অভিজ্ঞ মাশরাফি বিন মুর্তজা, তরুণ মোসাদ্দেক হোসেন প্রশংসা করেছেন উইকেটের। একই রকম প্রশংসা এসেছে ঢাকার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের কাছ থেকেও। এতো ভালো উইকেট দেখে একটু অবাকই হয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, উইকেট ভালো হবে জানলে দল সাজাতেন অন্যভাবে!  

“আমি যদি জানতাম যে ঢাকার উইকেট এমন হবে তাহলে আমার দল আরেকটু অন্যরকম হতো (হাসি)! আমি আসলে বেশ অবাক। এটা আসলে প্রশংসার দাবি রাখে যে এমন উইকেট টি-টোয়েন্টিতে পাচ্ছি এবং খুব ভালো রান হচ্ছে।”

“সত্যি কথা বললাম, যদি এমন উইকেটের কথা জানতাম তাহলে আমার কৌশল বদলে যেত। কারণ, আমার কাছে এখন মনে হচ্ছে অন্য ধরনের ক্রিকেটার নিলে আরও ভালো হতো। যাই হোক, যেটা হয়ে গেছে সেটা গেছে। তবে এই ধরনের উইকেটের প্রশংসা করতেই হবে। এমন উইকেট আমরা অনেক বছর ধরে পাইনি।”