ক্যারিবিয়ান ঝড়ে উড়ে গেল ভারত

পেশি শক্তি, উদ্ভাবনী ক্ষমতা, স্কিল ও নান্দনিকতা, সব মিলিয়ে যেন আদর্শ টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং। কেরালার উইকেট ছিল খানিকটা শুষ্ক। সেই মন্থর ২২ গজেই উঠল ক্যারিবিয়ান ঝড়। তাতে উড়ে গেল ভারত। ৮ উইকেটের দারুণ জয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমতা ফেরাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2019, 05:45 PM
Updated : 9 Dec 2019, 06:45 AM

প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড় টপকে গিয়েছিল ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচে রান তাড়ায় সফরকারীরা জিতল প্রবল প্রতাপে। তিন ম্যাচ সিরিজে এখন ১-১ সমতা।

থিরুভানান্তাপুরামে রোববার ভারতকে ১৭০ রানে আটকে রেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ৯ বল বাকি রেখে।

খানিকটা মন্থর উইকেটে ১৭১ রান তাড়া হতে পারত কঠিন। কিন্তু দাপুটে ব্যাটিংয়ে সেটিকেই অনায়াস বানিয়ে ছেড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

রান তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অনেকটা এগিয়ে দেয় উদ্বোধনী জুটি। এভিন লুইস ও লেন্ডল সিমন্স তোলেন ৭৩ রান।

জুটি অবশ্য আগেই ভাঙতে পারত। ভুবনেশ্বর কুমারের এক ওভারেই জীবন পান সিমন্স ও লুইস। সিমন্স তখন ছিলেন ৬ রানে, লুইস ১৬। দুজনই পরে ভুগিয়েছেন ভারতকে।

তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৩৫ বলে ৪০ করে থামেন লুইস। তাতে থামেনি ক্যারিবিয়ানদের তাণ্ডব। তিনে নেমে শিমরন হেটমায়ার তিন ছক্কায় করেন ২৩।

লং-অন সীমানায় অনেকটা দৌড়ে দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচে হেটমায়ারকে ফেরান কোহলি। ভারতের ভাগ্য ফেরেনি তাতেও। এক প্রান্তে সিমন্স খেলেছেন দারুণ। চারে নেমে তাণ্ডব চালান নিকোলাস পুরান। দুজনের ২৯ বলে ৬১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি শেষ করে দেয় ম্যাচ।

ওপেনিংয়ে নেমে চারটি করে চার ও ছক্কায় ৪৫ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন সিমন্স। বল টেম্পারিংয়ের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরে পুরান অপরাজিত থাকেন ১৮ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলে।

ম্যাচের শুরুটা ভারতের খারাপ ছিল না। রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল ৩ ওভারে তোলেন ২৪ রান। তবে ঝড়ো শুরুর সেই ইঙ্গিত পায়নি পূর্ণতা। রাহুল ফেরেন ১১ রানে।

ভারত চমকে দেয় এরপরই। তিন নম্বরে বিরাট কোহলি নন, ব্যাটিংয়ে নামেন তরুণ অলরাউন্ডার শিবম দুবে!

বাঁহাতি দুবে শুরুতে ধুঁকছিলেন টাইমিং পেতে। এক পর্যায়ে রান ছিল ১৪ বলে ১২। ডানা মেলতে পারেননি এ দিন রোহিতও। স্বভাববিরুদ্ধ স্কুপ শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি ১৮ বলে ১৫ করে।

শুরুর নড়বড়ে ভাব কাটিয়ে জেগে ওঠেন দুবে। খেলতে থাকেন দারুণ সব শট। উইকেটের আরেকপ্রান্তে কোহলি তখন স্রেফ দর্শক।

পুল শটে তিনটি ছক্কা মারেন দুবে, এক্সট্রা কাভার দিয়ে আরেকটি। ২৭ বলে স্পর্শ করেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি। অতি আগ্রাসনের খেসারত দিয়েই তার ইনিংস শেষ হয় ৫৪ রানে।

লেগ স্পিনার হেইডেন ওয়ালশ ও পেসার কেসরিক উইলিয়ামস এরপর আটকে রাখেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। কোহলি থামেন ১৭ বলে ১৯ করে। ঝড় তুলতে পারেননি শ্রেয়াস আইয়ার, রবীন্দ্র জাদেজা। শেষ দিকে দ্রুত রান করেন কেবল রিশাভ পান্ত (২২ বলে অপরাজিত ৩৩)। ভারত তাতে যেতে পারে ১৭০ পর্যন্ত।

ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং জ্বলে উঠলে, ওই লক্ষ্য তো আর এমন কিছু নয়!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ২০ ওভারে ১৭০/৭ (রোহিত ১৫, রাহুল ১১, দুবে ৫৪, কোহলি ১৯, পান্ত ৩৩*, শ্রেয়াস ১০, জাদেজা ৯, সুন্দর ০, চাহার ১*; কটরেল ৪-০-২৭-১, পিয়ের ২-০-১১-১, হোল্ডার ৪-০-৪২-১, উইলিয়ামস ৪-০-৩০-২, পোলার্ড ২-০-২৯-০, ওয়ালশ ৪-০-২৮-২)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৮.৩ ওভারে ১৭৩/২ (সিমন্স ৬৭*, লুইস ৪০, হেটমায়ার ২৩, পুরান ৩৮*; চাহার ৩.৩-০-৩৫-০, ভুবনেশ্বর ৪-০-৩৬-০, সুন্দর ৪-০-২৬-১, চেহেল ৩-০-৩৬-০, দুবে ২-০-১৮-০, জাদেজা ২-০-২২-১)।

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা

ম্যান অব দা ম্যাচ: লেন্ডল সিমন্স