শানাকার খুনে ব্যাটিংয়ে ঘায়েল রংপুর

ম্যাচের শুরুতে দাপট দেখাল রংপুর রেঞ্জার্স। দারুণ বোলিংয়ে বেঁধে রাখল কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের ব্যাটসম্যানদের। শেষের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে মোমেন্টাম নিজেদের দিকে নিয়ে এলেন দাসুন শানাকা। বোলিংয়ে সেটা ধরে রাখলেন মুজিব উর রহমান, আল আমিন হোসেনরা। একপেশে ম্যাচে দাপুটে জয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএল শুরু করল কুমিল্লা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2019, 02:46 PM
Updated : 11 Dec 2019, 06:39 PM

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবারের দ্বিতীয় ম্যাচে ১০৫ রানে জিতেছে কুমিল্লা। ১৭৩ রান তাড়ায় ১৪ ওভারে ৬৮ রানে গুটিয়ে যায় রংপুর।

বিপিএলে রানের দিক দিয়ে এর চেয়ে বড় জয় আছে কেবল একটি। ২০১৩ সালে সিলেট রয়্যালসকে ১১৯ রানে হারিয়েছিল চিটাগং কিংস।

অধিনায়কোচিত ইনিংসে কুমিল্লার বড় জয়ের নায়ক শানাকা। কঠিন সময়ে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রায় একার চেষ্টায় দলকে নিয়ে যান পৌনে দুইশ রানে। ৩১ বলে ৯ ছক্কা ও তিন চারে ৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন লঙ্কান অলরাউন্ডার। 

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই কুমিল্লা হারায় ইয়াসির আলি চৌধুরিকে। নেপালে খেলে আসা এই ব্যাটসম্যান প্রমোশন পেয়ে ওপেনিংয়ে নেমে মোহাম্মদ নবির প্রথম বলে আলগা শটে ফিরেন বোল্ড হয়ে।

জুনায়েদ খানের করা পরের ওভারে দুই চার ও এক ছক্কায় ১৪ রান নিয়ে ডানা মেলেন সৌম্য। তবে তাকে বেশি দূর যেতে দেননি মুস্তাফিজ। আক্রমণে এসে প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে। পুল করার চেষ্টায় শর্ট মিডউইকেট ধরা পড়ে শেষ হয় তার ২৬ রানের ইনিংস।   

ঝড় তোলার আগেই ভানুকা রাজাপাকসেকে থামান সঞ্জিত সাহা। পরে তরুণ এই অফ স্পিনার ধরেন বড় শিকার। বিদায় করে দেন দাভিদ মালানকে।

তাসকিন আহমেদকে চমৎকার এক স্কুপে বাউন্ডারি হাঁকানো সাব্বিরকে থামান মুস্তাফিজ। জাতীয় দলে জায়গা হারানো সাব্বির ফিরেন ১৯ রান করে।

শুরুতে একটু শান্তই ছিলেন শানাকা। প্রথম ১৪ বলে করেন ১৫ রান। অষ্টাদশ ওভারে গ্রেগরিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ডানা মেলেন। সেই ওভারেই আবার ছক্কায় ওড়ান লুইস গ্রেগরিকে।

প্রথম ৩ ওভারে কেবল ১২ রান দেওয়া মুস্তাফিজের ওপর দিয়ে যেন ঝড় বয়ে যায় পরের ওভারে। প্রথম বলটি ছিল ডট। পরের দুই বলে আসে ছক্কা। ‘নো’ বলও ছক্কায় ওড়ান শানাকা। ফ্রি-হিটে হাঁকান সবচেয়ে বড় ছক্কা, বল গিয়ে পড়ে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের ছাদে! এর আগে সেখানে বল পাঠাতে পেরেছিলেন কেবল ক্রিস গেইল।

২৩ বলে ছয় ছক্কা ও দুই চারে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন শানাকা। ছক্কা বৃষ্টি এরপরও থামেনি। জুনায়েদ খানের করা ইনিংসের শেষ ওভারে হাঁকান তিন ছক্কা ও এক চার।

শেষ ২ ওভারে আসে ৪৯ রান। তিন রান অতিরিক্ত থেকে, ৪৬ রানই আসে শানাকার ব্যাট থেকে।

রান তাড়ায় আবু হায়দারকে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করলেও মোহাম্মদ শাহজাদ যেতে পারেননি বেশি দূর। ফজলে মাহমুদকে বোল্ড করার পর গ্রেগরিকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান আল আমিন।

ডানহাতি এই পেসারের হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেওয়া নবি বিদায় নেন দুই অঙ্ক ছুঁয়ে। নিজের প্রথম ওভারে রংপুর অধিনায়কের উইকেট নেন ইদানিং নিয়মিত বোলিং করা সৌম্য। পরের ওভারে ফিরে এক প্রান্ত আগলে রাখা মোহাম্মদ নাঈম শেখের প্রতিরোধ ভাঙেন তিনি।

এরপর আর বেশিদূর এগোয়নি রংপুরের ইনিংস। ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পাওয়া জাকির হাসান ব্যাটিংয়ে নামেননি। 

১৫ রানে ৩ উইকেট নেন আল আমিন। দুটি করে উইকেট নেন সানজামুল ইসলাম ও সৌম্য।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ২০ ওভারে ১৭৩/৭ (ইয়াসির ০, রাজাপাকসে ১৫, সৌম্য ২৬, মালান ২৫, সাব্বির ১৯, শানাকা ৭৫*, মাহিদুল ২, আবু হায়দার ৬, সানজামুল ০*; নবি ৩-০-১৪-১, জুনায়েদ ৪-০-৪৭-০, সঞ্জিত ৪-০-২৬-২, মুস্তাফিজ ৪-০-৩৭-২, তাসকিন ২-০-২৩-০, গ্রেগরি ৩-০-২৫-২)

রংপুর রেঞ্জার্স:  ১৪ ওভারে ৬৮ (শাহজাদ ১৩, নাঈম ১৭, জহুরুল ৫, মাহমুদ ১, গ্রেগরি ০, নবি ১১, সঞ্জিত ০, জুনায়েদ ৩, তাসকিন ১, মুস্তাফিজ ৮*, জাকির আহত অনুপস্থিত; মুজিব ৩-০-৭-১, আবু হায়দার ২-০-১৯-১, আল আমিন ৩-০-১৪-৩, শানাকা ১-০-৬-০, সৌম্য ২-০-১২-২, সানজামুল ২-০-৪-২, সাব্বির ১-০-৪-০)

ফল: কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ১০৫ রানে জয়ী 

ম্যান অব দা ম্যাচ: দাসুন শানাকা